জুমবাংলা ডেস্ক: নূরজাহান আক্তার। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীন ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর; কিন্তু বছর চারেকের মধ্যে তিনি যত সম্পদের মালিক হয়েছেন, এক কথায় তা গল্পকেও হার মানায়।
কল্যাণ বোর্ডে আসার আগে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) ইমিগ্রেশন শাখার ডাটা এন্ট্রি অপারেটর ছিলেন নূরজাহান। সরকারি দপ্তরের চাকরি ছিল তার মোক্ষম ‘সাইনবোর্ড’। এটিকে নানাভাবে ব্যবহার করেন তিনি। স্বামী আব্দুস সাত্তারের নামে বাগিয়ে নেন রিক্রুটিং এজেন্সির লাইসেন্স। এজেন্সির আড়ালে গড়ে তোলেন মানব পাচার চক্র। এরপর চক্রের মূল হোতা নূরজাহানকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি।
জনপ্রিয় জাতীয় দৈনিক সমকালের আজকের সংখ্যায় প্রকাশিত সাংবাদিক বকুল আহমেদের করা একটি বিশেষ প্রতিবেদনে মানব পাচার চক্রের মূল হোতা নূরজাহানের অঢেল সম্পদের মালিক হওয়ার পেছনের গল্প উঠে এসেছে।
দৈনিকটির অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঢাকার মিরপুর ও আশুলিয়ায় তিনটি বাড়ি, বেইলি রোড, চামেলীবাগ, মীরবাগ ও কাকরাইলে চারটি আলিশান ফ্ল্যাট, আফতাবনগরে দুটি প্লট, আশুলিয়া ও কুমিল্লার বাঙ্গরা বাজারে কোটি কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে নূরজাহান-সাত্তার দম্পতির। এক কোটি ২৫ লাখ টাকার প্রাডো এবং ২৬ লাখ টাকার এলিয়ন গাড়িতে চলাফেরা করেন এই পরিবারের সদস্যরা। অথচ ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডে অস্থায়ী কর্মচারী হিসেবে নূরজাহানের সর্বসাকল্যে বেতন ২৮ হাজার টাকা।
দীর্ঘদিন ধরে মানব পাচার করলেও ধরাছোঁয়ার বাইরেই ছিলেন নূরজাহান; কিন্তু গত ২৮ মে লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশি হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর সব ফাঁস হয়ে গেছে- লিবিয়ায় মানব পাচারের ঘটনায় পল্টন থানায় করা মামলায় সম্প্রতি গ্রেপ্তার হয়েছেন নূরজাহান-সাত্তার দম্পতি। গ্রেপ্তারের পর চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে নূরজাহানকে। এই দম্পতির গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার বাঙ্গরা বাজার থানার খামারগ্রামে। রাজধানীর বেইলি রোডের ১৮শ’ বর্গফুটের নিজেদের ফ্ল্যাটে একমাত্র সন্তান নিয়ে বসবাস তাদের।
নূরজাহান চাকরি করলেও অফিসে সময় দিতেন না। ব্যস্ত থাকতেন বিএমইটির ইমিগ্রেশন শাখায় সারাক্ষণ রিক্রুটিং এজেন্সির ব্যবসা ও মানব পাচার নিয়ে। বিএমইটির কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে সখ্য রয়েছে তার। স্বামী সাত্তারের নামে তিনি যখন ‘এসএএম ইন্টারন্যাশনাল’ নামের রিক্রুটিং এজেন্সির লাইসেন্স নেন, সাত্তার তখন শান্তিনগরের চামেলীবাগের ২৬ নম্বর ভবনের পঞ্চম তলায় রিয়েল এস্টেট কোম্পানি এ লতিফ অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেডের অ্যাকাউন্টস শাখায় চাকরি করতেন।
