লাইফস্টাইল ডেস্ক : অফিসে আপনার সহকর্মী যে সব সময় বন্ধুই থাকবে এমন নিশ্চয়তা নেই। বন্ধুত্বের আড়ালে ভালো ব্যবহারের মাধ্যমে আপনাকে কেউ যেন ক্ষতি করতে না পারে, সেদিকে খেয়াল রাখুন। যে সহকর্মীরা বন্ধু বেশে মিশে অন্যের ক্ষতি করে তাদের ধরা সহজ না। এরা একবার ধরা পড়লেও পরে আবার সাবধান হয়ে যায়। তাই অফিসে বন্ধুবেশী শত্রু শনাক্ত করুন। বুঝুন ওই সব সহকর্মী কোন ধরনের হতে পারে-
* পলিটিশিয়ান সহকর্মী: কিছু সহকর্মী থাকে, যারা নিজের সাফল্য বসের কাছে ঢাকঢোল পিটিয়ে জানায়। খেয়াল রাখবেন এরা যেন আপনার কোনো সাফল্য নিজের বলে চালিয়ে দিতে না পারে। মনে রাখতে হবে, এ ধরনের সহকর্মীরা আপনার কাছে এক কথা বলবে, আর বসের কাছে বলবে আরেক কথা। বসের অফিসে এরা প্রতিদিন বার বার গিয়ে নিজের অপিরহার্যতা প্রকাশ করার চেষ্টা চালায়।
কীভাবে রক্ষা পাবেন: আপনার বস ও অন্য সহকর্মীদের সাথে সব সময় ই-মেইলের মাধ্যমে কাজের বিষয়ে তথ্য আদান-প্রদান করুন। এতে আপনার কাজের কথা সবাই জানতে পারবেন এবং পলিটিশিয়ান সহকর্মী কাজের ক্রেডিট নেয়ার সুযোগ পাবে না।
* ধূর্ত সহকর্মী: এ ধরনের সহকর্মীরা আপনার কাজের প্রশংসা করতে পারে। তবে সাবধান, যাচাই করুন এটা তাদের মনের কথা কিনা। এরা হয়তো গোপনে আপনার কোনো ক্ষতি করবে না, তবে অফিসে আপনার অবস্থানে বা তার চেয়েও বড় পদে যাওয়ার পাঁয়তারা করবে।
কীভাবে রক্ষা পাবেন: এ ধরনের উচ্চাকাঙ্ক্ষী সহকর্মীদের কাছ থেকে নিজেকে রক্ষা করার সবচেয়ে ভালো পথ হলো তাদের আচরণ ও কথাবার্তা যাচাই করা। নিশ্চিত হোন, আপনার সামনে যে কথা বলছে ওই সহকর্মী, সেটা কি যুক্তিসঙ্গত? যখন আপনি থাকেন না, অন্যদের সাথেও কি সে এ কথা বলে?
* ভুল ধরার ওস্তাদ সহকর্মী: কিছু সহকর্মী থাকেন, যারা মূলত অন্য সহকর্মীর ভুল ধরেই মজা পান। এরা যেকোনো পরিস্থিতিকে নেতিবাচক ভঙ্গিতে দেখেন। আর তাই এ ধরনের সহকর্মীর আচরণ আপনার জন্য খুব ক্ষতির কারণ হতে পারে।
কীভাবে রক্ষা পাবেন: এক্ষেত্রে আপনাকে একটি কাজই করতে হবে, তা হলো ভুল না করা। পারতপক্ষে ভুলের মাত্রা কমিয়ে ফেলুন। কাজের ক্ষেত্রে নিজেকে এমনকি ভুল ধরা সহকর্মীকেও চ্যালেঞ্জ করুন। সমস্যাগুলোকে বড় করে না দেখে সমাধানের পথ বের করুন।
* আইডিয়া চুরি করা সহকর্মী: কাজের ফাঁকে হয়তো অফিস সংক্রান্ত কোনো দারুণ আইডিয়ার কথা আপনার সহকর্মীদের সাথে শেয়ার করলেন আপনি। এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে, কারণ এক শ্রেণীর সহকর্মী থাকে, যারা ভালো আইডিয়াগুলো চুরি করে নিজের বলে বসের কাছে চালিয়ে দেয়।
