যাদের সঙ্গে জীবন কাটাই, তাদের ক্ষমতা রয়েছে আমাদের সুখ, দুঃখ এবং বেড়ে ওঠার ওপর অনেক বেশি প্রভাব ফেলার। সুস্থ এবং সহায়ক সম্পর্ক গড়ে তোলা গুরুত্বপূর্ণ, যারা আমাদের জীবন এবং সামগ্রিক সুস্থতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে তাদের চিনতে পারা এবং তাদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখাও গুরুত্বপূর্ণ।
কিছু আচরণ এবং মনোভাব আমাদের শক্তি শুঁষে নেয়, অপ্রয়োজনীয় চাপ তৈরি করে এবং আমাদের অগ্রগতিতে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। এই ধরনের মানুষ খুঁজে বের করা এবং তাদের সঙ্গে বাউন্ডরি সেটা করা ইতিবাচক এবং পরিপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করতে সাহায্য করবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক নিজের মানসিক সুস্থতার জন্য কাদের থেকে নিজেকে দূরে রাখতে হবে-
১. ঈর্ষান্বিত
ঈর্ষান্বিত ব্যক্তিরা হলেন এমন মানুষ যারা আপনার সাফল্য বা সুখের প্রতি ঈর্ষান্বিত এবং কখনো কখনো আপনাকে ভেঙে ফেলার চেষ্টা করতে পারে। তাদের ঈর্ষা আপনার জন্য অসহযোগী পরিবেশ তৈরি করে। এমনকী তারা আপনার সাফল্যকে অবমূল্যায়ন করতে পারে এবং আপনার চারপাশে নেতিবাচকতা ছড়িয়ে দিতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে আত্মসম্মান বজায় রাখার জন্য সম্পর্কে সীমারেখা নির্ধারণ করা অপরিহার্য। ঈর্ষান্বিত ব্যক্তিদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখলে নিজের উন্নতির দিকে মনোনিবেশ করতে পারবেন।
২. অবিশ্বস্ত
অবিশ্বস্ত মানুষ সবসময় তার প্রতিশ্রুতি পালন করতে ব্যর্থ হয়। এর ফলে অনেক পরিকল্পনা ভেঙে যায় এবং ধীরে ধীরে যে বিশ্বাস তৈরি হয়েছিল তা নষ্ট হয়ে যায়। নির্ভরযোগ্য নয় এমন লোকদের সঙ্গে স্থিতিশীল সম্পর্ক বজায় রাখা সহজ নয়। তাদের অবিশ্বস্ততা হতাশ এবং সময় নষ্ট করতে পারে। অবিশ্বস্ত ব্যক্তিদের থেকে দূরত্ব বজায় রেখে আপনার সময় এবং শক্তি বিশ্বস্ত কারো জন্য ব্যয় করুন। বিশ্বাস যেকোনো সুস্থ সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যারা অনবরত এটি ভেঙে ফেলে তাদের থেকে নিজেকে দূরে রাখাটাই বুদ্ধিমানের কাজ।
৩. ড্রামালাভার
ড্রামালাভাররা বিশৃঙ্খলা এবং দ্বন্দ্বের খোরাক যোগায়। তারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শুধু মনোযোগ বা উত্তেজনা পেতে নাটক তৈরি করে। তারা অন্যের জীবনে অপ্রয়োজনীয় চাপ এবং দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করে এবং শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করে। তারা তর্ক, গসিপ তৈরি করতে পারে, অথবা উত্তেজনার অনুভূতি বজায় রাখার জন্য পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে তুলতে পারে। ড্রামালাভারদের থেকে দূরে থাকলে তা মানসিক সুস্থতা রক্ষা করতে সাহায্য করে।
৪. কৌশলী
কৌশলী ব্যক্তিরা নিয়মিতভাবে অন্যের ইচ্ছাকে কাজে লাগাতে বা প্রভাবিত করতে চায়, প্রায়ই মিথ্যা বলে বা ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করে। তাদের আচরণের ধরন তাদের ব্যক্তিত্ব এবং আত্মসম্মান নষ্ট করে। এটি খুব স্পষ্টভাবে চিহ্নিত করা উচিত এবং এ ধরনের মানুষকে জীবন থেকে দূরে রাখা উচিত। তাতে আপনার জীবনের মূল্যবান সময়গুলো আর নষ্ট হবে না।
৫. যারা অপ্রয়োজনীয়ভাবে অভিযোগ করে
এ ধরনের অভিযোগকারীদের সবসময় অভিযোগ করার মতো কিছু না কিছু থাকে; তারা ভালো সময়েও অভিযোগ খুঁজতে খুঁজতে ক্লান্ত হয় না। এটি আপনার চারপাশের পরিবেশকে অসহনীয় করে তুলতে পারে। সমাধান খোঁজার পরিবর্তে, তারা সমস্যা নিয়েই বেশি ব্যস্ত থাকে, যা তাদের আশেপাশের লোকেদের জন্য ক্লান্তিকর হতে পারে। এ ধরনের অভিযোগকারীদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখুন। এতে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখতে পারবেন এবং তাদের নেতিবাচকতার চক্রে জড়িত হওয়া এবং প্রভাবিত হওয়া এড়াতে পারেন।
৬. যারা নেতিবাচক কথা বলেন
এ ধরনের মানুষ নেতিবাচক দিকগুলোতেই সব সময় মনোনিবেশ করেন এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সমালোচনা করেন বা অন্যদের নিরুৎসাহিত করেন। তারা গ্লাসকে অর্ধেক খালি দেখতে পছন্দ করেন এবং ত্রুটি বা সম্ভাব্য ব্যর্থতাগুলো দ্রুত তুলে ধরতে শুরু করেন। তাদের বিষণ্ণ দৃষ্টিভঙ্গি সংক্রামক হতে পারে এবং আপনার সামগ্রিক মনোবল এবং প্রেরণা নষ্ট করতে পারে। যখন কেউ ক্রমাগত নেতিবাচকতায় ঘেরা থাকে তখন আশাবাদী হওয়া এবং চলাফেরা করা কঠিন। নেতিবাচক লোকদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখুন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।