Close Menu
Bangla news
    Facebook X (Twitter) Instagram
    Bangla news
    • প্রচ্ছদ
    • জাতীয়
    • অর্থনীতি
    • আন্তর্জাতিক
    • রাজনীতি
    • বিনোদন
    • খেলাধুলা
    • শিক্ষা
    • আরও
      • লাইফস্টাইল
      • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
      • বিভাগীয় সংবাদ
      • স্বাস্থ্য
      • অন্যরকম খবর
      • অপরাধ-দুর্নীতি
      • পজিটিভ বাংলাদেশ
      • আইন-আদালত
      • ট্র্যাভেল
      • প্রশ্ন ও উত্তর
      • প্রবাসী খবর
      • আজকের রাশিফল
      • মুক্তমত/ফিচার/সাক্ষাৎকার
      • ইতিহাস
      • ক্যাম্পাস
      • ক্যারিয়ার ভাবনা
      • Jobs
      • লাইফ হ্যাকস
      • জমিজমা সংক্রান্ত
    • English
    Bangla news
    Home আফগানিস্তানে দশকের পর দশক কেন যুদ্ধ চলছে?
    আন্তর্জাতিক

    আফগানিস্তানে দশকের পর দশক কেন যুদ্ধ চলছে?

    Mohammad Al AminAugust 11, 2021Updated:August 11, 202110 Mins Read
    Advertisement

    আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যে তালেবানকে ২০০১ সালে যুদ্ধের মাধ্যমে আফগানিস্তানের ক্ষমতা থেকে সরানো হয়েছিল, যাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে বিশ বছর ধরে যুদ্ধ চলেছে, সেই তালেবানের সঙ্গেই যুক্তরাষ্ট্র আবার সন্ধি করেছে। আর সেই পটভূমিতেই আফগানিস্তান থেকে বিদেশী সৈন্য প্রত্যাহার করা হচ্ছে। খবর বিবিসি বাংলার।

    আফগানিস্তানের এই যুদ্ধে হাজার হাজার মানুষের জীবন গেছে, লাখ লাখ মানুষ উদ্বাস্তু হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে করা চুক্তিতে তালেবান অবশ্য প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে, তারা আফগানিস্তানকে আর এমন কোন সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর ঘাঁটি হতে দেবে না, যারা পশ্চিমা দেশগুলোর জন্য হুমকি তৈরি করতে পারে।

    কিন্তু চুক্তির পর আফগানিস্তান থেকে বিদেশী সৈন্যরা বিদায় নেয়া শুরু করার পর থেকেই তালেবান খুব দ্রুত আফগানিস্তানের সরকারি বাহিনীকে হটিয়ে বিভিন্ন এলাকা দখল করা শুরু করে। অন্যদিকে আফগান সেনাবাহিনীকে এখন কাবুলে এক নাজুক সরকারকে রক্ষায় ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে।

    তালেবান আরও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে তারা একটি জাতীয় শান্তি আলোচনায় অংশ নেবে। কিন্তু অনেকের আশংকা, আফগানিস্তানে শান্তি দূরে থাক, দেশটি বরং এখন একটা চরম গৃহযুদ্ধের দিকেই যাচ্ছে।

    কিন্তু তা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সৈন্যদের পুরোপুরি প্রত্যাহারের জন্য একটা প্রতীকী তারিখ নির্ধারণ করে ফেলেছেন- সেটি হচ্ছে ১১ই সেপ্টেম্বর, ঠিক যে দিনটিতে বিশ বছর আগে আল কায়েদা যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছিল।

    জো বাইডেন হচ্ছেন চতুর্থ মার্কিন প্রেসিডেন্ট, যাকে আফগানিস্তানে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হয়েছে, যেটি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে চলা যুদ্ধ। এই যুদ্ধের পেছনে যুক্তরাষ্ট্র হাজার হাজার কোটি ডলার খরচ করেছে।

    যুক্তরাষ্ট্র কেন আফগানিস্তানে যুদ্ধ করেছে? এই যুদ্ধ এত দীর্ঘ হলো কেন?

