মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অস্ট্রেলিয়ায় নিষিদ্ধ হলো ১৬ বছরের কম বয়সী শিশু-কিশোরদের জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। শারীরিক সুস্থতার চেয়ে বিশ্বজুড়ে এখন যে বিষয়ে বেশি গুরুত্বারোপ করা হচ্ছে, তা হলো মানসিক স্বাস্থ্য। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উপাত্ত অনুযায়ী ১০-১৯ বছর বয়সীদের মধ্যে প্রতি সাতজনে একজন মানসিক অবসাদে ভুগছে। দুশ্চিন্তা, অবসাদ ও বেপরোয়া আচরণ অনেক ধরনের বড় রোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায় এই বয়সীদের জন্য। এ ছাড়া খুব কম বয়সে আত্মহত্যার অন্যতম কারণ মানসিক অবসাদ।
এই বিষয়গুলো নিয়ে সারা বিশ্বে অনেক আলোচনা ও গবেষণা হচ্ছে, লেখালেখি হচ্ছে, রয়েছে মানসিক স্বাস্থ্য পরিচর্যা কেন্দ্র, হচ্ছে কাউন্সেলিং। কিন্তু প্রাথমিক পর্যায় থেকে একটি নীতিগত সিদ্ধান্ত আনতে পারে পরিবর্তন। এমন চিন্তা নীতিনির্ধারক পর্যায়ে তেমনভাবে কেউ করেননি।
সেই জায়গা থেকে উন্নত বিশ্বের দেশগুলো থেকে প্রথম অস্ট্রেলিয়া নিয়েছে একটি যুগোপযোগী উদ্যোগ। সেখানে সাম্প্রতিক সময়ে নিষিদ্ধ হয়েছে ১৬ বছরের কম বয়সী শিশু–কিশোরদের জন্য ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটকের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো। এটিকে সাম্প্রতিক নেতিবাচকতার ভিড়ে একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত বলা যায়।
অস্ট্রেলিয়ার সিনেট পার্লামেন্টে অনেক দিক বিবেচনা করে এই বিলটি পাস করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশি সময় কাটানোর মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্য ও সার্বিকভাবে সুস্থ থাকার বিষয়টি বাধাগ্রস্ত হয় বলে তাঁরা মতামত প্রদান করেন। এর পরেই সর্বসম্মতিক্রমে এই বিল পাস হয়।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবানিজ বলেন, ‘শিশুরা জাতির ভবিষ্যৎ। তাদের সুস্থভাবে বেড়ে ওঠার জন্য পরিবেশ তৈরি আমাদের দায়িত্ব। শিশু–কিশোরদের অতিরিক্ত ইন্টারনেট–আসক্তির মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি রোধে এবং অভিভাবকদের পাশে দাঁড়াতে এই আইন করা হয়েছে।’
অস্ট্রেলিয়ার এই সোশ্যাল মিডিয়া আইনে যা আছে
১৬ বছরের কম বয়সীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে ওই সাইটে বয়স প্রত্যয়নের সিস্টেম রাখতে হবে, যাতে তারা ব্যবহার করতে না পারে। যদি ওই সাইট বয়স ভেরিফিকেশনে ব্যর্থ হয়, তবে ৫০ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার সমপরিমাণ জরিমানা গুনতে হবে। মেসেজিং অ্যাপ, অনলাইন গেমিং প্ল্যাটফর্ম ও শিক্ষাবিষয়ক অ্যাপ এর আওতামুক্ত থাকবে।
ইতিমধ্যে ফেসবুক, টিকটক, ইনস্টাগ্রাম—এই যোগাযোগমাধ্যমেগুলো এ সিদ্ধান্ত নেতিবাচকভাবে নিয়েছে। কারণ, অভিভাবকদের কারও অ্যাকাউন্ট দিয়ে কেউ ঢুকে পড়ে বা অভিভাবকদের অসচেতনতায় যদি শিশু–কিশোরেরা এসব সাইটে ঢুকে পড়ে, তাদের জন্য কোনো জরিমানার ব্যবস্থা রাখা হয়নি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।