জুমবাংলা ডেস্ক: সমুদ্রে ভাসমান প্রমোদতরী। চারপাশে নীল জলরাশি, বড় বড় ঢেউ। অথচ অজানা ছোঁয়াচে রোগে আক্রান্ত হয়েছেন আমেরিকার এক প্রমোদতরী ‘রুবি প্রিন্সেস’-এর যাত্রী ও কর্মীরা। তিনশো এর বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। মার্কিন সেন্টার ফর ডিজ়িজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) জানিয়েছে, জাহাজে কর্মী এবং যাত্রী মিলিয়ে তিনশোরও বেশি আক্রান্ত এই অজানা রোগে।
প্রমোদতরী ‘রুবি প্রিন্সেস’ টেক্সাস থেকে মেক্সিকো যাচ্ছিল। মাঝপথে ঐ ক্রুজের যাত্রীরা আচমকা অসুস্থ হতে শুরু করেন। জ্বর, বমি, ডায়ারিয়ার উপসর্গ দেখা দেয় সকলের। প্রথমে মনে করা হয়েছিল খাবার থেকে ফুড পয়জনিং-এর কারণে হচ্ছে। কিন্তু পরে দেখা যায় একের পর এক যাত্রী অসুস্থ হতে শুরু করেছেন।
প্রমোদতরীতে মোট ২ হাজার ৮৮১ জন যাত্রী ছিলেন। তাদের মধ্যে ২৮৪ জন অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। ১ হাজার ১৫৯ জন ক্রু সদস্য ছিলেন। তাদের মধ্যে প্রথমে ৩৪ জন অসুস্থ হয়ে পড়েন। সবমিলিয়ে, আক্রান্তের সংখ্যা ৩০০ ছাড়িয়ে গেছে।
গত মাসের শেষ থেকে ডায়ারিয়ায় আক্রান্ত হন ‘রুবি প্রিন্সেস’ -এর যাত্রী ও ক্রু সদস্যরা। খবর পেয়ে গত ৫ মার্চ টেক্সাসে জাহাজটি ফিরে এলে সিডিসির বিশেষজ্ঞরা জাহাজে গিয়ে রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করেন। অসুস্থদের মলের নমুনাও সংগ্রহ করেন তারা। ২০২০ সালেও খবরের শিরোনামে এসেছিল এই রুবি প্রিন্সেস। শতাধিক যাত্রী করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। সংক্রমণ দুরন্ত গতিতে ছড়াচ্ছিল জাহাজের ভেতরে। আবারো ছোঁয়াচে রোগ হানা দিয়েছে এই প্রমোদতরীতেই।
যে রোগ ছড়াচ্ছে জাহাজে: রোগের কারণ এখনো স্পষ্ট নয়। তবে সিডিসি মনে করছে নোরোভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়েছে রুবি প্রিন্সেস প্রমোদতরীতে। নোরোভাইরাস অনেকটা ডায়েরিয়ার রোটাভাইরাসের মতো। তবে এদের প্রজাতি আলাদা। আরো বেশি সংক্রামক।
ভাইরোলজিস্টরা বলছেন, এই ভাইরাসের সংক্রমণ হলে ১২-৪৮ ঘণ্টার মধ্যে লক্ষণ দেখা দিতে থাকে। অনেকের আবার ২-৩ দিন পরেও উপসর্গ ধরা পড়ে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আগে ভেঙেচুরে দেয় এই ভাইরাস। রোগীর শরীর পানিশূন্য করতে শুরু করে। ডিহাইড্রেশন দেখা দেয় রোগীর।
যে যে লক্ষণ দেখা দেয়: ডিহাইড্রেশনের সঙ্গেই মারাত্মক বমি ও পেট খারাপ শুরু হয়। বমি ও পেটের সমস্যা হলো নোরোভাইরাস সংক্রমণের প্রাথমিক লক্ষণ। অনেকেই ডায়েরিয়া ভেবে ভুল করেন, ফলে চিকিৎসা শুরু হতে দেরি হয়, ভাইরাস বিভাজিত হতে সংখ্যায় বাড়তে থাকে। নোরোভাইরাসকে Vomiting Virus বলা হয়, ভাইরোলজিস্টরা একে স্টমাক-বাগ বা স্টমাক-ফ্লু ভাইরাস বলেন।
তবে ফ্লু ভাইরাস বা ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের থেকে নোরোভাইরাস অনেকটাই আলাদা। পেটে অসহ্য যন্ত্রণা শুরু হয়। তারপরেই বমি হতে থাকে। সঙ্গে ঘন ঘন পেট খারাপ। এই ভাইরাসের সংক্রমণ হলে বমি থামতে চাইবে না। জ্বর আসবে, মাথা ব্যথা বাড়বে, মোচড় দেবে পেট। প্রচণ্ড ক্লান্তি ও ঝিমুনি হবে রোগীর। সংক্রমণ বাড়লে পেশির ব্যথা শুরু হবে। অন্ত্রে প্রদাহ হবে। ডিহাইড্রেশন বেড়ে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হতে পারে। এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঘন ঘন হলে অপুষ্টির শিকার হবে রোগী। সঠিক ট্রিটমেন্ট না হলে মৃত্য়ুও হতে পারে।
সময় বলবে, কী হবে তাদের!
সূত্র: দ্য ওয়াল
বিশ্বের সেরা হট বিজ্ঞানী সম্পর্কে জানলে, ঘুরে যাবে আপনার মাথা
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।