একই ভবনের ষষ্ঠ তলাতেই নূরজাহান-সাত্তার দম্পতি গড়ে তোলেন রিক্রুটিং এজেন্সির অফিস। নূরজাহানের ভাই আব্দুর রহমান এবং বিএমইটির প্রিন্টিং শাখার অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর মামুনকে রিক্রুটিং এজেন্সি ব্যবসার পার্টনার হিসেবে নেন। মামুন সরকারি দপ্তরের কর্মচারী হওয়ায় কাগজে-কলমে ব্যবসায়িক পার্টনার বানিয়ে রাখেন স্ত্রী শারমিনকে। কিন্তু পার্টনার হিসেবে কাজকর্ম মামুনই করেন। তবে এজেন্সি পরিচালনার প্রধান দায়িত্বে নূরজাহানই ছিলেন। স্বামী সাত্তারও চাকরির পরে অবসর সময়ে এজেন্সির ব্যবসা দেখতেন। একই ফ্লোরে রয়েছে ‘জাহান ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস’- নূরটুকু বাদ রেখে ‘জাহান’ নামে গড়া এই প্রতিষ্ঠানও নূরজাহানের। রিক্রুটিং এজেন্সির কর্মচারী হাসানও নূরজাহানের অন্যতম সহযোগী। বিএমইটিতে ‘এসএএম ইন্টারন্যাশনাল’ রিক্রুটিং এজেন্সির প্রতিনিধি হিসেবে হাসান যাবতীয় কাজ করেন নূরজাহানের নির্দেশে। এভাবে হাসানও টাকা-পয়সার মালিক হয়েছেন। হাসান আবার সাত্তারের ভাই আব্দুর রহিমের শ্যালক। নূরজাহানের ভাই আব্দুর রহমান সম্প্রতি কাকরাইলের নাসির উদ্দিন টাওয়ারের ১৪ তলায় দুই হাজার ছয়শ’ বর্গফুটের অফিসস্পেস কিনে নিজেই আলাদা ব্যবসা করছেন। এই অফিসস্পেসের মূল্য কমপক্ষে দুই কোটি টাকা।
তিন বছর আগে চাকরি ছেড়েছেন সাত্তার : গত ৮ জুলাই সরেজমিনে চামেলীবাগে এ লতিফ অ্যান্ড কোম্পানির অফিসে গিয়ে কথা হয় কয়েকজনের সঙ্গে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে দু’জন বলেন, সাত্তার প্রায় তিন বছর আগে চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন। কত বছর এ প্রতিষ্ঠানে সাত্তার চাকরি করেছেন, সে ব্যাপারে একজন বলেছেন, প্রায় ৩০ বছর। আরেকজন জানিয়েছেন, ২০ বছরের বেশি সময় চাকরি করেছেন সাত্তার। বেতন খুব আহামরি কিছু নয়।
একই দিন ওই ভবনের ষষ্ঠ তলায় নূরজাহান-সাত্তারের রিক্রুটিং এজেন্সির অফিসে গিয়ে দেখা যায়, বাইরে থেকে তালা ঝুলছে একটি দরজায়। পাশের দরজায় নক করতেই এক যুবক দরজা খোলেন। তিনি জানান, ওই ফ্লোরের তিনটি ইউনিট মিলিয়ে নূরজাহানের অফিস। বাইরের দরজা তিনটি হলেও ভেতরে একটি থেকে আরেকটি ফ্ল্যাটে যাওয়ার ব্যবস্থা আছে।
নূরজাহান দম্পতির যত সম্পদ : অনুসন্ধানে দেখা গেছে, রাজধানীর বেইলি রোডের ১ নম্বর হোল্ডিংয়ের ‘বেইলি রিজ’ আলিশান অ্যাপার্টমেন্টে একসময় ভাড়া থাকতেন এ দম্পতি। দেড় বছর আগে ওই ভবনে ১৮শ’ বর্গফুটের ফ্ল্যাট কেনেন তারা, যার মূল্য প্রায় দেড় কোটি টাকা। চামেলীবাগের যে ভবনে তাদের রিক্রুটিং এজেন্সির অফিস, সেটির পঞ্চম তলায়ও এক হাজার বর্গফুটের ফ্ল্যাট আছে তাদের। এটি নূরজাহান ও তার ভাই আব্দুর রহমানের স্ত্রীর নামে কেনা। রিক্রুটিং এজেন্সি আল-তৈয়ব ইন্টারন্যাশাল লিমিটেডের কাছে এটি অফিস হিসেবে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক তৈয়ব খান জানান, সাত্তারের কাছ থেকে তিনি এই ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছেন।
