সকালের হালকা রোদে কেউ বুঝতে না পারলেও, আকাশের গভীরে আজ লুকিয়ে আছে পরিবর্তনের সুর। হালকা বাতাসের মধ্যে যেন এক অজানা পূর্বাভাস। সকালবেলা থেকেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আকাশ আংশিক মেঘলা থাকলেও বিকেলের দিকে তার রূপ নিতে পারে ঘন মেঘে, দমকা হাওয়ায় আর বজ্রসহ বৃষ্টিতে। আজকের আবহাওয়া শুধুমাত্র ছাতা বা রেইনকোটের প্রস্তুতির বিষয় নয়, বরং এটি হতে পারে জীবনযাত্রা, কৃষিকাজ এবং পরিবহন ব্যবস্থার জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। ঝড়-বৃষ্টির কথা মাথায় রেখে আজকের পরিকল্পনায় আনতে হবে কিছু পরিবর্তন।
আজকের ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, আজ শুক্রবার দেশের উত্তর ও পূর্বাঞ্চলে বজ্রসহ বৃষ্টির প্রবণতা বেশি দেখা যেতে পারে। বিশেষ করে ঢাকা, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু এলাকায় ঝড়-বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দু-একটি জায়গায়ও থাকতে পারে বৃষ্টির প্রভাব।
দুপুরের পর থেকে এসব এলাকায় দমকা হাওয়ার সঙ্গে বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এতে করে কৃষি কাজ, খোলা জায়গার ব্যবসা কিংবা যাতায়াতে কিছুটা বিঘ্ন ঘটতে পারে। যারা এই এলাকায় অবস্থান করছেন, তাদের জন্য পরামর্শ থাকবে—জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে না বের হওয়া এবং ছাতা বা রেইনকোট সঙ্গে রাখা।
এ ধরনের আবহাওয়া সাধারণত পশ্চিমা লঘুচাপ এবং মৌসুমি বায়ুর পরিবর্তনের কারণে দেখা দেয়। বিশেষ করে মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ঝড়ো আবহাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এ সময় হঠাৎ বজ্রপাত এবং ভারী বৃষ্টিপাত জনজীবনে অসুবিধা সৃষ্টি করতে পারে।
গত সপ্তাহ থেকে চলমান বৃষ্টিপাতের ধারাবাহিকতায় আজও আকাশ মেঘলা থাকার সম্ভাবনা প্রবল। ফলে দিনের তাপমাত্রা কিছুটা কম থাকলেও, আর্দ্রতা বেশি থাকায় অস্বস্তিকর অনুভব হতে পারে। বিশেষ করে বৃদ্ধ, শিশু এবং অসুস্থদের জন্য সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।
বিশ্ববাজারের প্রভাব এবং আবহাওয়ার পরিবর্তন দেশের অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলছে।
বজ্রপাত, দমকা হাওয়া
বাংলাদেশে প্রতি বছর বজ্রপাতজনিত প্রাণহানির ঘটনা ঘটে থাকে। বর্তমানে বজ্রপাতকে জাতীয় দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। আজকের পূর্বাভাস অনুযায়ী, বিশেষ করে সিলেট, ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে বজ্রপাতের সম্ভাবনা বেশি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বজ্রপাতকালে খোলা জায়গায় অবস্থান করা বিপজ্জনক। তাছাড়া মোবাইল ফোন ব্যবহার, গাছের নিচে অবস্থান কিংবা খালি পায়ে চলাফেরা থেকেও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। যারা কৃষিকাজ বা বাইরের কাজ করেন, তাদের জন্য এ সময় সর্বোচ্চ সতর্কতা জরুরি।
এছাড়া বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সম্ভাবনাও থাকে এ ধরনের আবহাওয়ার সময়। অনেক সময় বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ব্যবহারেও সমস্যা হতে পারে। তাই বাড়ি বা অফিসে সার্জ প্রটেকটর ব্যবহার করা এবং অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকা জরুরি।
দমকা হাওয়ার কারণে গাছপালা বা পুরনো স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই যেসব এলাকায় নির্মাণকাজ চলছে বা গাছ রয়েছে, সেসব জায়গায় বাড়তি সতর্কতা প্রয়োজন।
সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে আবহাওয়ার এমন অবস্থায় আগে থেকেই প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
স্বর্ণের বাজার পরিবর্তন সহ বিভিন্ন ব্যবসার ক্ষেত্রেও এই আবহাওয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
আবহাওয়া বিষয়ক বিস্তারিত ও আপডেট তথ্যের জন্য সরকারি Bangladesh Meteorological Department ওয়েবসাইট দেখতে পারেন।
FAQs
- আজ কোন কোন অঞ্চলে ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে?
ঢাকা, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগে ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশাল বিভাগেও দু-এক জায়গায় বৃষ্টিপাত হতে পারে। - বজ্রপাতের সময় কী করা উচিত?
বজ্রপাতের সময় খোলা জায়গায় না থাকা, গাছের নিচে আশ্রয় না নেওয়া এবং বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ব্যবহার না করাই নিরাপদ। - আবহাওয়া পরিবর্তনে যাতায়াতে কী সমস্যা হতে পারে?
ঝড়-বৃষ্টি চলাকালে রাস্তায় পানি জমে যাওয়া, যানজট এবং বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হতে পারে। - কৃষিকাজে আবহাওয়ার কী প্রভাব পড়তে পারে?
হঠাৎ বৃষ্টিপাত ফসলের ক্ষতি করতে পারে, বিশেষ করে যেসব ফসল কাটা হয়নি। তাই কৃষকদের বাড়তি সতর্ক থাকতে হবে। - আজকের আবহাওয়ার মূল বৈশিষ্ট্য কী?
আংশিক মেঘলা আকাশ, দমকা হাওয়া এবং বজ্রসহ বৃষ্টিপাত—এগুলোই আজকের আবহাওয়ার প্রধান বৈশিষ্ট্য।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।