বিনোদন ডেস্ক: মডেল ও অভিনেত্রী রোমানা ইসলাম স্বর্ণা ছাড়াও স্বর্ণার মা, ভাই, ভাইয়ের বউ এবং তার ছেলে প্রত্যেকেই প্রতারণার সাথে জড়িত বলে জানিয়েছেন ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) হারুন-অর রশিদ।
পুলিশ বলছে, স্বর্ণার পরিবারের প্রত্যেকটি সদস্যই প্রেম ও বিয়ের সম্পর্কের অভিনয় করে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে।
বিয়ের ফাঁদে ফেলে কামরুল ইসলাম জুয়েল নামে এক প্রবাসীর কাছ থেকে প্রায় দুই কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে গতকাল স্বর্ণা, তার মা শেইলি (৬০) ও ছেলে আন্নাফিসহ (২০) পরিবারের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ।
কামরুল ইসলাম জুয়েল গণমাধ্যমকে বলেন, আমার খালাতো ভাইয়ের মাধ্যমে তার সঙ্গে পরিচয় হয়। এরপর ফেসবুকে সম্পর্ক। এরপর সে অসহায়ত্ববোধ করে। আমার ছেলেকে লেখাপড়া করাতে পারি না। মিডিয়াতে কাজ কর্ম হয় না। সে আমাকে বলে আমাকে একটা উবার কিনে দাও আমি আস্তে আস্তে টাকা পরিশোধ করে দেব। ১৮ লাখ টাকা দিয়ে উবার কিনে দেই।
তিনি বলেন, এরপর সে আমাকে বলে আমার ছেলে পড়ালেখা করে তার যাতায়াতের জন্য একটা মোটরসাইকেল দরকার। সে টাকাটাও দেই এবং বলে আমাকে আস্তে আস্তে দেবে। এরপর আমাকে দুএকবার ২০-৩০ হাজার টাকা রিটার্ন করে আমার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক স্থাপন করে।
কামরুল বলেন, স্বর্ণা বলে লালমাটিয়ায় আমার এক আত্মীয়ের একটা ফ্ল্যাট আছে, সে ছেড়ে দেবে, এক কোটি ৯০ লাখ টাকা হলে নেয়া যাবে। এখান থেকে কিছু লাভ হবে, বাকিটা এসে তুমি নিয়ে যাবা। সে অনুযায়ী আমি তাকে টাকাটা দেই।
তিনি বলেন, সৌদি আরব থেকে আমি এক সময় দেশে আসি, সে আমাকে বাসায় যেতে বলে আমি যায়, একপর্যায়ে সে আমাকে আটকে রাখে। খাবারের মাধ্যমে চেতনাশক ওষুধ খাইয়ে অজ্ঞান করে ফেলে। এরপর আমি সেন্সলেস হয়ে যায়। পরে আমাকে নগ্ন করে আমার খারাপ খারাপ ছবি তোলে এবং আমার স্ট্যাম্প নেয়। এরপর সে আমাকে বিয়ে করতে বাধ্য করে। বিয়ে না করলে এসব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। সম্মানহানির ভয়ে স্বর্ণাকে আমি বিয়ে করতে বাধ্য হই।
মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ বলেন, সৌদি প্রবাসী সাবেক স্বামীর মামলায় রোমানা ইসলাম স্বর্ণাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার তাকে আদালতে পাঠানো হবে।
পুলিশ জানিয়েছে, ২০১৮ সালে সৌদি প্রবাসী কামরুল হাসানের সঙ্গে স্বর্ণার পরিচয় হয়। পরে ফেসবুকে কথোপকথন। ২০১৯ সালের মার্চে বিয়ে করেন তারা। বিয়ের পর কামরুল সৌদি আরবে চলে যান। গাড়ি, ব্যবসা, ফ্ল্যাট কেনাসহ নানা অজুহাতে তার কাছ থেকে এক কোটি ৪৮ লাখ ৬০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন স্বর্ণা। সম্প্রতি ওই ব্যক্তি দেশে আসেন এবং স্বর্ণার বাসায় যান। এ সময় স্বর্ণা জানিয়ে দেন, তাকে অনেক আগেই তিনি তালাক দিয়েছেন। এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে হত্যার হুমকি দেওয়া হয় কামরুলকে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার স্বর্ণার বিরুদ্ধে কামরুল মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন। সন্ধ্যায় লালমাটিয়ার একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
২০১৫ সালে স্বর্ণা অভিনিত একটি সিনেমা মুক্তি পায়। এ ছাড়া তিনি নাটক করেন এবং একাধিক বিজ্ঞাপনে মডেল হয়েছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।