আন্তর্জাতিক ডেস্ক : নিজেদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করতে বিদেশি নাগরিকদের প্রতিরক্ষা বাহিনীতে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া সরকার। মঙ্গলবার এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। এতে বলা হয়েছে, বেশ কয়েক বছর যাবৎ নিয়োগ ঘাটতিতে রয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী।
এই সংকট কাটাতে যুক্তরাজ্য সহ আরও তিন দেশের নাগরিকদের দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনীতে (এডিএফ) নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অজি সরকার। বলা হচ্ছে, ক্রমবর্ধমান আঞ্চলিক হুমকি মোকাবিলায় সশস্ত্র বাহিনীকে আরও শক্তিশালী করতে চায় অস্ট্রেলিয়া।
বৃটেনের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র, নিউজিল্যান্ড এবং কানাডার যেসব নাগরিক অস্ট্রেলিয়াতে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ পেয়েছেন তারা অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষা বাহিনীতে যোগ দিতে পারবেন।
সেক্ষেত্রে আগামী জুলাই থেকে নিউজিল্যান্ডের যেসব নাগরিক অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ী হচ্ছেন তারা অজি সামরিক বাহিনীতে আবেদনের সুযোগ পাচ্ছেন। এ ছাড়া গত জানুয়ারিতে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার যেসব নাগরিক অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্ব পেয়েছেন তারাও সেনাবাহিনীতে নিয়োগের ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকবেন। অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী রিচার্ড মারলেস বলেছেন, আগামী দশক এবং তার পরেও দেশের নিরাপত্তার ঝুঁকি মোকাবিলা করাটা আমাদের জন্য অপরিহার্য। এক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ড এরইমধ্যে দীর্ঘস্থায়ী ‘আনজাক বন্ড’ নামক চুক্তিতে সই করেছে।
নিরাপত্তার ক্ষেত্রে একতা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন অজি পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে গ্যালিপোলিতে পাশাপাশি লড়াইয়ের বিষয়ে ইঙ্গিত করেছেন। এ ছাড়া ২০২১ সালে যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অকাস চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। প্রতিরক্ষা এবং নিরাপত্তা শক্তিশালী করতে সুদূরপ্রসারী চিন্তা-ভাবনা থেকে ওই সামরিক চুক্তি করেছে অস্ট্রেলিয়া। এর মাধ্যমে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে নিজেদের অবস্থান মজবুত করতে চায় দেশটি। কেননা, এই অঞ্চলে শক্ত অবস্থানে রয়েছে চীন। ভারতীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বেইজিংয়ের ক্রমবর্ধমান উত্থানকে কেন্দ্র করে বারবার উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে ক্যানবেরা। এক্ষেত্রে গত বছরই এই অঞ্চলে নিজেদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে একটি কৌশলগত অবস্থানের কথা ব্যক্ত করে অস্ট্রেলিয়া। দেশটি তাদের প্রতিরক্ষা বাহিনীকে শক্তিশালী করতে এবং ওই চার দেশের প্রতিরক্ষা শক্তি নিজেদের পক্ষে রাখতে এমন অজি সরকার এমন কৌশল গ্রহণ করেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
২০২০ সালে আগামী দুই দশকের মধ্যে সেনাসদস্য সংখ্যা ৩০ শতাংশ বৃদ্ধির পরিকল্পনা করেছিল দেশটির আগের সরকার। সে সময় সরকার এই খাতে ৩৮ বিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার বরাদ্দ ঘোষণা করেছিল। কিন্তু দেশটিতে বেকারত্বের হার নিম্নমুখী হওয়ায় ওই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা কঠিন বলে মন্তব্য করেছেন ওই সময়ের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ম্যাট কিওগ। সরকারি তথ্যানুযায়ী দেশটির সামরিক বাহিনীতে এখনো প্রত্যাশার তুলনায় প্রায় ৫ হাজার সেনাসদস্যের ঘাটতি রয়েছে।
যদিও অস্ট্রেলিয়ার কয়েকটি মিত্র দেশ থেকে সামান্য সংখ্যক সামরিক সেনা নেয়ার রীতি ছিল কিন্তু নতুন এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সেনাবাহিনীতে বিদেশিদের অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্যভাবে প্রশস্ত করবে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।