জুমবাংলা ডেস্ক : বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। এ ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশে।আবরারের এই নির্মম হত্যাকে নিয়ে আবেগঘন পোষ্ট করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। তার পোষ্টটি হুবহু পাঠকের জন্য তুলে দেয়া হল-
‘মোল্লা’ সাহেবের হাতের রান্না আমার ব্যবসায়ীক অফিসে যখন বসতাম মন্ত্রী হবার আগে, চারঘাট-বাঘার হাজারো মানুষ খেয়েছে। তিনি চলে গেছেন আজ ভোর তিন টায়। ২০০৫ সালে নিজে হজ্জ করার পরে ওনার অনুরোধে ওনাকে প্রথম হজ্জ্ব করতে পাঠিয়েছিলাম।ফিরোজ ভাই একজন সফল ব্যবসায়ী। দিল্লিতে ফুসফুস প্রতিস্থাপন করার পরে প্রায় সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন। দুইদিন আগে হঠাৎ করে ইনফেকশন হয়ে ইন্তেকাল করলেন। মরদেহ আনতে একটু জটিলতা একদিন বিলম্ব। আজকে বাদ আসর জানাজা, আরেকটি মৃত্যুর কারণে যেতে পারিনি।
আনোয়ার চাচার কণ্ঠ ছিলো শুনতে থাকার মতো। পাড়ার চাচা হলেও বড় ভাইয়ের মতো, চাচীর সাথে। আশির দশকে রাজশাহী বেতার আর আমাদেরকে ক্রিকেটে অনুপ্রেরণা দেয়া ছিলো তার মূল কাজ। তার দুই ছেলেই ক্রিকেট অনেকদূর গিয়েছে। অনেকদিন ধরে ঢাকায়। আজকে হঠাৎ করে চলে গেলেন। আমার দুলাভাই। আফতাবউদ্দিন। ১৯৭১ এ দেরাদূন থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে সেনা কর্মকর্তা। জীবনে প্রথম আমার গাড়িতে চলা তার সাথে লালমনিরহাটে।
১৯৮৭ সালে যেবার আমার স্বপ্নের সমাপ্তি হতে চলেছিলো সেবার এসে ঢাকায় বাংলাদেশ ব্যাংক কলোনির ওনার বাসাতেই আমার প্রথম ঠাই। কোচিং করতাম কলাবাগানে বুয়েটের ভর্তির জন্য। দুলাভাইয়ের আব্বার মৃত্যুর সময় আমি তার শয্যা পাশে, সম্ভব ১৯৮৮ সালে। আজকে দুলাভাইও চলে গেলেন। আমার সাথে দেখা করতে চেয়েছিলেন আমি বাইরে যাবার আগে। আমি পারিনি। বুয়েটের আবরারকে আমি দেখিনি কখনও। ঢাকা মেডিকেলে ভর্তিরও যোগ্যতা অর্জন করেছিলো।
ঠিক যেমনটি পেয়েছিলো আমার দুই অত্যন্ত মেধাবী বন্ধু মাসুদ ও আতাউল ১৯৮৭ সালে। আবরারও হয়ে উঠতে পারতো তাদের মতই সফল অথবা তাদের চেয়েও বড় কেউ। অন্যান্যরা ইন্তেকাল করেছেন অনেকটা পরিণত বয়েসেই, কিন্তু আবরারতো আমার সন্তানের বয়সী। হত্যাকারীরা অসময়ে সমাপ্ত করে দিয়েছে তার এগিয়ে চলা। কঠিন এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই তাদের। আর চাই সকলের সহনশীলতা। আল্লাহতালা রাব্বুল আলামীনের কাছে দোয়া করি তিনি যেন সবাইকে জান্নাতুল ফিরদাউস নসীব করেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।