কীভাবে রক্ষা পাবেন: আপনি যদি দীর্ঘ সময়ের কোনো মিটিংয়ে আপনার দারুণ সেই আইডিয়াটির কথা ভুলে বলে ফেলেন, তাহলে আগে শনাক্ত করুন কোন সহকর্মীর সেই আইডিয়া চুরি করার মানসিকতা আছে। দীর্ঘক্ষণের মিটিং শেষে সাধারণত কারো মনে থাকে না, কে কি বললো। তাই অন্যদের সামনে সন্দেহভাজন সহকর্মীকে উদ্দেশ্য করে আপনার আইডিয়ার কথা ইঙ্গিত দিয়ে তা বসকে জানাবেন উল্লেখ করুন। এতে ওই আইডিয়া চোর আর দু’নম্বরী করার সাহস পাবে না।
* সময় নষ্ট করা সহকর্মী: অনেক সহকর্মী আছে, যারা অফিসে কাজের কথা খুব একটা বলে না। বরং সময় পেলেই হয়তো আপনার পাশে এসে বসে যাবতীয় অপ্রাসঙ্গিক কথা বলে। কাজের চাপ ভুলে যেতে বিনোদনমূলক এ ধরনের কথা শুনতে হয়তো আপনারও ভালো লাগে। তবে মনে রাখতে হবে, এতে কাজের ক্ষতি হচ্ছে। পিছিয়ে পড়ছেন আপনি।
কীভাবে রক্ষা পাবেন: প্রতিদিনের কাজের ফাঁকে ১৫/২০ মিনিটের আড্ডা গ্রহণযোগ্য। এতে মানসিকভাবে আপনিও ফ্রেশ হবেন। তবে এর বেশি সময় যদি আপনার সহকর্মী নষ্ট করে, তাহলে তাকে ভদ্র ভাবে বলুন- ‘আমাদের কাজ পড়ে আছে, চলুন কাজ শেষ করি আগে।’
* কাজ চাপিয়ে দেয়া সহকর্মী: অফিসে কিছু সহকর্মী থাকে, যারা নিজের কাজ অন্যদের ওপর চাপিয়ে দেয়। বিশেষ করে জুনিয়ররা তাদের কাজটিই আগে করবে, এটা ভেবে তারা নিশ্চিন্তে সময় পার করে দেয়। এটি মোটেও সব সময় গ্রহণযোগ্য নয়। অফিসের কাজে টিম ওয়ার্ক থাকতে হবে। এখানে কেউ কারো ব্যক্তিগত কাজ করতে দায়বদ্ধ না। সবাই যার যার দায়িত্ব পালন করবে, এটাই নিয়ম।
কীভাবে রক্ষা পাবেন: এ ধরনের সহকর্মীর খপ্পরে যদি আপনি পড়েন, তাহলে প্রথমে কাজটি আগে শেষ করুন। তারপর বসের কাছে গিয়ে বিষয়টি অফিস ও কাজের আঙ্গিকে ব্যাখ্যা করুন। ব্যক্তিগত দৃষ্টিকোণ থেকে দেখবেন না।
* মিটিংয়ে আধিপত্য বিস্তারকারী সহকর্মী: এক ধরনের সহকর্মী থাকে, যারা অফিসের বিভিন্ন মিটিংয়ে সব সময় আধিপত্য বিস্তার করতে চায়। এরা বক্তা, ভালো শ্রোতা না। এরকম সহকর্মীর কারণে হয়তো আপনার মতো আরো অনেকে মিটিংয়ে কথা বলার সুযোগ পান না।
কীভাবে রক্ষা পাবেন: এক্ষেত্রে আপনাকে সৃজনশীল হতে হবে। ওই সহকর্মীর কথাগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনুন। কথার রেশ ধরেই তার প্রস্তাবনার দুর্বল দিকগুলো সম্পর্কে তার কাছ থেকে জানার চেষ্টা করুন। এভাবে নিজের ফাঁদে পড়বে সে। এ সুযোগে আপনি ব্যতিক্রম ও বুদ্ধিদীপ্ত আইডিয়াগুলো মিটিংয়ে উপস্থাপন করুন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।