    ২০০১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক এবং ওয়াশিংটনে যে সন্ত্রাসবাদী হামলা চালানো হয়, তাতে প্রায় তিন হাজার মানুষ নিহত হয়। এই হামলার জবাবে যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে যুদ্ধ শুরু করে। যুক্তরাষ্ট্র এই সন্ত্রাসবাদী হামলার জন্য দায়ী করেছিল জঙ্গি ইসলামী গোষ্ঠী আল কায়েদা এবং এর নেতা ওসামা বিন লাদেনকে।

    ওসামা বিন লাদেন তখন আফগানিস্তানে তালেবানের আশ্রয়ে ছিলেন। তালেবান ১৯৯৬ সালে আফগানিস্তানের ক্ষমতায় আসে।

    আফগানিস্তানের তালেবান সরকার যখন ওসামা বিন লাদেনকে হস্তান্তরে অস্বীকৃতি জানায়, তখন যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে সামরিক অভিযান চালায়। তারা বেশ দ্রুতই আফগানিস্তানের ক্ষমতা থেকে তালেবানকে অপসারণ করে। আফগানিস্তানে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং সেখান থেকে যেন আর কোন সন্ত্রাসবাদী হুমকি তৈরি না হয়, তা নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করে যুক্তরাষ্ট্র।

    কিন্তু আফগানিস্তানের তালেবান জঙ্গিরা পালিয়ে গিয়ে আবার নতুন করে সংগঠিত হয়।

    আফগানিস্তানের এই যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগ দিয়েছিল নেটো জোটের মিত্র দেশগুলো। তালেবানের পতনের পর ২০০৪ সালে সেখানে এক নতুন আফগান সরকার দায়িত্ব নেয়। কিন্তু তালেবানের সহিংস হামলা অব্যাহত থাকে।

    ২০০৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা আফগানিস্তানে মার্কিন সেনা সংখ্যা বাড়িয়ে তালেবানকে হটিয়ে দিতে সক্ষম হন। কিন্তু এই সাফল্য বেশিদিন ধরে রাখা যায়নি।

    ২০১৪ সাল ছিল আফগানিস্তানের লড়াইয়ে ২০০১ সালের পর সবচেয়ে রক্তাক্ত একটি বছর। নেটোর আন্তর্জাতিক বাহিনী সেবছর আফগানিস্তানে তাদের সম্মুখ লড়াইয়ের সমাপ্তি টানে। আফগানিস্তানের নিরাপত্তার দায়িত্ব ন্যস্ত হয় আফগান সেনাবাহিনীর হাতে।

    কিন্তু এটি যেন তালেবানকে সুযোগ করে দেয় আফগানিস্তানে নতুন করে বিভিন্ন এলাকা দখলের। তাদের মধ্যে নতুন শক্তি সঞ্চার হয়।

    যুক্তরাষ্ট্র এবং তালেবানের মধ্যে শান্তি আলোচনা শুরু হয়, তবে এই আলোচনায় আফগান সরকারের কোন ভূমিকাই ছিল না। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারীতে কাতারে একটা চুক্তি হয়, যার অধীনে যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান থেকে তাদের সৈন্য প্রত্যাহারে রাজী হয়।

    কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এবং তালেবানের মধ্যে এই চুক্তি সত্ত্বেও তালেবানের হামলা বন্ধ হয়নি। তালেবান এবার তাদের হামলার প্রধান লক্ষ্যবস্তু করে আফগান বাহিনী এবং বেসামরিক নাগরিকদের। তারা গুপ্তহত্যা শুরু করে। তালেবানের দখলে আসা এলাকা আরও সম্প্রসারিত হতে থাকে।

    আফগানিস্তানে বিশ বছরের লড়াই- কখন কী ঘটেছিল?

    শুরু হয়েছিল নাইন ইলেভেন দিয়ে, তারপর আফগানিস্তানের মাটিতে শুরু হলো তীব্র লড়াই। এখন সেখান থেকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনী পুরোপুরি প্রত্যাহার করে নেয়া হচ্ছে। আফগানিস্তানের সংঘাতে যা যা ঘটেছিল:

    ১১ই সেপ্টেম্বর, ২০০১: নাইন ইলেভেনের সন্ত্রাসী হামলা

    ওসামা বিন লাদেনের নেতৃত্বে আল কায়েদা আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে এযাবতকালের সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী হামলা চালায়। চারটি যাত্রীবাহী বিমান হাইজ্যাক করা হয়েছিল। এর মধ্যে দুটি নিউ ইয়র্কের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের টুইন টাওয়ারে আঘাত হানে, ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার ধসে পড়ে। আরেকটি আঘাত হানে ওয়াশিংটন ডিসির পেন্টাগনে। চতুর্থ বিমানটি পেনসিলভেনিয়ার এক মাঠে বিধ্বস্ত হয়। প্রায় তিন হাজার মানুষ মারা যায়।

