বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক: মহাকাশে আইফেল টাওয়ারের মতো বড় আকারের একটি গ্রহাণু বা শিলা আগামী সপ্তাহে পৃথিবী অতিক্রম করবে। তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন- এটি পৃথিবীর বাসিন্দাদের জীবনকে হুমকির মুখে ফেলবে না। নাসার ব্যাখ্যা মতে, পৃথিবীর সবচেয়ে কাছের বস্তু হলো গ্রহাণু।
সংশ্লিষ্ট একজন জ্যোতির্বিজ্ঞানী বলছেন, গত ১৭ বছরে ২৬০টি পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা ২০০৬ এইচভি৫ নামে এই গ্রহাণুর কক্ষপথ নির্ণয় এবং তার ভিত্তিতে এর অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যত অবস্থান খুব সুনির্দিষ্টভাবে গণনা করতে সক্ষম হয়েছেন। খবর- ইন্টারন্যাশনাল দ্য নিউজ
জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মতে, এই গ্রহাণুটি ১৫ লাখ মাইল দূরত্ব অতিক্রম করবে যা চাঁদ থেকে পৃথিবীর দূরত্বের প্রায় ৬ দশমিক ৩ গুণ।
আমেরিকান অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির সঙ্গে যুক্ত ডা. সুসাননা কোহলার জানিয়েছেন, ২০০৬ সালে গ্রহাণু ২০০৬ এইচভি৫ প্রথম আবিষ্কৃত হয়। লিংকন নিয়ার-আর্থ অ্যাস্টেরয়েড রিসার্চ (লিনিয়ার) প্রকল্পের আওতায় এর সন্ধান মেলে। গ্রহাণুটি পৃথিবীর মানুষের জন্য কোনো হুমকি নয়।
তিনি জানান, বছরে মাত্র একবার এই আকারের বা তারও বড় গ্রহাণু বা শিলা পৃথিবীর কাছাকাছি আসে। পৃথিবীতে এই শিলার অভিগমনকে ‘বিরল-২’ শ্রেণিতে তালিকাভুক্ত করেছে নাসা সেন্টার ফর নিয়ার আর্থ অবজেক্ট স্টাডিজ।
গ্রহাণু সুরক্ষা প্রকল্প
লিনিয়ার একটি প্রকল্প যা মহাকাশে পৃথিবীর কাছাকাছি বস্তু সনাক্ত ও পর্যবেক্ষণে কাজ করে। এতে সমন্বিতভাবে কাজ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনী, নাসা এবং ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির লিঙ্কন ল্যাবরেটরি।
২০০৬ এইচভি৫ গ্রহাণুটির ব্যাস প্রায় ১ হাজার ফুট যা প্যারিসের সবচেয়ে উঁচু ১ হাজার ৮৩ ফুট লম্বা আইফেল টাওয়ারের কাছাকাছি। তবে আকারে এত বড় হলেও এটি খালি চোখে দেখা যায় না।
সুসাননা কোহলার বলছেন- গ্রহাণুগুলো তাদের নিজস্ব দৃশ্যমান আলো নির্গত করে না। আমরা প্রাথমিকভাবে সূর্যালোকের মাধ্যমে এটি পর্যবেক্ষণ করি যা সেটি প্রতিফলিত করে। এটি চিহ্নিত করার জন্য বড় টেলিস্কোপের সাহায্যে দেখলে যথেষ্ট উজ্জ্বল হবে।
পৃথিবী থেকে তিন কোটি মাইলের মধ্যে একটি বস্তুকে মহাকাশের কাছাকাছি বস্তু হিসেবে ধরা হয়। পৃথিবী থেকে গড়ে প্রায় ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯শ’ মাইল দূরে রয়েছে চাঁদ।
নাসার মতে, তাদের নিয়ার আর্থ অবজারভেশন প্রজেক্টের লক্ষ্য হলো- ১৪০ মিটারের চেয়ে বড় পৃথিবীর কাছাকাছি বস্তু খুঁজে বের করা, শনাক্ত করা এবং সেগুলো নিয়ে গবেষণা করা। এখন পর্যন্ত এই গ্রহাণুর ৪০ শতাংশের বেশি সনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে।
যদি যেকোনো গ্রহাণু পৃথিবীর কাছাকাছি আসতে থাকে তাহলে গ্রহ প্রতিরক্ষা সমন্বয় অফিস (প্ল্যানেটারি ডিফেন্স কোঅর্ডিনেশন অফিস, পিডিসিও) একটি সতর্কতা চালু করবে। আগামী ৫০ বছরে এটি ঘটার আশঙ্কা এক শতাংশের বেশি থাকলেও সতর্কতায় তা বলা থাকবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।