জুমবাংলা ডেস্ক : ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পর আত্মগোপনে চলে গেছেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মাওলানা মুফতি রুহুল আমিন।
গত ৫ আগস্টের পর থেকে খতিব মুফতি মো.রুহুল আমিন নামাজ পড়াতে জাতীয় মসজিদে নামাজ পড়াতে যাচ্ছে না। কর্মস্থলে অনুপস্থিতির কোনো কারণও তিনি ইসলামিক ফাউন্ডেশনকে অবহিত করেননি।
গত ২৮ আগস্ট ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম ড. খালিদ হোসেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের এক অনুষ্ঠানে অতীতকে উদ্দেশ্য করে বলেন, তার উচিত স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করা।
খতিব রুহুল আমিন দায়িত্ব পালন করছেন না এবং পদত্যাগও করেননি। ফলে জাতীয় মসজিদের জুমার নামাজ পড়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়।
মাওলানা মো.রুহুল আমিন ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে চান। নৌকা প্রতীক নিয়ে এলাকায় পোস্টারও লাগান। কিন্ত নৌকা প্রতীক অন্য প্রার্থীকে দেয়া হয়। তিনি নির্বাচনী দৌঁড় থেকে সরে দাঁড়ান। পরবর্তীতে ২০১৮ সনের ৪ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শোকরানা মাহফিলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কওমি জননী উপাধি দেন। এ উপাধি দেয়ার কিছু দিন পর তিনি পুরষ্কারস্বরুপ বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিবের দায়িত্ব লাভ করেন।
এছাড়া কয়েকটি রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে সম্প্রতি বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ থেকে নৈতিক পদস্খলনকারী জালিম সরকারের পদলেহনকারী ইমামকে দ্রুত অপসারণের দাবি উঠেছিল।
এদিকে, নতুন খতিবের দায়িত্ব পেয়েছেন হাফেজ মাওলানা ড. মুফতি ওয়ালিয়ুর রহমান খান।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দার।
তিনি বলেন, বায়তুল মোকাররমের খতিব ৫ আগস্টের পর মসজিদে নামাজ পড়াতে আসছেন না। তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার পরও যোগদান করেননি। তাই নতুন একজনকে নামাজ পড়ানোর জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, হাফেজ মাওলানা ড. মুফতি ওয়ালিয়ুর রহমান খান বিগত দুই জুমাতেও খতিবের দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের মুহাদ্দিস (৫ম গ্রেড) পদে ১৮ বছর ধরে কর্মরত। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (কুষ্টিয়া) থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন তিনি।
ড. মুফতি ওয়ালিয়ুর রহমান খান বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকের সাবেক মহাসচিব ও আজীবন সহসভাপতি, ফরিদাবাদ জামিয়া ও দারুল উলুম মিরপুর-৬ মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এবং জামিয়া ইমদাদিয়ার সাবেক উপাধ্যক্ষ সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য হজরত মাওলানা আতাউর রহমান খানের দ্বিতীয় ছেলে।
তিনি হিফজুল কোরআন থেকে শুরু করে কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ স্তর দাওরায়ে হাদিস পর্যন্ত কিশোরগঞ্জের জামিয়া ইমদাদিয়াতে পড়াশোনা করেছেন। এ ছাড়া, ঢাকা নেসারিয়া কামিল মাদ্রাসা থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে কামিল পাস করেন। একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর (এমএ) ডিগ্রি নেন। দেশের অন্যতম শীর্ষ কওমি মাদ্রাসা রাজধানী ঢাকার জামিয়া হুসাইনিয়া আরজাবাদ মাদ্রাসা থেকে ইফতা (মুফতি) সনদ লাভ করেন।
সৌদি আরবের ৪৩তম বাদশাহ আবদুল আজিজ আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন ও তাফসির প্রতিযোগিতায় ড. মুফতি ওয়ালিয়ুর রহমান খান বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ছাড়া, ওআইসি যুব কেরাত প্রতিযোগিতার বিভিন্ন অধিবেশনে এবং জাতীয় শিশু-কিশোর কোরআন প্রতিযোগিতায় তিনি বিচারক হিসেবে সংশ্লিষ্ট সবার আস্থা অর্জন করেছেন।
এর আগে, তিনি মিশর, জর্দান, আলজেরিয়া ও সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত হিফজুল কোরআন ও বিভিন্ন সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।