অফিস-আদালত ও দোকানপাট খোলার ব্যাপারে সুখবর দিলেন প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকার সাধারণ ছুটি ১৫ মে পর্যন্ত বৃদ্ধি করার পরিকল্পনা করছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  তিনি বলেন, করোনাভাইরাসে কারণে আমাদের দেশে ৫ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি চলছে। সেই ছুটি ১৫ মে পর্যন্ত বৃদ্ধি করতে চাচ্ছি।

আজ সোমবার করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে রংপুর বিভাগের আট জেলার কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে সূচনা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘যেহেতু রমজান মাস যাতে কেনাবেচা চলতে পারে তার জন্য দোকানপাট খোলা। রোজার সময় ইফতার কেনা বা সেহেরি খাওয়া বা রোজার মাসে বাজারঘাট করা সেগুলি যাতে চলতে পারে সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিয়ে সেগুলো খোলারও বা চালু রাখারও নির্দেশ দিয়ে দিয়েছি ‘

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিটি জেলায় যে সমস্ত ছোটখাটো ক্ষুদ্র শিল্প আছে সেগুলি যাতে চালাতে পারে সেভাবে আমরা নির্দেশনা দিয়েছি। আমাদের অর্থনীতির চাকাটা যাতে গতিশীল থাকে সেখানে মানুষকে সুরক্ষিত রেখে সেগুলি যেন পরিচালিত হতে পারে তার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া। এবং এ ব্যাপারে বেশকিছু নির্দেশনা আপনারা শিগগিরই পাবেন।… ঘোষণা দেওয়া হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা অফিস-আদালত সব সীমিত আকারে চালু করে দিচ্ছি যাতে মানুষের কষ্ট না হয়। সামনে ঈদ। ঈদের আগে কেনাকাটা বা যার যা দরকার সেগুলি যাতে মানুষ করতে পারে। কিন্তু এখানে একটা বিষয় খেয়াল রাখতে হবে খুব বেশি খোলামেলা বা একসাথে জড়ো হওয়া বা খুব বড় জনসমাগম করা যাবে না। কারণ সেখানে কিন্তু সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়ে গেছে।’

করোনা দুর্যোগের এই সময় ঝুঁকি নিয়ে কৃষকদের ধান কেটে দেওয়ার কাজে সম্পৃক্ত হওয়ার জন্য ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘ধান কাটা সমস্যা ছিল প্রতিটি জেলায়। আমাদের নেতাকর্মীরা বিশেষ করে ছাত্রলীগ অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছে। তাদেরকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। নিজের হাতে কাঁচি নিয়ে ধান কেটে তারা কৃষকদের সহযোগিতা করে যাচ্ছে।’

সোমবার সকাল ১১টায় সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে মতবিনিময় করছেন প্রধানমন্ত্রী।

রংপুর বিভাগের আট জেলার মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি এবং সংশ্লিষ্ট সকলে এতে যুক্ত আছেন। জেলাগুলো হচ্ছে-পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, রংপুর এবং গাইবান্ধা।

বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ বেসরকারি টিভি চ্যানেল এবং রেডিও স্টেশনগুলো এই ভিডিও কনফারেন্স সরাসরি সম্প্রচার করছে।

এর আগে, শেখ হাসিনা করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে ছয় দফা পৃথক ভিডিও কনফারেন্সে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, সিলেট, রাজশাহী, বরিশাল এবং ময়মনসিংহ বিভাগের ৫৬টি জেলার সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী জনগণকে স্বাস্থ্যবিধিসমূহ মেনে চলার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি সংকট উত্তরণের জন্য বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজেরও ঘোষণা দেন।

দেশে মার্চ মাসের ৮ তারিখ প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হবার পর থেকে এ পর্যন্ত এই ভাইরাস আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ১৭৭ জন এবং আক্রান্ত হয়েছে ৯ হাজার ৪৫৫ জন।

অন্যদিকে চীনের উহান প্রদেশে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হবার পর থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বের ২১২টি দেশে ২ লাখ ৪৪ হাজার জন মৃত্যুবরণ করেছে এবং প্রায় ৩৫ লাখ মানুষ সংক্রমিত হয়েছে।