জুমবাংলা ডেস্ক: পেশায় একজন ভ্যানচালক হলেও বাবা আতিকুল ইসলাম স্বপ্ন দেখতেন ছেলে আকাশ ইঞ্জিনিয়ার হয়ে সংসারের হাল ধরবে। বাবা-মার সেই স্বপ্ন এখন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। পাঁচ সদস্যের অভাবের সংসারে ভ্যান চালিয়ে কোনো মতে সংসারে খেয়ে না খেয়ে ছেলের লেখাপড়ার খরচ যোগাতেন আতিকুল। বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় গ্রেফতার হয়েছে আকাশ। বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের ছাত্র সে। বাড়ি জয়পুরহাট সদর উপজেলার দোগাছী ইউনিয়নের দোগাছী গ্রামে। তিন ভাইবোনের মধ্যে বড়ো আকাশ।
আকাশ দোগাছী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৪ সালে এসএসসি ও জয়পুরহাট সরকারি কলেজ থেকে ২০১৬ সালে এইচএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগে প্রাইভেটপড়া ছাড়াই জিপিএ-৫ নিয়ে পাশ করে। ভ্যানচালক বাবা ও মার ছেলেকে উচ্চশিক্ষা দেওয়ার আশা বেড়ে যায়। ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে আকাশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট ও ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেলে স্থানীয়রা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার ইচ্ছায় সে ভর্তি হয় বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগে।
বুয়েটের দাতব্য সংগঠন ‘মানুষ মানুষের জন্য’ থেকে সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে ও টিউশনি করে লেখাপড়া করছিল আকাশ। নিয়তির নির্মম পরিহাস আকাশ বর্তমানে আবরার হত্যা মামলায় এজাহার নামীয় আসামি।
দৈনিক ইত্তেফাকের আজকের সংখ্যায় প্রকাশিত জয়পুরহাট প্রতিনিধির করা একটি প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে।
‘আকাশ খারাপ হতে পারে না’—কান্নাজড়িত কণ্ঠে মা নাজমা বেগম এমন দাবি করে বলেন, ‘কোথায় কি হলো জানি না, আমাদের সব স্বপ্ন ভেঙে শেষ হয়ে গেল।’ দোষী হলে শাস্তি হোক, আর নির্দোষ হলে তাকে তাড়াতাড়ি ছেড়ে দেওয়ার আকুতি জানান তিনি।
ছেলে ছাত্রলীগ করে এটি জানতেন না বাবা। অভাবের সংসার হওয়ায় তাকে রাজনীতিতে জড়াতে নিষেধ করেছিলেন। সে কথা শুনলে আজ তার কপালে এমনটি হতো না বলে জানান ভাগ্যহত আতিকুল।
প্রতিবেশী দোগাছী গ্রামের মারুফা, বকুল হোসেন ও আফজাল হোসেন বলেন, ‘আকাশের মতো ছেলে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকতে পারে তা বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে আমাদের।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।