আমাদের আদিপুরুষেরা কেন আকাশ নিয়ে মাথা ঘামিয়েছেন, কেন তাঁরা গতি নিয়ম আবিষ্কারের প্রয়াস করেছেন? এতে তাঁদের কী ফয়দা? এ নিরীক্ষা শুধু যে কাজের তা নয়, বরং অপরিহার্য। অনেক অনেক দিন আগে লোকে চাষ ও পশুপালন শুরু করে। কখন বসন্ত আসবে, কখন শুরু হবে গ্রীষ্ম, কখন দেখা দেবে বৃষ্টি, হেমন্ত—তা না জানলে চলতো না পশুপালকের ও চাষীর।
আর তাই সূর্যের ওপর নজর রাখতে আরম্ভ করলো মানুষ। বেশ ওপরে উঠেছে সূর্য, গরম লাগছে তার মানে শীত শেষ, উজ্জল উষ্ণ বসন্ত দিনের শুরু। সূর্যের গতিবিধি নিরীক্ষার যথেষ্ট কারণ ছিল প্রাচীন মিশর, চীন ও ভারতের লোকেদের। এ সব দেশে অনেক বড় নদী রয়েছে। কূল ছাপিয়ে তারা মাঠে রেখে যায় উর্বর পলি। নদী উপত্যকার বাসিন্দেদের সঠিক জানা দরকার ছিল কখন বন্যা আসবে। শুধু বীজ বপনের প্রস্তুতির জন্য নয়, বন্যার হাত থেকে জিনিসপত্র, পশু, এমনকি ঘরবাড়ি বাঁচানোর তাগিদেও।
সাধারণ লোকের পক্ষে, পশুপালক বা চাষীর পক্ষে এ নিরীক্ষা চালানো সম্ভব নয়; এ কাজের ভার ছিল পুরোহিতদের ওপর। তাই পুরোহিতরা হলো প্রথম জ্যোতির্বিজ্ঞানী। নক্ষত্রগুলোর গতি নজরে রেখে তারা বলতো কখন বন্যা নামবে, কখন সূর্য বা চন্দ্রগ্রহণ হবে। জ্যোতির্বিজ্ঞানে এই দখলের কারণে জনগণের ওপর জোর কর্তৃত্ব ছিল পুরোহিতদের। এতো ক্ষমতাবান তারা ছিল যে রাজারা পর্যন্ত তাদের মেনে চলত।
শুধু পশুপালক ও চাষী নয়, সমুদ্রে বা স্থলপথে দূরের যাত্রীরা নক্ষত্র নিয়ে মাথা ঘামাত। দিনের বেলায় তাদের পথ দেখাত সূর্য আর রাতে তারার আলো। জ্যোতির্বিজ্ঞানের দৌলতে প্রাচীন পৃথিবীর প্রথম মানচিত্র তৈরি করতে পারে পুরাকালের মানুষ। এমন কি এখনো এ বিজ্ঞানের ওপর নির্ভর করে সঠিক মানচিত্র। এটা বুঝতে কষ্ট হয় না যে মহাশূন্য বিজ্ঞানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আছে লোকিক প্রয়োজনের।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।