আন্তর্জাতিক ডেস্ক : অর্থনীতিতে এ বছর আরও দুজনের সঙ্গে যৌথভাবে নোবেল পাচ্ছেন ভারতের বাঙালি বংশোদ্ভূত অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাকে নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেন একই দেশের আরেক নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেন।
ভারতীয় পত্রিকাকে তিনি জানান, অভিজিৎকে শৈশব থেকে জানেন। তার চিন্তাশক্তিতে বরাবরই মুগ্ধ ছিলেন।
১৯৯৮ সালের নোবেলজয়ী বলেন, ‘‘আমি অত্যন্ত আনন্দিত। দারিদ্র্য বিষয়ে নতুন ধরনের মূল্যবান কাজ তারা করেছেন এবং সেই কাজের ফল নানা দিক দিয়েই দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধে আমাদের সাহায্য করবে।”
পারিবারিক বন্ধুত্বের বিষয়টি উল্লেখ করেন, “আমি নিজে একাধিক কারণেই ভীষণ খুশি। একটা কারণ এই যে, অভিজিৎকে আমি তার শৈশব থেকে ভালো রকম জানি এবং তার চিন্তাশক্তিকে আমি বরাবর বাহবা দিয়ে এসেছি। আমার একমাত্র দুঃখ এই যে, তার বাবা আমার বন্ধু দীপক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে এটা দেখে যেতে পারলেন না। তবে অভিজিতের মা নির্মলা এই উৎসবে যোগ দেবেন, সেটা ভেবেও আনন্দিত বোধ করছি।’’
বর্তমানে আমেরিকার ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির ফোর্ড ফাউন্ডেশন অধ্যাপক অভিজিৎ। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অর্মত্য সেন, ১৯৮৮ সালে সেখান থেকেই পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন তিনি। দুজনেই প্রেসিডেন্সি কলেজের ছাত্র ছিলেন, পরে অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি পায় প্রেসিডেন্সি।
বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য বিমোচনে পরীক্ষামূলক পদ্ধতির জন্য ২০১৯ সালের অর্থনীতিতে এই পুরস্কারে অভিজিতের সঙ্গে আছেন তার স্ত্রী এসথের ডুফলো এবং মাইকেল ক্রেমার।
সোমবার দুপুর সাড়ে তিনটার পর এই তিন গবেষকের নাম ঘোষণা করে নোবেল কমিটি।
অর্থনীতিতে নোবেল প্রদানের ৫০ বছরের ইতিহাসে দ্বিতীয় নারী এসথের ডুফলো। ৪৬ বছর বয়সী এই নারী অর্থনীতি সবচেয়ে কমবয়সী নোবেল বিজয়ীও। আর বাঙালি হিসেবে অর্থনীতিতে দ্বিতীয় নোবেল জয়ী অভিজিৎ। দম্পতি হিসেবেও দ্বিতীয়। ১৯০৩ সালে পদার্থবিদ্যায় তেজস্ক্রিয়তার ওপর গবেষণায় স্বামী পিয়ের কুরির সঙ্গে নোবেল পেয়েছিলেন তার স্ত্রী মেরি কুরি।
এসথের ও ৫৮ বছর বয়সী অভিজিৎ দুজনেই যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) গবেষক। ৫৪ বছর বয়সী ক্রেমার হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির গবেষক।
নোবেল কমিটির ঘোষণার পরে এসথের ও অভিজিৎ বলেন, “বিশ্বে ৭০ কোটি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করছেন। পাঁচ বছর বয়সের গণ্ডি পার হওয়ার আগেই ফি বছর মৃত্যু হয় ৫০ লাখ শিশুর। যার অন্যতম কারণ অপুষ্টি, স্বাস্থ্যহানি, এমন রোগ যা চিকিৎসার মাধ্যমে সারানো সম্ভব অথচ অর্থ এবং সচেতনতার অভাবে সেটা সম্ভব হয় না।”
যে সব বিষয়ে নোবেল পুরস্কার দেওয়া চালু হয় সেখানে অর্থনীতি ছিল না। পরবর্তীতে ১৯৬৮ সালে অর্থনীতিকেও সেই তালিকায় ঢোকানো হয়।
সুইডেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক আলফ্রেড নোবেলের স্মরণে এই পুরস্কার প্রবর্তনের সিদ্ধান্ত নেয়। পরের বছরেই প্রথমবারের মতো অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার প্রদান করা হয়। তবে পুরস্কারের বিষয়টি পরিচালনা করে রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্স।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।