    ৭ অক্টোবর, ২০০১: প্রথম বিমান হামলা

    যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পশ্চিমা জোট আফগানিস্তানে তালেবান এবং আল কায়েদার স্থাপনাগুলোতে বোমা হামলা শুরু করে। হামলা করা হয় কাবুল, কান্দাহার এবং জালালাবাদে। আফগানিস্তানে এক দশকব্যাপী সোভিয়েত দখলদারিত্বের অবসানের পর সেখানে যে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছিল, সেই যুদ্ধের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছিল তালেবান। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি সত্ত্বেও তালেবান ওসামা বিন লাদেনকে হস্তান্তর করতে অস্বীকৃতি জানায়। তাদের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং অল্প কটি যুদ্ধ বিমান ধ্বংস করে দেয়া হয়।

    ১৩ই নভেম্বর, ২০০১: কাবুলের পতন

    আফগানিস্তানের তালেবান বিরোধী একটি জোট, নর্দার্ন এলায়েন্স, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা জোটের সমর্থনে কাবুলে প্রবেশ করে। তালেবান কাবুল ছেড়ে পালিয়ে যায়। ২০০১ সালের ১৩ নভেম্বর নাগাদ সব তালেবান হয় পালিয়ে যায় অথবা তাদের নিষ্ক্রিয় করে দেয়া হয়। আফগানিস্তানের অন্যান্য শহরেরও পতন ঘটে দ্রুত।

    ২৬ জানুয়ারি, ২০০৪: নতুন সংবিধান

    আফগানিস্তানের সব জনগোষ্ঠীর নেতাদের নিয়ে লয়া জিরগা বা এক বিরাট জাতীয় সম্মেলনে বহু আলোচনার পর নতুন আফগান সংবিধান গৃহীত হয়। এই সংবিধানের অধীনেই ২০০৪ সালের অক্টোবরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়।

    ৭ই ডিসেম্বর, ২০০৪: হামিদ কারজাই প্রেসিডেন্ট হলেন

    আফগানিস্তানের পপালজাই দুররানি উপজাতির নেতা হামিদ কারজাই নতুন সংবিধানের অধীনে আফগানিস্তানের প্রথম প্রেসিডেন্ট হলেন। পাঁচ বছর মেয়াদ করে দুবার প্রেসিডেন্ট ছিলেন।

    মে, ২০০৬: হেলমান্দে ব্রিটিশ সেনা মোতায়েন

    আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলের হেলমান্দ প্রদেশে ব্রিটিশ সেনা মোতায়েন শুরু। হেলমান্দ তালেবানের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত। তাদের প্রাথমিক মিশন ছিল সেখানে পুর্নগঠন কাজে সাহায্য করা। কিন্তু শীঘ্রই তারা তালেবানের সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে জড়িয়ে যায়। আফগানিস্তানে এই লড়াইয়ে সাড়ে চারশোর বেশি ব্রিটিশ সেনা নিহত হয়।

    ১৭ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৯: ওবামার নতুন কৌশল

    যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ওবামা আফগানিস্তানে মার্কিন সেনা ব্যাপকভাবে বাড়ানোর এক নতুন কৌশল অনুমোদন করেন। এক পর্যায়ে আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা সংখ্যা দাঁড়ায় ১ লাখ ৪০ হাজার। ইরাক যুদ্ধের কৌশলের অনুকরণেই প্রেসিডেন্ট ওবামা এই পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।

    ২ মে, ২০১১: ওসামা বিন লাদেন নিহত

    পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদ শহরের এক বাড়িতে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ কমান্ডো বাহিনী নেভি সিলসের হামলায় আল কায়েদার নেতা ওসামা বিন লাদেন নিহত। বিন লাদেনের দেহ সেখান থেকে সরিয়ে সাগরে কবর দেয়া হয়। দশ বছর ধরে সিআইএ’র অনেক খোঁজাখুঁজির অবসান ঘটে এই অভিযানের মাধ্যমে। বিন লাদেন যে পাকিস্তানেই বসবাস করছিল তা নিশ্চিত হওয়ার পর এমন অভিযোগ জোরালো হয় যে সন্ত্রাসবাদ বিরোধী লড়াইয়ে পাকিস্তান আসলে কোন বিশ্বাসযোগ্য মিত্র নয়।

