জুমবাংলা ডেস্ক: এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে মালিক হামজালাল শেখকে ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ সোমবার সকালে তার এক আত্মীয়ের বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। র্যাব সদর দপ্তরের মিডিয়া উইং ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছে।
এর আগে গতকাল রবিবার হামজালাল শেখকে প্রধান আসামি করে বরগুনার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন উপজেলার এম বালিয়াতলী ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান আইনজীবী নাজমুল ইসলাম নাসির। বিচারক মুহাম্মদ মাহবুব আলম আবেদন গ্রহণ করে বেলা ১১টার দিকে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের আদেশ দেন।
মামলায় বলা হয়েছে, লঞ্চটিতে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র, বয়া ও বালুর বাক্স ছিল না। এ ছাড়া ইঞ্জিনকক্ষের বাইরে অননুমোদিতভাবে ডিজেলবোঝাই বেশ কয়েকটি ড্রাম রাখা ছিল। ইঞ্জিনকক্ষের পাশে রান্নার জন্য গ্যাসের সিলিন্ডার (বিপজ্জনক দাহ্য পদার্থ) রাখা হয়েছিল। একই সঙ্গে লঞ্চটি অননুমোদিত লোকবল দিয়ে পরিচালনা করা হচ্ছিল বলেও মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলা করার পরই লঞ্চটির চার মালিকসহ আটজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন নৌ আদালত। যেসব অভিযোগে নৌ আদালতে মামলা হয়েছে, তাতে অপরাধ প্রমাণিত হলে আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি পাঁচ বছরের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় ধরনের দণ্ড।
মামলার আসামিরা হলেন- লঞ্চটির স্বত্বাধিকারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স আল আরাফ অ্যান্ড কোম্পানির চার মালিক হামজালাল শেখ, শামিম আহম্মেদ, রাসেল আাহাম্মেদ ও ফেরদৌস হাসান রাব্বি, লঞ্চের ইনচার্জ মাস্টার রিয়াজ সিকদার, ইনচার্জ চালক মো. মাসুম বিল্লাহ, দ্বিতীয় মাস্টার খলিলুর রহমান ও দ্বিতীয় চালক আবুল কালাম। মামলায় আরো ২৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করেছেন বাদী।
এই মামলাতেই হামজালাল শেখকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে বলে জানিয়েছেন র্যাবের মুখপাত্র খন্দকার আল মঈন।
গতকাল মামলার আইনজীবী সাইফুর রহমান সোহাগ বলেন, ‘লঞ্চে আগুনের ঘটনায় মালিকসহ স্টাফদের গাফিলতি সুস্পষ্ট। আলোচিত এ ঘটনায় বাদী সংক্ষুব্ধ হয়ে মামলার আবেদন করেছিলেন। আদালত আবেদন গ্রহণ করে মামলাটি এজাহার হিসেবে নেওয়ার জন্য থানাকে আদেশ দিয়েছেন।’
মামলার বাদী নাজমুল ইসলাম নাসির বলেন, ‘বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের তথ্যে আমি নিশ্চিত হয়েছি, আসামিদের গাফিলতির কারণে আগুন, মৃত্যু, আহত ও ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় মালিকসহ সংশ্লিষ্টদের বিচার হওয়া উচিত বলে মনে করেছি। ন্যায়বিচারের স্বার্থে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলাটি করেছি। আমি এ মামলার আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।’
সদরঘাট থেকে বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় বরগুনার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে অভিযান-১০ লঞ্চ। ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে লঞ্চটিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে এখন পর্যন্ত ৪৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। দগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন কয়েকজন এখনও আশঙ্কাজনক।
লঞ্চে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে জীবন বাঁচাতে স্ত্রীকে নিয়ে তিনতলা থেকে লাফ দেন ইউএনও
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।