জুমবাংলা ডেস্ক : দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তায়ন বিস্তার করে চলমান অর্থনৈতিক সংকট সমাধানের চিন্তা অবাস্তব বলে মন্তব্য করেছেন বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের।
তিনি বলেন, অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে সমাজের সবক্ষেত্রে জবাবদিহির ব্যবস্থা থাকা উচিত। তবেই দেশে সুশাসন আসবে।
শনিবার (২৯ জুন ) সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
জিএম কাদের বলেন, সরকার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে দায়মুক্তি আইন প্রণয়নের মাধ্যমে অবাধ দুর্নীতির সুযোগ সৃষ্টি করেছে।
সরকার অফশোর ব্যাংকিং চালু করে অবৈধভাবে পাচার হওয়া অর্থ বৈধ করার সুযোগ সৃষ্টি করেছে।
জি এম কাদের আরও বলেন, সরকার শুধু ট্যাক্স দিয়ে কালো টাকা সাদা করার মাধ্যমে দুর্নীতি থেকে দায়মুক্তি দেওয়ার প্রস্তাব করেছে।
দুর্নীতিবাজ ব্যক্তি ও গোষ্ঠী, ব্যাংক খেলাপি, অর্থ পাচারকারীদের সমন্বয়ে একটি অভিজাত ও অতি ধনী শ্রেণি তৈরি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘তাদের অর্থনীতির মূলধারায় আনতে প্রস্তাবিত বাজেটে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে।’
জি এম কাদের বলেন, কোভিড মহামারি এবং ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব বাংলাদেশে বড় সমস্যা তৈরি করেনি। বরং আসল সমস্যা জবাবদিহির অভাব, যার ফলে সুশাসনের অভাব তৈরি হয়েছে।
জাতীয় পার্টি প্রধান বলেন,‘এর ফলে সমাজের প্রতিটি স্তরে দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তায়ন ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ও সংশ্লিষ্ট নীতি ব্যক্তি স্বার্থ ও গোষ্ঠী স্বার্থ দ্বারা প্রভাবিত হয়।’
তিনি আরও বলেন, এক কথায় বলা যায়, অর্থনীতিতে দুর্বৃত্তায়ন বন্ধে সুশাসনের অভাব কাটিয়ে ওঠা ছাড়া বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে ওঠা যাবে না।
জি এম কাদের বলেন, বাজেটে মূল সমস্যার কোনো স্বীকৃতি নেই, এ সমস্যা সমাধানে কোনো দিকনির্দেশনাও নেই। ‘বরং সমস্যার কারণগুলোকে উৎসাহিত করার চেষ্টা লক্ষ্য করা যায়। তাই বিদ্যমান অর্থনৈতিক সমস্যার টেকসই ও স্থায়ী সমাধান শিগগিরই আশা করা যায় না।’
ব্যাংকিং খাতের অব্যবস্থাপনার সমালোচনা করে জিএম কাদের বলেন, ব্যাংকিং খাত নড়বড়ে অবস্থায় রয়েছে, আর এর কারণ খারাপ ঋণ।
কালো টাকা সাদা করার প্রস্তাবের বিরোধিতা করে তিনি বলেন, অনেকে বলেছেন এটা সংবিধানসম্মত নয়।
জি এম কাদের বলেন, ‘এই সুযোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশের পরিবর্তে ৫০-৬০ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাব করেন তিনি।’
বিদ্যুৎ খাতের সমালোচনা করে জিএম কাদের বলেন, অতিরিক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা দেশের অর্থনীতিতে মারাত্মক সমস্যা তৈরি করেছে।
উৎপাদন সক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে এটা সত্য, কিন্তু অর্ধেক কাজে লাগানো যাচ্ছে না। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, এর অর্ধেক অর্থাৎ প্রায় ১৫ হাজার মেগাওয়াট অব্যবহৃত উৎপাদন, বেসরকারি মালিকদের ভাড়া বা ক্যাপাসিটি চার্জের একটি বড় অংশ দিতে হয় বৈদেশিক মুদ্রায়।
অফশোর ব্যাংকিং আইনের সমালোচনা করে জি এম কাদের বলেন, অফশোর ব্যাংকিং আইনের মাধ্যমে বড় ধরনের ছাড় বা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে।
দেশের রিজার্ভের সঠিক পরিমাণ নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, গণমাধ্যমে যা শোনে মানুষ তা বিশ্বাস করে, এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের বক্তব্য জনগণ বিশ্বাস করে না।-ইউএনবি
দুর্নীতি করলে কারও রক্ষা নেই, কড়া হুঁশিয়ারি প্রধানমন্ত্রীর
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।