    ২৩ এপ্রিল, ২০১৩: মোল্লাহ ওমরের মৃত্যু

    তালেবানের প্রতিষ্ঠাতা মোল্লাহ ওমরের মৃত্যু। দুবছরেরও বেশি সময় তার মৃত্যুর খবর গোপন রাখা হয়েছিল। আফগান গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তানের করাচী শহরের এক হাসপাতালে শারীরিক অসুস্থতার কারণে মোল্লাহ ওমর মারা যান। পাকিস্তান অবশ্য মোল্লাহ ওমর তাদের দেশে থাকার কথা অস্বীকার করেছিল।

    ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৪: নেটোর যুদ্ধ মিশনের সমাপ্তি

    কাবুলে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নেটো আফগানিস্তানে তাদের সরাসরি লড়াইয়ের সমাপ্তি টানে। যুক্তরাষ্ট্রও তাদের হাজার হাজার সৈন্য প্রত্যাহার করা শুরু করে। যারা থেকে গিয়েছিল, তাদেরকে মূলত প্রশিক্ষণ এবং আফগান নিরাপত্তা বাহিনীকে সহায়তা দেয়ার কাজে লাগানো হয়।

    ২০১৫: তালেবানের পুনরুত্থান

    তালেবান একের পর এক আত্মঘাতী হামলা, গাড়ি বোমা হামলা এবং অন্যান্য হামলা চালাতে শুরু করে। কাবুলে পার্লামেন্ট ভবনে এবং কুন্দুজ শহরে হামলা চালায়। ইসলামিক স্টেট জঙ্গিরাও আফগানিস্তানে হামলা চালাতে শুরু করে।

    ২৫ জানুয়ারি, ২০১৯: মোট নিহত সৈন্য সংখ্যা ঘোষণা

    আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানি জানান, ২০১৪ সালে তিনি আফগানিস্তানের নেতা হওয়ার পর তার দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর ৪৫ হাজার সদস্য নিহত হয়েছে। আগে যা ধারণা করা হয়েছিল, এই সংখ্যা তার চেয়ে অনেক বেশি।

    ২৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২০: তালেবানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের চুক্তি

    কাতারের রাজধানী দোহায় যুক্তরাষ্ট্র এবং তালেবান আফগানিস্তানে ‘শান্তি ফিরিয়ে আনতে’ এক চুক্তিতে সই করে। তালেবান চুক্তি মেনে চললে যুক্তরাষ্ট্র এবং নেটো ১৪ মাসের মধ্যে সব সৈন্য প্রত্যাহারে রাজি হয়।

    ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১: সৈন্য প্রত্যাহারের শেষ সময়সীমা

    নাইন ইলেভেনের হামলার ঠিক বিশ বছর পর ২০২১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের সব সৈন্য আফগানিস্তান থেকে প্রত্যাহার করে নেয়ার কথা। এমন জোরালো ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে এই আনুষ্ঠানিক শেষ সময়সীমার বেশ আগেই আসলে সব সৈন্য প্রত্যাহার করে নেয়া হবে।

    তালেবান কারা

    আফগানিস্তান থেকে ১৯৮৯ সালে সোভিয়েত সৈন্য প্রত্যাহারের পর যে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়, সেই যুদ্ধের মধ্য থেকেই তালেবানের উত্থান। মূলত আফগানিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এবং পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতেই ছিল তাদের প্রাধান্য।

    তালেবান আফগানিস্তানে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই এবং নিরাপত্তা ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। তবে তারা একই সঙ্গে আফগানিস্তানে কঠোর ইসলামী অনুশাসনও চালু করে।

    ১৯৯৮ সাল নাগাদ তালেবান আফগানিস্তানের প্রায় পুরোটাই নিয়ন্ত্রণ করছিল।

    তালেবান তাদের কঠোর ইসলামী শরিয়া শাসন চালু করে এবং নিষ্ঠুর শাস্তির প্রচলন করে। পুরুষদের দাড়ি রাখতে এবং মেয়েদের আপামস্তক মোড়া বোরখা পরতে বাধ্য করা হয়। টিভি, সঙ্গীত এবং সিনেমা নিষিদ্ধ করা হয়।

    আফগানিস্তানের ক্ষমতা থেকে উৎখাত হওয়ার পর তারা পাকিস্তানের সীমান্ত এলাকায় নতুন করে সংগঠিত হয়।