হাতিরঝিল থানার মীরবাগের ১৪/ই হোল্ডিংয়ের আলিশান অ্যাপার্টমেন্টেও এক হাজার ৪৫০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাটের মালিক নূরজাহান। ভবনের নাম কসমোপলিটন হালিম নিবাস। গত ১২ জুলাই দুপুরে ওই ভবনে সরেজমিনে গিয়ে কথা হয় নিরাপত্তাকর্মী নাজমুলের সঙ্গে। তিনি বলেন, এক বছর ধরে এই ভবনের নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কাজ করছেন তিনি। এক বছরে ২-৩ বার নূরজাহানকে ফ্ল্যাটে আসতে দেখেছেন। ফ্ল্যাটটি ভাড়া দেওয়া আছে।
কাকরাইলে এইচআর ভবনের উত্তর পাশে একটি বিশাল ভবন নির্মাণ হচ্ছে। সেখানে দেড় হাজারের বেশি বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট (অফিসস্পেস) কিনেছেন নূরজাহানরা। সেখানে রিক্রুটিং এজেন্সির অফিস বড় পরিসরে করার কথা। ভবনটির নির্মাণ কাজ এখনও শেষ হয়নি। মিরপুর মণিপুরেও নূরজাহানের একটি ভবনের সন্ধান মিলেছে। এই ভবনের চারতলা পর্যন্ত নির্মাণকাজ হয়েছে। অবশ্য বাড়িটিতে মানুষ বসবাস করছে। এক আত্মীয়ের সঙ্গে যৌথভাবে বাড়িটি নির্মাণ করছেন এ দম্পতি। আফতাবনগরেও তাদের রয়েছে দুটি প্লট।
অনুসন্ধানকালে আশুলিয়ার পলাশবাড়িতেও একাধিক বাড়ি-প্লটের তথ্য উঠে এসেছে। এসব বাড়ি দেখভাল করেন সাত্তারের ছোট ভাই আব্দুর রহিম। আশুলিয়ার পলাশবাড়ির বাসস্ট্যান্ডের অদূরে একটি পাঁচতলা বাড়ি আছে, সেটি ভাড়া দেওয়া আছে। বাড়িসহ এই জমি কেনা। এর অদূরেই কুমিল্লা সমিতির জমির পেছনে আড়াই কাঠার একটি প্লট রয়েছে নূরজাহানদের। পলাশবাড়ি বাজার সংলগ্ন ৮ শতাংশ জমির ওপর আধাপাকা বাড়ি করে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। পলাশবাড়ির কায়ছাবাড়িতে ছয় কাঠা জমিতে রয়েছে তাদের ফলদ বাগান। বাগানের এককোণে একটি ঘর তোলা হয়েছে। গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার বাঙ্গরা বাজারের ডাকবাংলোর পাশেও সম্প্রতি নূরজাহান এক কোটি ১০ লাখ টাকা দিয়ে জমি কিনেছেন। এ ছাড়াও এই দম্পতির নামে-বেনামে বিভিন্ন ব্যাংকে মোটা অঙ্কের টাকা রয়েছে।
বিএমইটির কর্মকর্তার সঙ্গে যৌথ ব্যবসা : অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, বিএমইটির ময়মনসিংহ শাখার সহকারী পরিচালক (এডি) এনামুল হক ও অফিস সহকারী নূরজাহানের যৌথ ফার্নিচার ব্যবসা রয়েছে মিরপুরের তালতলায়। এনামুল হক ২০১৫ সাল থেকেই মিরপুরের কাজীপাড়ায় মডার্ন গ্যালারি ফার্নিচার নামে শোরুম করে ব্যবসা করতেন শাহজাহান কবিরের সঙ্গে। পরে ২০১৮ সালের জুনে তাদের দু’জনের সঙ্গে নূরজাহানও যুক্ত হন। তারা তালতলা বাসস্ট্যান্ডের অদূরে বেগম রোকেয়া সরণিতে মডার্ন গ্যালারি ফার্নিচার-২ নামে আরেকটি শোরুম দেন। তবে পরে তাদের বনিবনা না হওয়ায় ২০১৯ সালের জুন মাসে ব্যবসা পৃথক করে ফেলেন এনামুল-নূরজাহান। কাজীপাড়ার ফার্নিচারের ব্যবসা শাহজাহানকে এককভাবে দিয়ে দেওয়া হয়। তালতলা বাসস্ট্যান্ডের অদূরের প্রতিষ্ঠানটি এনামুল ও নূরজাহান নেন। সেপ্টেম্বরে মডার্ন গ্যালারি ফার্নিচার-২-এর নাম পাল্টিয়ে ‘জাহান ফার্নিচার’ রাখেন তারা।
১৪ জুলাই দুপুরে প্রায় চার হাজার বর্গফুটের জাহান ফার্নিচার শোরুমে সরেজমিনে গিয়ে কথা হয় ম্যানেজার সাইদুল ইসলাম রেজার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক এনামুল হক ও নূরজাহান।’ এ সময় এক ব্যক্তি ছুটে এসে নিজেকে প্রতিষ্ঠানটির মালিক দাবি করে প্রশ্ন করেন, মালিক কে তা জেনে লাভ কী?
