আন্তর্জাতিক ডেস্ক: তালেবানের কাবুল অভিযানের খবরেই বেড়ে গেছে বোরকা বিক্রি। কারণ, আগের তালেবান শাসনের সময় বোরকা পরা ছিল বাধ্যতামূলক। ২০০১ সালে মার্কিন অভিযানে তালেবান সরকারের পতন হয়। এরপর আফগান নারীদের বাধ্যতামূলক বোরকা পরার বিষয়টি উঠিয়ে দেয়া হয়।
দোকানিরা দ্য গার্ডিয়ানকে জানান, এত দিন রাজধানীর আশপাশের নারীরা দলে দলে বোরকা কিনেছেন। এখন কাবুলের নারীরা বোরকা কিনছেন। ক্রেতারা জানাচ্ছেন, যে বোরকা কিছুদিন আগেও ২০০ আফগানি মুদ্রায় বিক্রি হচ্ছিল, তা এখন ২ থেকে ৩ হাজার আফগান মুদ্রায় বিক্রি হচ্ছে। আয়লা নামের এক নারী জানান, কাবুলে নারীদের মধ্যে ভয় যেমন বেড়েছে, রোবকার দামও তেমন বেড়েছে।
নীল রঙের বোরকা দিয়ে বিশ্বে আফগান নারীদের চিহ্নিত করা হয়। কিছুটা ভারী কাপড়ে তৈরি এই বোরকা মাথা থেকে পা পর্যন্ত সম্পূর্ণ ঢেকে রাখে। চোখের সামনে থাকে নেটের কাপড়। এখন আফগানিস্তানে বোরকার বিক্রি এতটা বেড়ে গেছে যে দোকানে যেভাবে সারি সারি বোরকা ঝুলিয়ে রাখা হচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে, সেখানে ভারী পর্দা লাগানো হয়েছে।
গতকাল রোববার কাবুল দখলের পর তালেবান মুখপাত্র বলেন, নারীরা ঘরের বাইরে যেতে পারবে। কাজ ও শিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবে। তবে ইতিমধ্যে তালেবান নিয়ন্ত্রণে থাকা কয়েকটি প্রদেশে চাকরিজীবী নারীদের চাকরি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। কিছু জায়গায় নারীদের বোরকা পরতে বাধ্য করা হয়েছে, এমন খবরও পাওয়া গেছে। গত সপ্তাহে হেরাত শহর তালেবান বাহিনীর দখলে যাওয়ার পর অনেক বয়স্ক নারীই পরিবারের ছোট মেয়েদের জন্য বোরকা কিনতে বের হন।
বহু আগে থেকেই আফগানি বোরকা বিশ্বে ঐতিহ্যবাহী। বলা হয়ে থাকে আফগান নারীদের পরিচয় বহন করে আসছে এ বোরকা। মুসলিম অধ্যুষিত বিশ্বের বহু দেশে ওই বোরকার আদলে বোরকা পাওয়া যায়।
ঐতিহ্যবাহী এই বোরকা অধিকাংশ সময় নীল রঙের হয়ে থাকে। ভারী কাপড়ে বানানো এই বোরকা এমন ভাবে নকশা করা হয় যেন পরিধানকারীর পা থেকে মাথা পর্যন্ত ঢাকা থাকে। বোরকার চোখের কাছে থাকে পাতলা জালের মতো কাপড়, যা দিয়ে পরিধানকারীরা বাইরের দৃশ্য দেখতে পান, কিন্তু বাইরের কেউ পরিধানকারীকে দেখতে পাবেন না।
১৯৯০ এর দশকে তালেবান সরকার যখন ক্ষমতায় আসে তখন কড়াকড়িভাবে এ ধরনের বোরকা পরে মেয়েদের বাইরে বের হওয়ার নির্দেশনা জারি করা হয়। কেউ এই নির্দেশ না মানলে তালেবানের নৈতিক পুলিশের হাতে জনসম্মুখে বেত্রাঘাতের মতো নির্মম শাস্তি পেতে হতো।
২০০১ সালে তালেবানের পতনের পর ধর্মীয় ও ঐতিহ্যগত কারণে অনেকে অনেকেই বোরকা পরা অব্যাহত রাখলেও পরে আবার বহু নারীই বোরকাকে প্রত্যাখ্যান করেছিল।
তবে চলতি বছরে আফগানিস্তান থেকে বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের পর দেশটির একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ শহর তালেবান নিয়ন্ত্রণে নিলে পরিস্থিতি বদলে যায়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



