প্রযুক্তি ও অর্থনীতি বরাবরই একে অপরকে প্রভাবিত করে। গত কয়েক বছর ধরে কারখানা ও শিক্ষা খাতসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) ব্যবহার বাড়ছে। জেনারেটিভ এআই বা স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিবেশ থেকে শিখতে পারা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় বিশ্বব্যাপী কোটি কোটি টাকার বিনিয়োগ হচ্ছে। এর প্রভাবে বেশকিছু কাজে এখন আর মানুষের দরকারই পড়ছে না। এটিকে কর্মী ছাঁটাইয়ের কারণ হিসেবে দেখাচ্ছে অনেক কোম্পানি। ভবিষ্যৎ কর্মক্ষেত্রে এ প্রযুক্তির প্রভাব বাড়বে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞরা। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলও (আইএমএফ) বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত।
কৃষি ক্ষেত্রে এআই নতুন মাত্রা যোগ করেছে। আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ ও পোকামাকড় দমনে অনেক কৃষকই ভরসা রাখছেন এআইতে। খাদ্য উৎপাদনে মানোন্নয়ন ও আয় নিশ্চিত করতে তথ্য বিশ্লেষণ সহজ হয়েছে। মাটির পরিবর্তন ও ফসলের বৃদ্ধি পর্যবেক্ষণ করছে ড্রোন ও সেন্সর। প্রয়োজনীয় সার কিংবা পানি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া আগের মতো দুর্বোধ্য নেই। কায়িক শ্রমের বিকল্প হয়ে এগিয়ে আসছে রোবট।
মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রির ধরনও বদলে যাচ্ছে। সাবস্ক্রিপশন ও বিজ্ঞাপন বাড়াতে তারা নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা করছে। গ্রাহকের তথ্য বিশ্লেষণ করে তারা সে অনুযায়ী তৈরি করছে কনটেন্ট। ডিজিটাল কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের কাজ বেড়েছে। আর কমেছে কপি এডিটিংয়ের মতো কাজ। সমান যোগ্যতায় এ আলো ছড়িয়েছে জ্বালানি খাতেও। কোনো বিদ্যুৎকেন্দ্রের কার্যক্ষমতা সম্পর্কে পূর্বাভাস প্রদান ও ত্রুটি খুঁজে দিচ্ছে এআই। অবদান রাখছে আবহাওয়ার পূর্বাভাস প্রদান ও উপকূল অঞ্চলে বায়ুকল পরিচালনার ক্ষেত্রেও। পরামর্শের জন্য ব্যবহার হচ্ছে চ্যাটবট।
বিশ্বজুড়ে জ্বালানি সংকটের সময়ও এ খাতে গড়ে উঠেছে ৩০টির বেশি নতুন কোম্পানি। কার্বন নিঃসরণ শনাক্তেও এআই রাখতে পারে অবদান। বস্টন কনসাল্টিং গ্রুপের ভাষ্যমতে, বহুজাতিক কোম্পানিগুলোয় এআই প্রযোগ করা গেলে ২০৩০ সালের মধ্যে ২ দশমিক ৬ ট্রিলিয়ন ডলার পর্যন্ত সাশ্রয় হবে। শুধু তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের জন্য নয়। কারখানা পরিচালনার জন্যও সামনে এগিয়ে আসছে এআই। অটোমেশন ও ডিজিটাল যুগে ব্যয় কমে এসেছে উৎপাদনের। মানুষের স্পর্শ ছাড়াই বাজারে চলে আসছে পণ্য।
২০২১ সালে পিডব্লিউসির দেওয়া তথ্যানুযায়ী, পরিবহন খাতে ২০ বছরে বেশি মানুষ চাকরি হারাবে। বাস ও ট্রেনে পরিচালনার ক্ষেত্রে এরই মধ্যে এআই দেখেছে দুনিয়া। রোবোট্যাক্সি ও পাইলটবিহীন উড়োজাহাজের দিনও বেশি দূরে নয়। পুনর্গঠিত হচ্ছে অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলো। ব্যাংক ও এ অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে এআই যুগে বেশি কর্মকর্তার প্রয়োজন কমে যাবে। অবশ্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণে কিছু মানুষ থাকবে তখনো।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।