জুমবাংলা ডেস্ক : খাতুনগঞ্জের আড়ত থেকে প্রতিদিনই বের হচ্ছে পচা পেঁয়াজ। ব্যবসায়ীদের দাবি, আমদানি করা পেঁয়াজের অর্ধেকই পচা। কিন্তু ভোক্তারা বলছেন, অতিরিক্ত দাম পাওয়ার আশায় আড়তে পেঁয়াজ মজুদ করে দাম শতকে নিয়ে যান ব্যবসায়ীরা। এমনকি আড়তে পেঁয়াজ পচিয়েও তারা দাম কমাননি। এখন এই পেঁয়াজ ১৫-২০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছেন তারা। এসব পেঁয়াজের ক্রেতাও মিলছে না। ফলে ফেলে দিতে হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ৫ জুন পেঁয়াজের কেজি যখন শতক ছুঁয়েছিল তখন সরকার ভারত থেকে পণ্যটি আমদানির অনুমতি দেয়। এর পর স্থলবন্দরগুলো দিয়ে প্রতিদিন শত শত পেঁয়াজবোঝাই ট্রাক আসতে থাকে খাতুনগঞ্জে।
গতকাল ভোগ্যপণ্যের বৃহৎ পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জের পেঁয়াজের আড়তদার ও কমিশন এজেন্ট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এখন মোকামে পেঁয়াজের সংকট নেই। তবে নতুন বিপদ দেখা দিয়েছে নষ্ট ও পচা পেঁয়াজ নিয়ে। ভারত থেকে আমদানি করা পণ্যটির ৫০ শতাংশই মিলছে পচা। প্রতিটি আড়ত এখন পচা পেঁয়াজে সয়লাব। এসব পেঁয়াজ আলাদা করে বিক্রি করছেন তারা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যবসায়ী বলেন, খাতুনগঞ্জের আড়ত থেকে এখন যেসব পচা
পেঁয়াজ বের হচ্ছে, সেগুলো মজুদ করে রেখেছিল ব্যবসায়ীরা। অনেকেই ভেবেছিল, অনেকবার ঘোষণা দিয়েও সরকার ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করেনি। এবার যখনই আমদানির অনুমতি দেয়, তখনই বিপাকে পড়েন আড়তদাররা। মূলত অতিরিক্ত লাভের আশায় পণ্যটি আড়তেই পচিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
নগরীর আন্দরকিল্লা ভ্যানে পেঁয়াজ বিক্রেতা রফিক মিয়া, আড়ত থেকে মানে খারাপ পেঁয়াজের মণ কিনেছি ৪৮০ টাকায়। সেখান থেকে বেশি পচাগুলো ফেলে দিয়ে দুই কেজি বিক্রি করছি ৫৫ টাকায়।
খাতুনগঞ্জের গ্রামীণ বাণিজ্যালয়ের স্বত্বাধিকারী বোলাই কুমার পোদ্দার বলেন, এখন আড়তে যেসব পেঁয়াজ আসছে, সেগুলো একদিন রাখারা পর রঙ কালো হয়ে যাচ্ছে। উঠে যাচ্ছে আবরণও। আবার কিছু পেঁয়াজের শেকড় বের হচ্ছে।
খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের সবচেয়ে বড় আড়ত হামিদুল্লাহ মিয়া মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইদ্রিসবলেন, ভারতীয় পেঁয়াজ আড়তে আসার পর সেগুলো বাছাই করে বিক্রি করতে হচ্ছে। পচা আর ভালো পেঁয়াজের দাম ভিন্ন। পচাটা কেজি ১৫-২০ আর ভালোটা ৪০ টাকা।
খাতুনগঞ্জের আড়তদার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, পেঁয়াজের আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে এমন খবরে অতি উৎসাহী হয়ে তখন থেকেই বাড়তি পেঁয়াজ ট্রাকে লোড করে বর্ডারে এনে রাখে অনেকেই। কিন্তু অনেক দেরিতে অনুমতি দেওয়ায় এবং সেসব পেঁয়াজ টানা অনেক দিন ট্রাকে পড়ে থাকায় বেশিরভাগ পেঁয়াজ আড়তে আসার আগেই নষ্ট হয়ে গেছে। তা ছাড়া ভারত থেকে এবার তেমন ভালো মানের পেঁয়াজও আসছে না।
ক্যাবের কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন বলেন, অনেক আড়তদার ভারত থেকে পেঁয়াজ আসার পর সেগুলো মজুদ করেছেন। সেটার ফল এই পচা পেঁয়াজ। এখনো খাতুনগঞ্জে কেজি ৪০ টাকায় বিক্রি করছেন তারা। অথচ আমদানি পেঁয়াজ খরচসহ সর্বোচ্চ ৩০ টাকার বেশি হওয়ার কথা নয়। ব্যবসায়ীরা পচাবেন, তবু দাম কমাবেন না। এটাই দেখা যাচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।