তরুণ ক্রিকেটার আফিফ হোসেন ধ্রুবর দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ভর করে জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজে শুভসূচনা করেছে বাংলাদেশ। টপ অর্ডার ও মিডল অর্ডার ব্যর্থ হলেও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে সঙ্গে নিয়ে আফিফ দলকে এনে দেন ৩ উইকেটের রোমাঞ্চকর জয়।
১৮ ওভারের ম্যাচে ১৪৫ রানের লক্ষ্যে খেলতে নামা বাংলাদেশ লিটন দাসের ব্যাটে চড়ে দারুণ শুরুর ইঙ্গিত দিচ্ছিল। তবে দলীয় ২৬ রানে লিটন সাজঘরে ফেরেন ১৯ রান (১৪ বল) করে।
এরপর সৌম্য সরকার (৭ বলে ৪), সাকিব আল হাসান (৩ বলে ১), মুশফিকুর রহিম (গোল্ডেন ডাক), মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (১৬ বলে ১৪) ও সাব্বির রহমানের (১৫ বলে ১৫) উইকেট হারিয়ে ভীষণ চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ।
তবে সেই চাপ শক্ত হাতে সামাল দেন আফিফ ও মোসাদ্দেক। সপ্তম উইকেটে দুজনে গড়ে তোলেন ৮২ রানের জুটি, যা দলকে জয়ের কাছাকাছি পৌঁছে দেয়।
বাংলাদেশের পক্ষে দ্বিতীয় দ্রুততম অর্ধ-শতকের কীর্তি গড়ে আফিফ ৫০ রান পূর্ণ করেন মাত্র ২৪ বলে। তবে আফিফ অর্ধ-শতকের পরপরই আউট হন। তার আগে ২৬ বলের মোকাবেলায় ৮টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে করেন ৫২ রান।
শেষপর্যন্ত দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন ২৪ বলে ৩০ রান করা মোসাদ্দেক ও ২ রানে অপরাজিত মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। টাইগাররা জয় পায় ২ বল ও ৩ উইকেট হাতে রেখেই।জিম্বাবুয়ের পক্ষে কাইল জার্ভিস, টেন্ডাই চাতারা ও নেভিলে মাদজিভা দুটি করে উইকেট শিকার করেন।
এটি ছিল আফিফেরে টি২০ ক্যারিয়ারে ২ইয় ম্যাচ।আর এই ম্যাচেই আফিফের ব্যাটে ভর করে ২৬ বলের মোকাবেলায় ৮টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে করেন ৫২ রান ২০০ স্ট্রাইক রেটে, ডাবল সেঞ্চুরির স্ট্রাইক রেটে ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংস খেলেন আফিফ।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ১৮ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৪৪ রান সংগ্রহ করে জিম্বাবুয়ে। জিম্বাবুয়ে শুরুতেই ধাক্কা খায়। দলীয় ৭ রানের দলটি হারায় অভিজ্ঞ ব্রেন্ডন টেলরকে। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম বলেই তাইজুল ইসলাম ফেরান তাকে। এরপর অধিনায়ক হ্যামিল্টন মাসাকাদজা একপ্রান্ত আগলে রাখলেও অপর প্রান্তে ক্রেইগ আরভিন, সিন উইলিয়ামস ও টিমিসেন মারুমা থিতু হতে পারেননি।
তবে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন রায়ান বার্ল। প্রথমে দেখেশুনে খেললেও ১৫তম ওভারে চড়াও হন সাকিবের উপর। সাকিবও যে রক্ত-মাংসের মানুষ সেটিই যেন প্রমাণ করতে নেমেছিলেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। এক ওভারে তিনটি ছক্কা ও তিনটি চার হাঁকিয়ে সংগ্রহ করেন ৩০ রান, পূর্ণ করেন অর্ধ-শতক। টিনোটেন্ডা মুতমবদজি শুরুতে ধীর গতিতে খেললেও একপর্যায়ে চড়াও হন তিনিও।
মাঝখানে ফ্লাডলাইট বিভ্রাটে কিছুক্ষণ বন্ধ থাকে খেলা। তবে আলোক-সমস্যা দূর হওয়ার পর ইনিংসের শেষ ওভার মাঠে গড়ায়। নির্ধারিত ১৮ ওভার শেষে জিম্বাবুইয়ানদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৪৪ রান। বার্ল ৩২ বলের মোকাবেলায় ৫টি চার ও ৪টি ছক্কা হাঁকিয়ে ৫৭ রান করে অপরাজিত থাকেন। এছাড়া মাসাকাদজা ২৬ বলে ৩৪ এবং মুতমবদজি ২৬ বলে অপরাজিত ২৭ রান করেন।
বাংলাদেশের পক্ষে একটি করে উইকেট শিকার করেন তাইজুল ইসলাম, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মুস্তাফিজুর রহমান ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। ৪ ওভার বল করে উইকেটশূন্য থেকে সাকিব এদিন খরচ করেন ৪৯ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
টস: বাংলাদেশ
জিম্বাবুয়ে ১৪৪/৫ (১৮ ওভার)
বার্ল ৫৭*, মাসাকাদজা ৩৪, মুতমবদজি ২৭*
মোসাদ্দেক ১০/১, তাইজুল ২৬/১, সাইফউদ্দিন ২৬/১, মুস্তাফিজ ৩১/১
বাংলাদেশ ১৪৮/৭ (১৭.৪ ওভার)
আফিফ ৫২, মোসাদ্দেক ৩০*, লিটন ১৯
মাদজিভা ২৫/২ জার্ভিস ৩১/২, চাতারা ৩২/২
ফল: বাংলাদেশ ৩ উইকেটে জয়ী।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।