    তালেবানের প্রায় ৮৫ হাজার পূর্ণকালীন যোদ্ধা আছে বলে মনে করা হয়। ২০০১ সালের পর তারা এখন সবচেয়ে শক্তিশালী অবস্থায় আছে।

    এই যুদ্ধের কী মূল্য দিতে হয়েছে

    এই যুদ্ধে কত মানুষের প্রাণ গেছে, তা সঠিকভাবে নিরূপন করা কঠিন। পশ্চিমা নেটো জোটের কত সৈন্য মারা গেছে, অনেক ভালোভাবে তার হিসেব রাখা হয়েছে। কিন্তু তালেবান কিংবা আফগান বেসামরিক মানুষের মৃত্যুর হিসেব সেভাবে রাখা হয়নি।

    ব্রাউন ইউনিভার্সিটির গবেষণায় অনুমান করা হয়েছে যে, আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর ৬৯ হাজার সৈন্য এই যুদ্ধে নিহত হয়েছে। অন্যদিকে আফগান বেসামরিক মানুষ মারা গেছে ৫১ হাজার। নিহত হয়েছে প্রায় একই সংখ্যক জঙ্গি।

    ২০০১ সালের পর হতে নেটোর নেতৃত্বাধীন জোটের সাড়ে তিন হাজারের বেশি সৈন্য নিহত হয়েছে। এদের দুই তৃতীয়াংশই মার্কিন সেনা। বিশ হাজারের বেশি মার্কিন সেনা এই যুদ্ধে আহত হয়েছে।

    জাতিসংঘের হিসেবে, আফগানিস্তানের যে পরিমান মানুষ উদ্বাস্তু হয়েছে, তা বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ।

    ২০১২ সাল হতে এ পর্যন্ত প্রায় ৫০ লাখ মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে এবং আর ফিরে যেতে পারেনি। এরা হয় নিজ দেশেরই অন্য কোন অঞ্চলে থাকছে অথবা প্রতিবেশী দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে।

    ব্রাউন ইউনিভার্সিটির এই গবেষণায় আফগান যুদ্ধের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের কী পরিমাণ অর্থ খরচ হয়েছে, তার হিসেবও দেয়া হয়েছে।

    যুদ্ধ, সামরিক সহায়তা, পুনর্বাসন এবং পুনর্গঠন- সব মিলিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ২০২০ সাল পর্যন্ত খরচ করেছে ৯৭৮ বিলিয়ন ডলার ( ৯৭ হাজার ৮শ কোটি ডলার)।

    এরপর কী ঘটতে পারে

    যে প্রশ্নটা সবার আগে আসে, তা হলো, তালেবান কী আবার আফগানিস্তানের ক্ষমতায় ফিরে আসবে?

    প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেছেন, তার বিশ্বাস জঙ্গিরা কাবুলের সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাবে না।

    কিন্তু গত জুন মাসেই যুক্তরাষ্ট্রের এক গোয়েন্দা সংস্থার পর্যালোচনায় বলা হয়েছিল, বিদেশি সৈন্য চলে যাওয়ার ছয় মাসের মধ্যেই কাবুলের সরকার পড়ে যেতে পারে।

    বিবিসি এবং অন্য কিছু প্রতিষ্ঠানের গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, আগস্ট মাস নাগাদ তালেবান এখন প্রায় অর্ধেক আফগানিস্তান নিয়ন্ত্রণ করছে।

    জঙ্গিরা যতটা এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে বলে দাবি করে, তা আফগান সরকার মানতে চায় না। কয়েকটি নগরীতে তীব্র লড়াই অব্যাহত আছে। এর মধ্যে কয়েকটির দখল জঙ্গিদের হাতে।

    যুক্তরাষ্ট্র বলেছিল, তারা সাড়ে ছয়শো হতে এক হাজার সৈন্য রেখে দেবে মার্কিন দূতাবাস, কাবুল বিমান বন্দর এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি স্থাপনা পাহারা দেয়ার জন্য। তালেবান বলেছে, যদি কোন মার্কিন সেনা আফগানিস্তানে থেকে যায়, তাহলে তাদেরকে টার্গেট করা হবে।

    আফগানিস্তান নিয়ে আরেকটি আশংকা হচ্ছে, দেশটি আবারও সন্ত্রাসবাদীদের লালন ক্ষেত্র হয়ে উঠতে পারে।

