থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক গণিত প্রতিযোগিতা ওয়ার্ল্ড ম্যাথমেটিক্স ইনভাইটেশনাল ২০২৫–এ বাংলাদেশের চার শিক্ষার্থী পেয়েছে স্বর্ণপদক পুরস্কার। তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে ‘দ্য স্টার অব ওয়ার্ল্ড’ পুরস্কার পেয়েছে কুমিল্লা জিলা স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. তাহসিন ইসলাম। দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের প্রতিবেদন থেকে বিস্তারিত-
স্বর্ণপদক পাওয়া অন্য শিক্ষার্থীরা হলো—আনন্দনিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজের চতুর্থ শ্রেণির অর্ণব রঞ্জন পাল, গ্লেনরিচ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, সাতারকুলের পঞ্চম শ্রেণির আরিয় ইনতিশার চৌধুরী, এসএফএক্স গ্রিন হেরাল্ড স্কুলের সপ্তম শ্রেণির মারজানা মানহা।
জানা গেছে, থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে ২৫ থেকে ২৮ জুলাই পর্যন্ত আন্তর্জাতিক গণিত প্রতিযোগিতা ওয়ার্ল্ড ম্যাথমেটিক্স ইনভাইটেশনাল ২০২৫–এ (WMI-2025) অনুষ্ঠিত হয়। এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দল। বাংলাদেশ দলের নেতৃত্বে ও তত্ত্বাবধানে ছিলেন ‘বাংলার ম্যাথ’-এর সহপ্রতিষ্ঠাতা আশরাফুল আল শাকুর, মাহতাব হোসাইন ও আহমেদ শাহরিয়ার। দলের মিডিয়া পার্টনার ছিল দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস।
২২ শিক্ষার্থী নিয়ে গঠিত প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া দলের সবাই পদক জিতেছে। পদকগুলো হলো-চারটি স্বর্ণ, ছয়টি রৌপ্য, আটটি ব্রোঞ্জ এবং চারটি মেরিট সার্টিফিকেট।
রৌপ্যপদক পেয়েছে—মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুলের জাসিয়াহ রওজাত, সানিডেল স্কুলের রায়েদ ফারযাদ, হলি ক্রস গার্লস হাইস্কুলের আর্যশ্রেষ্ঠা ঘোষ, মিরপুর বাংলা স্কুল অ্যান্ড কলেজের মো. আব্দুল আল হাসিব, গ্লেনরিচ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের আয়্যান জামান এবং স্কলাস্টিকা স্কুলের ও লেভেল শিক্ষার্থী মো. রহিম হাসান।
ব্রোঞ্জপদক পেয়েছে—একাডেমিয়া স্কুলের ফাইজাহ্ নুমা, আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের রাজর্ষি সাহা, ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের রিশান আন নাফি, সানিডেল স্কুলের মুনতাহা মানহা, রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুলের আহবাব জুলকীফাল জাহিন, সানিডেল স্কুলের ইশাম ওয়াফিদুর রহমান, সেন্ট গ্রেগরি হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের সাদ বিন আহমেদ এবং রাজউক উত্তরা মডেল কলেজের নাহিয়ান পারিন ইফা।
মেরিট সার্টিফিকেট পেয়েছে—ব্রিটিশ স্ট্যান্ডার্ড স্কুলের গৈরিক পাল, হলি ক্রস গার্লস হাইস্কুলের মৃন্ময়ী ঘোষ, খুলনা কলেজিয়েট গার্লস স্কুলের শাওন্তিকা দাস মেঘা এবং বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজের দেওয়ান মো. সুনান।
সাফল্যের বিষয়ে বাংলাদেশ দলের কোচ আশরাফুল আল শাকুর বলেন, ‘গণিতে ভালো করতে হলে চর্চার কোন বিকল্প নেই। একই সাথে গণিতকে খেলাচ্ছলে শেখার একটা উপায় হচ্ছে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা, ঠিক যেমন আমরা বিভিন্ন খেলায় দল হিসেবে অংশগ্রহণ করি। একই সাথে বাংলাদেশকে জ্ঞান ও মেধার মঞ্চে সুন্দরভাবে উপস্থাপনের সুযোগ তৈরির জন্য আমাদের আরও কাজ করতে হবে।’
তিনি বলেন, বাংলার ম্যাথ সে উদ্দেশ্যে কাজ করে যাচ্ছে। যার ফলাফল হিসেবে বিগত এক বছরে আমরা বাংলাদেশের জন্য গণিতের মঞ্চে ১০ টি স্বর্ণপদক অর্জন করেছি। এটি বিশ্ব দরবারে আমাদের সুনাম তৈরি করছে। আমরা আশা রাখি বাংলাদেশ সরকার জ্ঞানভিত্তিক জাতি নির্মাণে এই সকল প্রতিযোগিতাকে আরো বেশি উৎসাহিত করবে।’
উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার জন্য বাংলাদেশ দল গঠনের লক্ষ্যে আয়োজন করা হয় বাংলার ম্যাথ এক্সিলেন্সি চ্যাম্পিয়নশিপ (BMEC) ২০২৫। এতে সারা দেশ থেকে অংশ নেয় ২ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী। অনলাইন বাছাইপর্ব শেষে ৩০ মে ঢাকার ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশে (IUB) অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় পর্ব। সেখানে প্রায় ৪০০ শিক্ষার্থী অংশ নেয়। শ্রেণিভিত্তিক চূড়ান্ত পরীক্ষার মাধ্যমে ১০০ বিজয়ী নির্বাচিত হয়, যাদের মধ্য থেকে গঠিত হয় এই ২২ সদস্যের জাতীয় গণিত দল।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।