জুমবাংলা ডেস্ক : উচ্চ আদালতের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম নিয়োগ পেয়েছেন আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসাবে। এক যুগ ধরে উচ্চ আদালতের বিচারপতি হিসাবে দায়িত্ব পালনের পর তাকে আপিল বিভাগের বিচারক হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নিয়োগের পরই তাকে শপথ পড়ান প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ছাড়াও হাইকোর্টের আরও দুই বিচারককে আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসাবে নিয়োগ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। ওই দুই বিচারক হলেন, বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী। নিয়োগের পর তাদেরকে বিকালে শপথ পড়ান প্রধান বিচারপতি। হাইকোর্টের বিচারপতি হিসাবে দায়িত্ব পালনকালে তিন বিচারক বহু গুরুত্বপূর্ণ মামলায় রায় প্রদান করেছেন।
এদিকে বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ১৯৫৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর নোয়াখালীর সেনবাগের কাবিলপুর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মরহুম মো. আব্দুল লতিফ ও মাতা মরহুম মোসাম্মাৎ মাসুদা খাতুন।
বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ১৯৭৭ সালে নোয়াখালীর সেনবাগ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সাথে এস.এস.সি এবং ১৯৭৯ সালে চৌমুহনী এস.এ. কলেজ থেকে এইচ.এস.সি পাশ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এল.এল.বি ও এম.কম (ব্যবস্থাপনা) ডিগ্রী নেন তিনি। তিনি ১৯৮৬ সালের ৩১ অক্টোবর ঢাকা জজ কোর্টের এবং ১৯৯১ সালের ৩১ ডিসেম্বর হাইকোর্টের আইনজীবী হিসাবে তালিকাভুক্ত হন। সুদীর্ঘ অভিজ্ঞতা অর্জনের মধ্য দিয়ে ২০১০ সালের ১৮ এপ্রিল হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসাবে নিয়োগ পান। দুই বছর পর ২০১২ সালের ১২ এপ্রিল স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন। তিনি ২০১২ সালের ২৯ আগস্ট থেকে ২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (বাংলাদেশ) এর একজন বিচারক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। সেখানে তিনিসহ অপর বিচারকদের নিয়ে গঠিত ট্রাইব্যুনাল অনেক মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গুরুত্বপূর্ণ রায় প্রদান করেন।
বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার (কোটালীপাড়ায় ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুতে রাখা) মামলা, ব্লগার রাজীব হত্যা মামলা, খুলনার রাকিব ও সিলেটের রাজন হত্যা মামলা এবং কনডেম প্রিজনার ঐশীসহ বহু গুরুত্বপূর্ণ মামলার ডেথ রেফারেন্সের রায় প্রদান করেন। তিনি সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ মামলার নিষ্পত্তি এবং বিকল্প বিরোধ পদ্ধতির মাধ্যমে মামলার নিষ্পত্তির পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। তিনি জেলখানায় সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের সুযোগ-সুবিধা এবং আইনি বিষয়ে সহযোগিতার লক্ষে ঢাকার কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগার এবং টঙ্গীর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্র, গাজীপুরের কোনাবাড়ির কিশোরী উন্নয়ন কেন্দ্র পরিদর্শন করেন।
বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ১৯৯৫ সালে দিল্লীতে অনুষ্ঠিত “সার্ক ল’ কনফারেন্স” এ বাংলাদেশের একজন ডেলিগেট হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। বিচারিক আদালতসহ উচ্চ আদালতে তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রাষ্ট্রপক্ষে একজন আইনজীবী ছিলেন। ২০১৫ সালে তিনি আর্জেন্টিনা এবং নেদারল্যান্ডস-এ অবস্থিত আইসিসি (ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট) সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম পরিদর্শন করেন এবং সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। তিনি সপরিবারে ২০১৪ সালে সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত হজ্জ্বব্রত পালন করেন। এছাড়াও তিনি ফ্রান্স, বেলজিয়াম, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, চীন, নেপাল, থাইল্যান্ড, শ্রীলংকা, ভারত, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ভূটান, মালদ্বীপ এবং মায়ানমার ভ্রমণ করেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।