আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আগামী দুই মাসের মধ্যে আফগানিস্তানে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি অর্ধেকে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। খবর ওয়াশিংটন পোস্ট’র।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগন সূত্রের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিদেশের মাটিতে মার্কিন সেনাদের যুদ্ধ বন্ধে নিজের অঙ্গীকারের প্রতি অনড় রয়েছেন ট্রাম্প। মূলত সেই অঙ্গীকার থেকেই এমন সিদ্ধান্ত। তবে সমালোচকরা বলছেন, এভাবে সেনা প্রত্যাহারের ফলে আসলে লাভবান হবে তালেবান।
আফগানিস্তানের পাশাপাশি ইরাক থেকেও মার্কিন সামরিক উপস্থিতি কমিয়ে আনা হবে। দেশটিতে মার্কিন বাহিনী অবস্থান করছে মূলত আইএসবিরোধী লড়াইয়ের অংশ হিসেবে। পেন্টাগন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইরাক থেকেও সেনা কমানো হলেও সেটা আফগানিস্তানের মতো ব্যাপক আকারে হবে না। সেখান থেকে অপেক্ষাকৃত কম সংখ্যক সেনা প্রত্যাহার করা হবে।
প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে মার্কিন বার্তা সংস্থা এপি জানিয়েছে, আগামী মধ্য জানুয়ারি নাগাদ এসব সেনা প্রত্যাহার সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। আগে থেকেই ট্রাম্প বলে আসছেন, এ বছরের বড় দিনের আগেই বিদেশের মাটি থেকে মার্কিন সেনাদের দেশে ফিরিয়ে নিতে চান তিনি।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দীর্ঘদিন থেকেই মার্কিন বাহিনীর সামরিক হস্তক্ষেপকে খুবই ব্যয়বহুল এবং অকার্যকর বলে সমালোচনা করে আসছেন। গত সেপ্টেম্বরে ইরাক থেকে এবং তারও আগে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু করে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। তবে আগামী বছরের ১৫ জানুয়ারির মধ্যে দেশ দুটি থেকে আরও বেশি সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়ার পরিকল্পনার কথা ইতোমধ্যে সামরিক বাহিনীর নেতাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এপি জানিয়েছে, আফগানিস্তানে মার্কিন সেনার সংখ্যা পাঁচ হাজার থেকে কমিয়ে দুই হাজার পাঁচশ’ করা হবে আর ইরাকে তিন হাজার থেকে কমিয়ে দুই হাজার পাঁচশ’ করা হবে। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত নির্বাহী আদেশ জারি করা হলেও তা সেনা কমান্ডারদের কাছে পাঠানো হয়নি।
গত সেপ্টেম্বরে মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগন জানায়, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ইরাক থেকে এক তৃতীয়াংশ সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। দেশটিতে থাকা সেনা সংখ্যা ৫ হাজার দুইশ’ থেকে কমিয়ে তিন হাজার করা হবে বলে তখন জানানো হয়। ওই সময়ে মধ্যপ্রাচ্যের শীর্ষ মার্কিন সেনা কমান্ডার জেনারেল কেন্নেথ ম্যাকেঞ্জি জানান ইরাকে থেকে যাওয়া সেনা সদস্যরা জঙ্গি গোষ্ঠী আইএস’র চূড়ান্ত অবশেষ নির্মূলে ইরাকের নিরাপত্তা বাহিনীকে পরামর্শ ও সহায়তা দেওয়া অব্যাহত রাখবে।
উল্লেখ্য, ২০০৩ সালে প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হুসেনকে উৎখাত ও ব্যাপক বিধ্বংসী অস্ত্র ধ্বংসের কথা বলে ইরাকে আগ্রাসন চালায় যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট। তবে সাদ্দাম হুসেনকে উৎখাত সম্ভব হলেও দেশটিতে ব্যাপক বিধ্বংসী অস্ত্রের কোনও হদিস মেলেনি।
অপরদিকে মার্কিন বাহিনী ২০০১ সাল থেকেই আফগানিস্তানে রয়েছে। ওই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর টুইন টাওয়ারে হামলার কয়েক সপ্তাহের মধ্যে জঙ্গি গোষ্ঠী আল কায়েদা নির্মূলে দেশটিতে অভিযান শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। আল কায়েদাকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে আফগানিস্তান থেকে তালেবান সরকার উৎখাত করা হয়। তবে তালেবানরা আবারও সংগঠিত হয়ে ২০১৮ সাল নাগাদ দেশটির দুই-তৃতীয়াংশের বেশি এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম হয়। এই বছরের ফেব্রুয়ারিতে গোষ্ঠীটির সঙ্গে স্বাক্ষরিত এক শান্তি চুক্তি অনুযায়ী আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।