১৫ জুলাই মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হয় এনামুল হকের সঙ্গে। ব্যবসায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘ওটা নূরজাহানের ব্যবসা। আমি যতটুকু জানি, শাহজাহান কবিরের সঙ্গে ঝামেলা হওয়ায় ব্যবসা থেকে নূরজাহান সরে এসেছে।’ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত না থাকলে এত কিছু জানলেন কীভাবে?- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নূরজাহান আমার জুনিয়র কলিগ। শাহজাহান আমার পরিচিতি।’
এনামুল হক অস্বীকার করলেও অনুসন্ধানে তার ফার্নিচারের ব্যবসা সম্পর্কে অকাট্য তথ্যপ্রমাণ উঠে এসেছে। তালতলার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে জোর করে বাদ দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে ২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর নূরজাহান ও এনামুল হকের বিরুদ্ধে শেরেবাংলা নগর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন শাহজাহান কবির। জিডি নম্বর ১১৩৬। এনামুল হক ও নূরজাহানের নির্দেশে প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার জসিম উদ্দিন ব্যবসায়ী শাহজাহানকে লাঞ্ছিত করেন বলেও উল্লেখ করা হয় জিডিতে।
ছেলেকে উপহার দিলেন প্রাডো : নূরজাহান-সাত্তার দম্পতির একমাত্র সন্তান নাহিন আহম্মেদ আলিফ ২০১৭ সালে এসএসসি পাস করেন। এসএসসি পাসের পর মা-বাবার কাছে প্রথমে একটি আরওয়ান ফাইভ ভার্সন থ্রি মডেলের মোটরসাইকেল দাবি করে আলিফ। প্রায় সাড়ে চার লাখ টাকা দামে বাইকটি কিনে দেওয়া হয় তাকে। এরপর ছেলে আবদার করে প্রাডো গাড়ির। এক কোটি ২৫ লাখ টাকা দিয়ে ছেলেকে সেই গাড়িও কিনে দেন এ দম্পতি।
অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, ২০১৯ সালের ২৭ মে গাড়িটি বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) থেকে রেজিস্ট্রশন (নম্বর-ঢাকা মেট্রো ঘ ১৮-৩১৭৯) করা হয়েছে। নূরজাহান-সাত্তার গ্রেপ্তার হওয়ার পরপরই বেইলি রোডের বাসার গ্যারেজ থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে সেটি। অবশ্য এলিয়ন প্রাইভেটকারটি (নম্বর ঢাকা মেট্রো-গ ১৬-০৪৮৭) গত ৭ জুলাইয়েও ওই ভবনের বেজমেন্টের গ্যারেজে দেখা গেছে। প্রাইভেটকারটি সাত্তারের নামে রেজিস্ট্রশন করা। রেজিস্ট্রেশনের সময় ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে শান্তিনগরের ২৬ চামেলীবাগ, ৫ম তলা। এই গাড়িতে নূরজাহান অফিসে যাতায়াত করতেন। ভবনটির নিরাপত্তা কর্মীদের দু’জন (নাম প্রকাশ করা হলো না) জানান, প্রাডো গাড়িটি এতদিন ভবনের বেজমেন্টেই ছিল। নূরহজাহান-সাত্তার গ্রেপ্তার হওয়ার তিন-চার দিন পর থেকে গাড়িটি এখানে রাখা হয় না।
নূরজাহান ও সাত্তার কারাগারে থাকায় তাদের মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। অনুসন্ধান চালাতে গিয়ে নূরজাহানের দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত যাদের নাম বেরিয়ে এসেছে তাদের মন্তব্য নেওয়ারও চেষ্টা করে সমকাল। নূরজাহানের ব্যবসায়িক পার্টনার শারমিনের স্বামী বিএমইটির কর্মচারী মামুনের নম্বরে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ধরেননি। নূরজাহানের অন্যতম সহযোগী হাসানের ফোন নম্বরও বন্ধ। চামেলীবাগের অফিসেও পাওয়া যায়নি তাকে। তাই তার বক্তব্যও জানা যায়নি।
তবে নূরজাহানের ভাই আব্দুর রহমানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হয়েছে। তিনি বলেন, কাগজে-কলমে পার্টনার ছিলেন রিক্রুটিং এজেন্সির ব্যবসায়। সবকিছুই পরিচালনা করতেন বোন নূরজাহান। বনিবনা না হওয়ায় নাসির উদ্দিন টাওয়ারে নিজের কেনা ফ্লোরে গত অক্টোবর থেকে তিনি আলাদা ব্যবসা করছেন।
নূরজাহান-সাত্তারসহ মানব পাচারকারীদের বিরুদ্ধে মামলা তদন্ত করছে সিআইডি। সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার সৈয়দা জান্নাত আরা সমকালকে বলেন, সরকারি দপ্তরের কর্মচারী হয়েও রিক্রুটিং এজেন্সি খুলেছেন নূরজাহান। লাইসেন্স নিয়েছেন স্বামী আব্দুস সাত্তারের নামে। লিবিয়ায় মানব পাচারের ঘটনায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কারাগারে রয়েছে তারা। তাদের সঙ্গে আরও কারা জড়িত সেসব বিষয়ে তদন্ত চলছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।