চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শাখা ছাত্রশিবিরের বর্তমান সোহরাওয়ার্দী হলের সভাপতি হয়েছেন আবরার ফারাবী। তিনি এক সময় নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন
। নিজেও সে তথ্য সংবাদমাধ্যমে স্বীকার করেছেন।আবরার ফারাবী বলেন, ২০২২ সালের জুনের ১৭ তারিখ পর্যন্ত আমি ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। পরে ২০২৩ সালে ছাত্রলীগের সবধরনের রাজনীতি থেকে বের হয়ে এসে আমি ছাত্রশিবিরে যুক্ত হই। এরপর আর আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে অবস্থান করিনি। ছাত্রশিবিরে যুক্ত হয়ে মানোন্নয়ন করি। পরবর্তীতে সদস্য হয়ে ছাত্রশিবিরের দায়িত্বে যাই। এরপর যখন জুলাই বিপ্লব শুরু হয়, তখন থেকেই আমি মূলত আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হই এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন নামে যে একটি গ্রুপ রয়েছে, সেটা আমিই ওপেন করি।
তিনি বলেন, আমি ছাত্রলীগ করেছি, সেটা অস্বীকার করছি না কিন্তু ২০২২ সালের জুনের পর থেকে ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম না।
চবি শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, আবরার ফারাবীর বিরুদ্ধে এখন যে বিষয়গুলো নিয়ে আসা হয়েছে, সবগুলো ২০২১-২২ সালের পোস্ট। তখন তিনি ছাত্রলীগে যুক্ত ছিলেন। এরপর তিনি ইসলামী ছাত্রশিবিরের সঙ্গে যুক্ত হয়ে সংগঠনের নিয়ম অনুযায়ী মানোন্নয়ন করেন এবং দায়িত্বশীল পর্যায়ে আসেন। ব্যাপারটা এমন না যে, তিনি আগস্ট-পরবর্তী সময় থেকে ছাত্রশিবিরের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন, বরং আগস্টের আগে ২০২৪ সাল থেকে সোহরাওয়ার্দী হল শাখার দায়িত্ব পালন করছেন। পরে এ বছর জানুয়ারি থেকে তাকে সোহরাওয়ার্দী হল শাখার সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়।
নতুন দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে ছাত্রলীগ থাকাকালীন সময়ে জামাত-শিবির নিয়ে তার বেশকিছু পোস্টের স্ক্রিনশট ভাইরাল হয়েছে। এতে বিভিন্ন মহলে সমালোচনা শুরু হয়। এ নিয়ে নেটিজেনদের মধ্যে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।
সম্প্রতি ২০২১ সালের ২৯ ডিসেম্বর ও ২০২২ সালের ১৪ নভেম্বরের দুইটি পোস্টসহ বেশকিছু ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ‘এন ইউ আবরার ফারাবী’ নামের সেই ফেসবুক আইডিতে জামায়াত-শিবিরকে নিয়ে আপত্তিকর পোস্টও করেছিলেন তিনি।
এই ফেসবুক আইডিতে নিষিদ্ধ সংগঠন শাখা ছাত্রলীগের তৎকালীন সহ-সভাপতি ও বগি ভিত্তিক উপগ্রুপ ভার্সিটি এক্সপ্রেস (ভিএক্স)-এর নেতা প্রদীপ চক্রবর্তী দুর্জয়ের সঙ্গে প্রিয় ভাই‘ লিখা একটি পোস্ট রয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ. জ. ম. নাছির উদ্দিন ও শেখ হাসিনার জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতেও দেখা যায় তাকে।
২০২১ সালের ২৯ ডিসেম্বরের এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ২০০১ সালের ২৯ ডিসেম্বর খুনী জামায়াত-শিবিরের হাতে নির্মমভাবে নিহত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি জনপ্রিয় ছাত্রনেতা শহীদ আলী মরতুজা চৌধুরী ভাইয়ের ২০তম মৃত্যুবার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি। দল টানা ক্ষমতায় থাকার পরও দুঃসময়ে জীবন দেওয়া একজন জনপ্রিয় ছাত্রনেতার নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচার এখনো না পাওয়াটা অত্যন্ত বেদনাদায়ক।
সাত বিয়ে করা কুষ্টিয়ার সেই রবিজুল মানব পাচার মামলায় গ্রেপ্তার
২০২২ সালের ১৪ নভেম্বর এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের দুঃসময়ের ত্যাগী নেতা ড. রবিউল হাসান স্যার। শিবিরের মিথ্যা মামলা কাঁধে নিয়ে জেল খেটেছেন দীর্ঘদিন। শিবিরের মিনি ক্যান্টনমেন্টে প্রগতির পতাকা উড়ানোর জন্য উনারা জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছেন। ছাত্রলীগ করার অপরাধে যৌবনে ওনার জীবনের অনেকগুলো বসন্ত হারিয়েছেন। আজ যখন দেখি ওনার মত ত্যাগী মানুষের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলে, তখন কষ্ট লাগে। এজন্য কি ওনারা শিবিরের সঙ্গে যুদ্ধ করেছিলেন। মনে রাখবেন রবিউল হাসান ভুইয়া স্যাররা আমাদের সম্পদ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।