জুমবাংলা ডেস্ক : নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি, বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি, কৃষি উপকরণের মূল্যবৃদ্ধি এবং ক্ষুদ্র শিল্পের সংকটে তীব্র ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)।
পার্টির প্রেসিডিয়াম সভায় বলা হয়েছে, সরকার এসব সংকটের সমাধানে যথাযথ ভূমিকা না নিয়ে ক্ষমতা রক্ষায় ব্যস্ত। সরকারের এসব গণবিরোধী সিদ্ধান্ত রুখে দাঁড়াতে না পারলে রেলসহ নানা জায়গায় মূল্যবৃদ্ধি ও নতুন নতুন করারোপ করে জনগণের পকেট নিংড়ানো চলতে থাকবে।
সিপিবি কার্যালয়ে শনিবার (১৬ মার্চ) অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন সিপিবি সভাপতি মো. শাহ আলম।
সভায় উপস্থিত ছিলেন পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, প্রেসিডিয়াম সদস্য শাহিন রহমান, লক্ষ্মী চক্রবর্তী, অধ্যাপক এ এন রাশেদা, মোতালেব মোল্লা ও পরেশ কর।
সভায় বলা হয়, কথার মালা তৈরির মাধ্যমে ক্ষমতাসীন শাসকগোষ্ঠী ও ক্ষমতার বাইরের শাসকগোষ্ঠী প্রতিদিন পরস্পরের বিরুদ্ধে যেসব কথা বলে তাতে জনস্বার্থ নয় বরং পাল্টাপাল্টি কথারই বহিঃপ্রকাশ প্রকাশিত হয়। প্রচার যন্ত্রের মাধ্যমে এসব কথা সামনে আসায় পুরো রাজনীতির প্রতি মানুষের নেতিবাচক মনোভাব ও মূল সংকটকে এবং তার সমাধানের পথের আলোচনাকে অন্যদিকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
আরো বলা হয়, শাসকগোষ্ঠী মুক্তিযুদ্ধের বয়ান তার তার নিজের মতো করেই তৈরি করছে।
এরা মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনাকে পরিত্যাগ করেই চলেছে। ক্ষমতাসীনরা কথায় কথায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বললেও এরা মুক্তিযুদ্ধের ধারার অর্থনৈতিক ব্যবস্থা বাতিল করে মুক্তবাজারের নামে লুটপাটের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা কায়েম করেছে। সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের শুধু তোষণ নয়, তাদের অংশীদার সরকার।
সভায় বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি ও ধাপে ধাপে আগামী তিন বছর ধরে মূল্যবৃদ্ধির যে ঘোষণা দিয়েছে তাতে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলা হয়, সরকারের গণবিরোধী নীতির কারণেই আজ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে তীব্র সংকট তৈরি হয়েছে।
এটা জাতীয় অর্থনীতির বোঝা ও এই বোঝা জনগণের ওপরে চাপিয়ে তাদের পকেট কাটার নীতি গ্রহণ করা হচ্ছে। আইএমএফ, দেশি-বিদেশি লুটেরাদের খুশি করতে এই দাম বৃদ্ধি করা হচ্ছে।
সভায় স্থল ও সমুদ্রভাগে গ্যাস ও তেল অনুসন্ধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, শতভাগ মালিকানা নিশ্চিত করেই গ্যাস-তেল অনুসন্ধান ও উত্তোলন করতে হবে। দেশীয় সংস্থাকে সাথে রেখে প্রয়োজনে বিদেশি কন্ট্রাক্টর ভাড়া করে এ কাজ সম্পন্ন করতে হবে। অন্তত ৫০ বছরের গ্যাস মজুদ ছাড়া রপ্তানি করা যাবে না, এমন আইন করতে হবে।
নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিদ্যুৎ উৎপাদনে দেশীয় বিশেষজ্ঞদের সাথে পরামর্শ করেই পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
সভায় ঈদের আগে বোনাস সহ শ্রমিক-কর্মচারীদের বকেয়া পাওনা পরিশোধ, জাতীয় ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ ও ঘোষণার দাবি জানানো হয়। সভায় বলা হয়, দেশের ঐতিহ্য ও অর্থনীতি সচলকারী পাটশিল্প রক্ষায় রাষ্ট্রীয় পাটকল লিজ নয়, আধুনিকায়ন করে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে চালু করতে হবে।
সভায় চলমান দুঃশাসনের অবসান, ব্যবস্থা বদল ও বাম গণতান্ত্রিক বিকল্প শক্তি সমাবেশ গড়ে তুলতে, বাম জোটের আন্দোলন ও অপারাপর বাম প্রগতিশীল শক্তির সাথে কার্যক্রম অগ্রসর এবং দ্বিদলীয় রাজনীতির ধারার বাইরে নীতিনিষ্ঠ অবস্থানে থেকে আন্দোলন গড়ে তুলতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।