জুমবাংলা ডেস্ক: বিশ্বজুড়েই চলছে অর্থনৈতিক সংকট। প্রায় সব দেশই মূল্যস্ফীতির ধাক্কায় নাকাল। তবে সংকটের মধ্যেও আশার কথা হচ্ছে, উন্নত দেশগুলো বাংলাদেশ থেকে আগের চেয়ে বেশি পোশাক আমদানি করছে। তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ইউরোপের বাজারে দ্বিতীয় এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৃতীয় অবস্থান ধরে রেখেছে বাংলাদেশ।
যুক্তরাষ্ট্রের অফিশিয়াল সোর্স অফিস অব টেক্সটাইলস অ্যান্ড অ্যাপারেল (অটেক্সা) ও ইউরোপীয় পরিসংখ্যান সংস্থা ইউরোস্ট্যাটের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ পোশাক রপ্তানি করেছে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি।
ইউরোস্ট্যাটের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২১ সালের জানুয়ারি-সেপ্টেম্বরের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোতে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ৪৩.২১ শতাংশ বেড়ে ১৭.৫৬ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। ইউরোপে পোশাক রপ্তানির পরিমাণ ২২.৫৬ শতাংশ নিয়ে বাংলাদেশ দ্বিতীয়। আর চীন ২৯.৪ শতাংশ নিয়ে এ অঞ্চলে শীর্ষে রয়েছে।
ইইউ ২০২২ সালের প্রথম ৯ মাসে চীন থেকে ২২.৫৯ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পোশাক আমদানি করেছে, যেখানে বছরওয়ারি প্রবৃদ্ধি ২৫.১৯ শতাংশ।
এ সময় তুরস্ক থেকে ইইউ ৯.১৯ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে। দেশটির বছরওয়ারি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৪.৮৬ শতাংশ। তুরস্ক ইইউ’র তৃতীয় বৃহত্তম পোশাকের বাজার। এ ছাড়া ভারত থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের আমদানি বেড়েছে ১৫.৮৫ শতাংশ। ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ ১০ পোশাক সরবরাহকারীর মধ্যে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে।
উচ্চ প্রবৃদ্ধিসহ অন্য দেশগুলো হলোÑ কম্বোডিয়া ৪১.৮ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়া ৩৩.৪৬ শতাংশ এবং পাকিস্তান ৩০.৭৬ শতাংশ।
অটেক্সার তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকে ৭.৫৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পোশাক আমদানি করেছে। এই সময়ে বাংলাদেশ থেকে তাদের পোশাক আমদানি ৫০.৯৮ শতাংশ বেড়েছে। দুই বছর ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানি বেড়েছে।
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, হতাশাব্যঞ্জক বিশ্ব অর্থনীতি এবং ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতির প্রেক্ষাপটের মধ্যেও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশ তার প্রধান তিন প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের চেয়ে বেশি হারে পোশাক রপ্তানি করেছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পোশাক আমদানি ৪৩.২১ শতাংশ বেড়ে ১৭.৫৬ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যেখানে বিশ্ব থেকে তাদের আমদানি ২৭.৮৭ শতাংশ বেড়েছে। এটি অবশ্যই আশাব্যঞ্জক। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দেশটিতে মূল্যস্ফীতি ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। এ কারণে ব্র্যান্ডগুলোর বিক্রয় কেন্দ্রে পোশাকের বিক্রি কিছুটা কমেছে।
আর অটেক্সার তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি- সেপ্টেম্বর সময়ে বিশ্ব থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানি ৩৪.৬১ শতাংশ বেড়েছে। বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের জন্য পোশাক আমদানির ৮.৫৪ শতাংশ নিয়ে তৃতীয় বৃহত্তম উৎস হিসেবে অবস্থান ধরে রেখেছে।
চীন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য সর্ববৃহৎ পোশাক সরবরাহকারী। রপ্তানির পরিমাণ ২২.৪৮ শতাংশ। এরপর ১৮.৫১ শতাংশ শেয়ার নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ভিয়েতনাম। ২০২২ সালের প্রথম ১০ মাসে চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি ২৮.৯৪ শতাংশ বেড়েছে। এ সময় দেশটি থেকে ১৭.৭২ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করা হয়েছে। একই সময়ে ভিয়েতনাম থেকে আমদানি ১৪.৫৯ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে, বছরওয়ারি ৩৪.৬৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এই সময়ে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকে ৭.৫৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পোশাক আমদানি করেছে। গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৫০.৯৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের অন্য শীর্ষ পোশাক সরবরাহকারীদের উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি হয়েছে। উচ্চ প্রবৃদ্ধিসহ অন্য শীর্ষ দেশগুলো হলো ইন্দোনেশিয়া ৫৪.৬৬ শতাংশ, ভারত ৫৩.৩৯ শতাংশ, কম্বোডিয়া ৪৬.৫৮ শতাংশ, পাকিস্তান ৪০.১১ শতাংশ এবং দক্ষিণ কোরিয়া ৩৯.৬১ শতাংশ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।