আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি বেশ কিছুকাল অন্তত প্রকাশ্যে দেশ ছাড়েনি। ফলে তার ব্যতিক্রমি ওয়াশিংটন সফর বিশেষ নজর কেড়েছিল। বর্তমানে তিনি সহজেই পূর্বঘোষিত সফরে দেশ ছাড়ছেন। এমনকি রাশিয়ার তর্জনগর্জন বাড়লেও সেই পরিকল্পনায় বিঘ্ন ঘটছে না। বুধবার রাশিয়ার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ জেলেনস্কিকে ‘নিশ্চিহ্ন’ করে দেওয়ার ডাক দিয়েছেন।
বুধবার জেলেনস্কি ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলসিংকিতে নর্ডিক দেশগুলোর শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে সশরীরে বৈঠক করেন। তারা যতকাল প্রয়োজন ইউক্রেনকে সহায়তার অঙ্গীকার করেন। তারপর রাতে তিনি আচমকা নেদারল্যান্ডসের রাজধানী দ্য হেগে পৌঁছন। ডাচ সরকারের একটি বিমান তাকে সেখানে নিয়ে যায়।
জেলেনস্কি ডাচ পার্লামেন্টে ভাষণ দিয়েছেন। ডাচ আইনপ্রণেতা টম ভ্যান ডার লি লিখেছেন, ভাষণটি ‘চিত্তাকর্ষক’ ছিল। পাশাপাশি তিনি আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালত আইসিসিতেও গেছেন। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের গ্রেপ্তারের জন্য সেই আদালতের শমনের প্রেক্ষাপটে সেখানে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপস্থিতি বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে। জেলেনস্কিকে আইসিসি ভবনের বাইরে স্বাগত জানান আদালতের প্রেসিডেন্ট পোল্যান্ডের পিওত্র হফমানস্কি। আদালতের কর্মীরা জেলেনস্কির আগমনের আভাস পেয়ে জানালায় ভিড় করেন। ভবনের বাইরে তাদের নিজস্ব পতাকার পাশে একটি ইউক্রেনীয় পতাকাও লাগানো হয়েছিল।
ইউক্রেনের নেতার মুখপাত্র সের্গেই নাইকিফোরভ এএফপিকে বলেছেন, ‘আমরা দ্য হেগে আছি, আমরা সেখানে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছি।’
‘ইউক্রেনের জন্য ন্যায় ছাড়া কোনো শান্তি সম্ভব নয়’ শীর্ষক এক ভাষণও দেবেন জেলেনস্কি। এ ছাড়াও তিনি ডাচ প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটে এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী কাজসা ওলংগ্রেনের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে ডাচ ব্রডকাস্টিং ফাউন্ডেশন জানিয়েছে। ডাচ সরকারও একই তথ্য দিয়ে প্রেসিডেন্টের সফরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
রাশিয়ায় আরো বিস্ফোরণ
এদিকে রাশিয়ায় একের পর এক রহস্যজনক বিস্ফোরণকে কেন্দ্র করে জল্পনাকল্পনা বাড়ছে। খোদ ক্রেমলিনের ওপর ড্রোনের উড়াল ও বিস্ফোরণের দায় রাশিয়া ইউক্রেনের ওপর চাপালেও কিয়েভের সরকার তা অস্বীকার করেছে। ফলে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ নিয়ে ধোঁয়াশা থেকে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার ভোরে রাশিয়ার দক্ষিণে কৃষ্ণ সাগর উপকূলে ইলস্কি শোধনাগারের কাছে পেট্রোলিয়ামজাত পণ্যের এক ভাণ্ডারে ড্রোন হামলার পর অগ্নিকাণ্ডকে ঘিরেও প্রশ্ন উঠছে।
উল্লেখ্য, এক দিন আগে অধিকৃত ক্রিমিয়া উপদ্বীপে জ্বালানির এক গুদামেও ড্রোন হামলার পর বিস্ফোরণ ঘটেছিল। ইউক্রেন সাধারণত এমন হামলা সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করে না।
বৃহস্পতিবার ভোরে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ ও অন্যান্য কিছু শহরে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের সূত্র অনুযায়ী, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা রাশিয়ার ড্রোন হামলা প্রতিহত করতে চরম ব্যস্ততা দেখাচ্ছে। ইউক্রেনের কর্তৃপক্ষের সূত্র অনুযায়ী, ২৪টি হামলার মধ্যে ১৮টি বানচাল করা সম্ভব হয়েছে। কৃষ্ণ সাগরের তীরে ওডেসা শহরেও হামলার খবর পাওয়া গেছে। গত অক্টোবর থেকেই রাশিয়া ইউক্রেনের শহরগুলোর ওপর নিয়মিত হামলা চালিয়ে আসছে। খেরসন শহরে সম্প্রতি এমনই এক হামলায় ২১ জন নিরীহ মানুষ নিহত হয়েছে বলে ইউক্রেন দাবি করছে।
সূত্র : ডয়চে ভেলে, দ্য কিয়েভ ইনডিপেনডেন্ট, টাইমস অব ইসরায়েল, দ্য ব্রাসেলস টাইমস
আরও এক ব্যাংকের ধস: যুক্তরাষ্ট্রে ফার্স্ট রিপাবলিক ব্যাংক কিনে নিচ্ছে জে পি মরগ্যান
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।