জুমবাংলা ডেস্ক : পাবনার ভাঙ্গুড়ায় স্বামীর বাড়িতে অনশনের দ্বিতীয় দিনে স্ত্রীর স্বীকৃতি পেল কলেজছাত্রী মেহেরিন সুলতানা। বুধবার রাতে ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশের মধ্যস্থতায় মেহরিনকে পুত্রবধূ হিসেবে মেনে নেয় স্বামী খাইরুল ইসলাম ও শ্বশুর আকবর আলীসহ পরিবারের লোকজন। এর আগে বিকেলে মেহেরিন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে তার স্বামী খায়রুল ইসলাম ও শ্বশুরের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
জানা যায়, ভাঙ্গুড়া হাজী জামাল উদ্দিন ডিগ্রী কলেজে এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যায়নের সময় গত বছরের নভেম্বর মাসে উপজেলার মন্ডতোষ ইউনিয়নের দিয়ারপাড়া গ্রামের আকবর আলীর ছেলে খায়রুল ইসলামের সঙ্গে উপজেলার সদর ইউনিয়নের নৌবাড়ীয়া গ্রামের রবিউল ইসলামের মেয়ে সহপাঠী মেহরিন সুলতানার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনে এ বছরের মার্চ মাসে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন মেহরিন। কিন্তু বিষয়টি ধামাচাপা দিতে খাইরুল ইসলামের বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে মেহরিন গর্ভের সন্তান নষ্ট করে ফেলেন। পরে দুজনে এপ্রিল মাসের ৫ তারিখে পাবনার আদালতে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে এবং একই দিনে ৭ লাখ টাকা দেনমোহরে কাজী অফিসের মাধ্যমে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। কিন্তু বিষয়টি তারা দুজনেই পরিবারের কাছে গোপন রাখেন।
বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই মেহরিন শ্বশুর বাড়ি যেতে খায়রুলকে চাপ দিতে থাকেন। এ অবস্থায় গত দেড় মাস ধরে খাইরুল কৌশলে মেহরিনকে এড়িয়ে চলতে থাকে। নিরুপায় হয়ে মেহরিন মঙ্গলবার দুপুরে খাইরুলের বাড়ি গিয়ে স্ত্রীর দাবি করেন। এ সময় খাইরুল বাড়ি থেকে পালিয়ে যান এবং পরিবারের অন্য সদস্যরা মেহরিনকে মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে মেহরিন নির্যাতন সহ্য করে স্বামীর বাড়িতেই অবস্থান করে অনশন শুরু করেন।
এদিকে মেহরিনের অনশনের পর থেকেই ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশ, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা হাসনাত জাহান শিখা ও উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আজিদা পারভীন পাখি সামাজিকভাবে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। পরে মেহরিন ভাঙ্গুড়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে অভিযোগ দায়ের করেন। এতে পুলিশ সন্ধ্যায় মেহরিনের স্বামী খাইরুল ইসলাম ও শ্বশুর আকবর আলীকে থানায় নিয়ে আসে। পরে সেখানে থানা প্রশাসনের মধ্যস্থতায় এক সালিস বৈঠক শেষে মেহরিনকে তারা স্বীকৃতি দিয়ে সসম্মানে বাড়িতে নিয়ে যায়।
নববধূ মেহরিন জানান, স্ত্রীর অধিকার পেয়ে আমি গর্বিত। এখন আমি স্বামী ও পরিবার-পরিজন নিয়ে সুখে শান্তিতে দিন কাটাতে চাই।
ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশের এসআই মোদাচ্ছের হোসেন বলেন, প্রথমে বিষয়টি সামাজিকভাবে মিমাংসার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ব্যর্থ হওয়ায় ওই গৃহবধূ ভাঙ্গুড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এতে উভয় পরিবারের লোকজনকে নিয়ে সালিস বৈঠক করে বিষয়টি সমাধান করা হয়। এখন উভয় পরিবারের সদস্যরাই সালিস বৈঠকের সিদ্ধান্তে খুশি বলে জানিয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।