লাইফস্টাইল ডেস্ক : গরমে আরাম পেতে এই সময় সবাই কমবেশি আইসক্রিম খেতে পছন্দ করেন। শিশুদের মধ্যে আইসক্রিম খাওয়ার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি লক্ষ করা যায়। অনেকেই লোভনীয় এই স্বাস্থ্যঝুঁকি খাবারটিকে এড়িয়ে চলতে চেষ্টা করেন। এই সিদ্ধান্ত কতটা যুক্তিযুক্ত, জানেন কি?
শরীরে ফ্যাট জমবে-এই ভয়ে অনেকেই খান না। তবে আইসক্রিমপ্রেমীদের জন্য একটা সুখবর রয়েছে।
টকিও কিওরিন ইউনিভার্সিটির জাপানিজ প্রফেসর ও গবেষক ইউশিহিকো কোগা দাবী করেছেন, প্রতিদিনের ব্রেকফাস্টে রাখুন আইসক্রিম। তাতে নাকি কর্মক্ষেত্রে প্রতিদিন সাফল্যের সঙ্গে উন্নতি করবেন। আগের তুলনায় আপনি অনেক স্মার্ট হয়ে উঠবেন।
কোগার কথায়, একজন পুরুষ বা মহিলা, প্রতিদিন কাজের জায়গা ছাড়াও অবসরেও স্ট্রেস আর কাজের চাপের মধ্যে থাকতে থাকতে মস্তিষ্ক আর নতুন কিছু ভাবতে পারছে না। মস্তিষ্ককে যদি সতেজ ও সক্রিয় রাখতে হয়, অফিসে যদি বসের নজরে আসতেই হয়, তাহলে ঘুম থেকে ওঠার পরই নিজের পছন্দের আইসক্রিম খাওয়া মাস্ট! দুটি দল গঠন করে তিনি সমীক্ষাও চালিয়েছিলেন। একটি দলকে প্রতিদিন ব্রেকফাস্টে আইসক্রিম দেওয়া হত। অন্যদের পাতে আইসক্রিম দেওয়া হত না। বেশ কিছুদিন পর, দুটি দলের মধ্যে কম্পিউটারে মেন্টাল পাজলের সমাধান করতে দেওয়া হয়। দেখা যায়, যে দল প্রতিদিন সকালে আইসক্রিম খেয়েছে, সেই দল খুব তাড়াতাড়ি পাজলগুলির উত্তর দিয়ে দিচ্ছেন।
তিনি রিপোর্টে লিখেছেন, প্রতিদিন সকালে, আইসক্রিম খেলে ব্রেনের মধ্যে উচ্চ-ক্ষমতাসম্পন্ন আলফা তরঙ্গ প্রবাহিত হয়। কোগার কথায়, আইসক্রিমের বদলে যদি ঠান্ডা জল খাওয়া হয়, তাতেও রেজাল্ট ভালো হবে। তবে আইসক্রিম খাওয়ার তুলনায় কিছুই নয়। কোগার এই গবেষণায় বাধ সেধেছে ব্রিটিশ নিউট্রিশনিস্টরা। তাঁদের কথায়, ব্রেকফাস্টে আইসক্রিম খাওয়া মানে তেল খাওয়ার সমান। তবে ব্রিটিশ নিউট্রিশনিস্ট শার্লট স্ট্রিংলি জানিয়েছেন, ঘুম থেকে উঠে আইসক্রিমের সঙ্গে পাতে থাকুক ফল, স্ক্র্যাম্বেলড এগ, সালমন, টোস্ট, লো সুগার ব্রেকফাস্ট সিরিয়ালস।
তবে খুব ঠাণ্ডা অবস্থায় আইসক্রিম না খেলেই কিন্তু আপনি এ থেকে কোনো ক্ষতিকর প্রভাব না পেয়ে শুধু উপকারিতাটুকুই পেতে পারেন। তাই আসুন আজকের আয়োজন থেকে জেনে নিই আইসক্রিম খাওয়ার কিছু উপকারিতার কথা।
আইসক্রিম দুধ থেকে তৈরি করা হয়। তাই আইসক্রিম খাওয়ার অভ্যাসকে স্বাস্থ্যকর বলাই যায়। এতে রয়েছে প্রোটিন , ফ্যাট এবং কার্বোহাইড্রেটের মতো প্রয়োজনীয় উপাদান। তাই আইসক্রিম খাওয়ার পর আপনি দ্রুত এনার্জি পেয়ে যাবেন শরীরে।
এসব উপাদান ছাড়াও আইসক্রিম থেকে যেসব উপাদানগুলো পাওয়া যায় তা হলো ক্যালসিয়াম, জিঙ্ক, পটাশিয়াম, আয়োডিন, ফসফরাস, ভিটামিন এ এবং বি কমপ্লেক্সের মতো খনিজ পদার্থ; যা শরীরকে সতেজ ও প্রাণবন্ত রাখতে কাজ করে।
আইসক্রিমে এসব উপাদানের উপস্থিতি থাকার কারণে এটি হাড় মজবুত রাখে। পাশাপাশি শরীরে রোগপ্রতিরোধ বাড়িয়ে শ্বাসযন্ত্র এবং গ্যাস্ট্রোইনস্টেনটিনালের সুরক্ষা নিশ্চিত করে। আর যদি আইসক্রিমে থাকে বিভিন্ন ধরনের ড্রাইফুড তাহলে তো কথাই নেই।
এ ছাড়া আইসক্রিমে ট্রিপটোফ্যান নামে একধরনের উপাদানের উপস্থিতি থাকে যার কারণে এটি হ্যাপি হরমোন বা সেরোটোনিন নিঃসরণের গতিকে বাড়িয়ে দেয়। তাই জীবনে সুখী অনুভব বাড়িয়ে নিতে একটু আইসক্রিম খাওয়ার অভ্যাস করতেই পারেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অতিরিক্ত আইসক্রিম খাওয়ার প্রবণতা শরীরে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। যেমন ওজন বৃদ্ধি, টনসিলের সমস্যা ইত্যাদি।
সূত্র: বোল্ড স্কাই
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।