জুমবাংলা ডেস্ক : আজ পঁচিশে বৈশাখ, বাংলা সাহিত্যের অনন্যপ্রতিভা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন। আজ থেকে ১৫৭ বছর আগে ১২৬৮ বঙ্গাব্দের এই দিনে (৭ মে, ১৮৬১ খ্রিষ্টাব্দ) কলকাতায় জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে ক্ষণজন্মা এই মানুষটির জন্ম হয়। তাঁর লেখনীতে বাংলা সাহিত্যের সব কটি ধারা পরিপুষ্ট হয়েছে।
প্রথম নোবেল বিজয়ী বাঙালি কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাবা ছিলেন ব্রাহ্ম ধর্মগুরু দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, মাতা সারদাসুন্দরী দেবী। রবীন্দ্রনাথ ছিলেন মা-বাবার চতুর্দশ সন্তান। জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবার ছিল ব্রাহ্ম আদিধর্ম মতবাদের প্রবক্তা।
জন্মেছিলেন বিত্ত,বিদ্যা, সংস্কৃতি ও শহুরে আভিজাত্যের আবহে। বয়স যখন বাইশ তার হাতে পড়ে লালনের একটি গানের সংকলন। তিনি পেয়ে গেলেন তার একবারে নিজস্ব পরিমণ্ডল। রূপ ও ভাবে, এই খানে তাকে বুঝে নিতে হলো তার আত্মপরিচয়ের বলয় আর কেন্দ্র।
বাউল গানে রবীন্দ্রনাথ আপন আত্মার প্রতিধ্বনি শুনতে পেলেন। আপন ভাবনার সমর্থন খুঁজে পেলেন এ গানের কথায়। ধর্মচিন্তা শাস্ত্রের ভূমি ছেড়ে প্রাণের আকাশে উধাও হলো। রবীন্দ্র মানসে বাউল প্রভাবের মূলে ছিল লালনের গান। বাউলের মনের মানুষ রবীন্দ্রনাথকে মরমি পথে টেনে নেয়। আর তাইতো, সুর, বাণী, তত্ত্বকথা যেমন তাকে আকৃষ্ট করেছিল তেমনি বাউলের বেশভূষারও প্রভাব পড়েছিল রবীন্দ্রনাথের যাপিত জীবনে।
রবীন্দ্রনাথে বাউল প্রভাবিত গান প্রাকৃতিক নিশীথিনী যেন,তার সামনে দাঁড়ালে সমস্ত মিথ্যে, সরে যায় সাজিয়ে কথা-বলার সংসার। অন্তরগ্লানির মধ্যে দাড়িয়ে, দু:খ আর মৃত্যুর অবারিত অস্তিত্বের মধ্যে দাড়িয়ে রবীন্দ্রনাথের কারণেই আমরা এখন আমরা বলতে পারি তবু প্রাণ নিত্যধারা হাসে সূর্য চন্দ্র তারা।
মাইকেল মধুসূদন দত্ত ও বিহারীলালের লেখনীর মাধ্যমে বাংলা কবিতায় আধুনিকতার সূচনা হলেও রবীন্দ্রনাথের হাতেই তা পূর্ণতা পায়। বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক ছিলেন মূলত একজন কবি। তার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা তেমন একটা না থাকলেও মাত্র আট বছর বয়সে তিনি কাব্যরচনা শুরু করেন তিনি। তাঁর প্রকাশিত মৌলিক কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ৫২। প্রায় দুই হাজার গান লিখেছেন, যা এখনো জয় করে চলেছে নবীন, প্রবীন সকলকেই।
কবিতা ও গান ছাড়াও তিনি ১৩টি উপন্যাস, ৯৫টি ছোটগল্প, ৩৬টি প্রবন্ধ ও গদ্যগ্রন্থ এবং ৩৮টি নাটক রচনা করেছিলেন। রবীন্দ্রনাথের সমগ্র রচনা রবীন্দ্র রচনাবলী নামে ৩২ খণ্ডে প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া তাঁর সামগ্রিক চিঠিপত্র উনিশ খণ্ডে প্রকাশিত হয়েছে।
গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের জন্য ১৯১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান তিনি । বাংলাদেশ, ভারত ও শ্রীলঙ্কার জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে রবীন্দ্রনাথের লেখা গান।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।