আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রাখাইনে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের অস্ত্রের মুখে সরকার প্রদত্ত ‘বিদেশি’ পরিচয়পত্র নিতে বাধ্য করছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। ফর্টিফাই গ্রুপ নামে মানবাধিকার সংস্থা জানিয়েছে, এই কার্ড বাংলাদেশ-মিয়ানমার প্রত্যাবাসন চুক্তিতে গুরুতর প্রভাব ফেলবে। কারণ ইতোমধ্যেই নিরাপত্তা ও নাগরিকত্বের অধিকার ব্যতীত মিয়ানমারে ফিরতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে কক্সবাজারের আশ্রয়শিবিরে থাকা সাড়ে ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা। রয়টার্স, বেনার নিউজ
ফর্টিফাই রাইস বলছে, রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক ন্যাশনাল ভেরিফিকেশন কার্ড (এনভিসি) নিতে বাধ্য করা হচ্ছে। এতে লেখা আছে, ‘এই কার্ডধারী মিয়ানমারের নাগরিক নন।’ ফর্টিফাই গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ম্যাথিউ স্মিথ বলেন, ‘মিয়ানমার সরকার প্রশাসনিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের নিশ্চিহ্ন করে দিতে চাইছে।’থাইল্যান্ডে আয়োজিত এক সেমিনারে গ্রুপের সদস্যরা বলেন, মিয়ানমার সরকারকে অবশ্যই দেশে ও বিদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্বের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। এবং রোহিঙ্গাদের বিদেশী হিসেবে চিহ্নিত করা এনভিসি কার্ড ইস্যু বন্ধ করতে হবে।
এদিকে মিয়ানমার সেনা বাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল তুন তুন নাই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, ‘এটি সত্য নয়। কাউকে অস্ত্রের মুখে বা নির্যাতনের মাধ্যমে পরিচয়পত্র নিতে বাধ্য করা হচ্ছে না।’
এরআগে ১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব আইন দ্বারা রোহিঙ্গাদের পরিচয় অস্বীকার করার পথ উন্মুক্ত করে মিয়ানমার। উগ্র বৌদ্ধ জাতিয়তাবাদে উদ্ধুদ্ধ বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের নাগরিক হিসেবে স্বীকার করে না। এর প্রেক্ষিতে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে রোহিঙ্গারা রাখাইনে বসবাস করে আসলেও ধুরুন্ধর নিবন্ধনপত্র, সবুজাভ রসিদ, হোয়াইট কার্ড, আবার কখনো এনভিসির মতো নামমাত্র পরিচয়পত্র দিয়ে মলিন করা হয়েছে রোহিঙ্গাদের জাতিগত পরিচয়, কেড়ে নেয়া হয়েছে মিয়ানমারের নাগরিকত্বের আইনী স্বীকৃতি।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর পূর্ব-পরিকল্পিত সহিংসতা-হত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন, জ্বালাও-পোড়াওয়ের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে সাড়ে ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা। এর আগে ১৯৮২ সালের পর থেকে দফায় দফায় সহিংসতার শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিলো প্রায় ৩ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা।
![](https://inews.zoombangla.com/wp-content/uploads/2024/03/34-5.jpg)
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।