    তালেবান নেতারা বলেছেন, তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে করা চুক্তি পুরোপুরি মেনে চলবেন এবং আফগানিস্তানের মাটিকে যুক্তরাষ্ট্র অথবা তাদের মিত্র কোন দেশের বিরুদ্ধে হামলার জন্য ব্যবহার করতে দেবেন না।

    কিন্তু অনেক বিশ্লেষক বলছেন, তালেবান এবং আল কায়েদাকে আসলে আলাদা করা যায় না। কারণ আল কায়েদার যোদ্ধারা তালেবানের মধ্যে ঢুকে পড়েছে এবং তাদের প্রশিক্ষণে কাজে জড়িত। এটাও মনে রাখা দরকার যে, তালেবান কোন ঐক্যবদ্ধ এবং কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত শক্তি নয়। কিছু তালেবান নেতা হয়তো পশ্চিমা দেশগুলোকে ঘাঁটাতে চান না, কিন্তু কট্টরপন্থীরা আল কায়েদার সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ছিন্ন করতে রাজী নাও হতে পারে।

    আর আল কায়েদা এখন কতটা শক্তিশালী এবং তারা আবার তাদের বিশ্বব্যাপী নেটওয়ার্ক তৈরি করতে পারবে কিনা- সেটাও স্পষ্ট নয়।

    এরপর আছে ইসলামিক স্টেট গ্রুপের আঞ্চলিক শাখা- আইএসকেপি (খোরাসান প্রদেশ)- যাদের সঙ্গে তালেবানের দ্বন্দ্ব আছে।

    আল কায়েদার মতোই এই আইএসকেপিকে যুক্তরাষ্ট্র এবং নেটো প্রায় ধ্বংস করে ফেলেছে, কিন্তু বিদেশী সৈন্য চলে আসার পর এরা নতুন করে সংগঠিত হতে পারে।

    এই গ্রুপটির সদস্য সংখ্যা হয়তো কয়েকশো হতে দু হাজার পর্যন্ত হতে পারে। কিন্তু গ্রুপটি কাযাখস্তান, কিরগিজস্তান এবং তাজিকিস্তানের কিছু এলাকায় তাদের ভিত্তি তৈরির চেষ্টা করতে পারে। এট তখন এক গুরুতর আঞ্চলিক মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াবে।

    জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।
    Related Posts
    Khamini

    সংঘাতের পর প্রথমবার জনসম্মুখে এলেন খামেনি

    July 6, 2025
    ট্রাম্প

    ইরানের তুলনায় রাশিয়ায় আমি আরও কঠোর : ট্রাম্প

    July 6, 2025
    যুক্তরাষ্ট্রে নতুন দল

    যুক্তরাষ্ট্রে নতুন দল: ট্রাম্প বিরোধী মাস্কের উদ্যোগ

    July 6, 2025
    সর্বশেষ খবর
    সাংবাদিক মাহমুদুর রহমানের মা

    সাংবাদিক মাহমুদুর রহমানের মা মারা গেছেন

    সাকিব

    বড় সুখবর পেলেন সাকিব

    ওয়েব সিরিজ

    রোমান্সে ভরপুর উল্লুর নতুন এই ওয়েব সিরিজ, ভুলেও কারও সামনে দেখবেন না

    Bomi

    বারবার বমি হচ্ছে? জেনে নিন যে কঠিন রোগের লক্ষণ এটি

    Jahangir

    মালয়েশিয়া থেকে ফেরত পাঠানো কেউ জঙ্গি নয় : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

    ঝড়ের আভাস

    সন্ধ্যার মধ্যে ৬ অঞ্চলে ঝড়ের আভাস

    ওয়েব সিরিজ

    নিয়ন্ত্রণ হারাবেন এই সাহসী ওয়েব সিরিজ দেখলে, ঘরের দরজা বন্ধ করে উপভোগ করুন

    Taka

    ব্যাংকে যেভাবে খুব সহজেই আপনার টাকা দ্বিগুণ করে নিতে পারবেন!

    Khamini

    সংঘাতের পর প্রথমবার জনসম্মুখে এলেন খামেনি

    ওয়েব সিরিজ

    নেট দুনিয়া কাঁপাচ্ছে উল্লুর নতুন ওয়েব সিরিজ রিলিজ, নতুন শুরু, নতুন রোমাঞ্চ

    • About Us
    • Contact Us
    • Career
    • Advertise
    • DMCA
    • Privacy Policy
    © 2025 ZoomBangla News - Powered by ZoomBangla

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.