আবারো উত্তাল বঙ্গোপসাগর, বন্ধ হয়ে গেল ইলিশ ধরা
জুমবাংলা ডেস্ক: ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে সাগরে জাল ফেলতেই একের পর এক দুর্যোগ হানা দেয় জেলেদের ওপর। চার ট্রিপে কোনো ইলিশই ধরতে পারেননি জেলেরা। পঞ্চম ট্রিপে এসে দেখা মেলে ইলিশের। কিন্তু এরই মধ্যে আবারও দুর্যোগের ঘনঘটা।
লঘুচাপের প্রভাবে গত শুক্রবার থেকে উত্তাল হয়ে ওঠে বঙ্গোপসাগর। সেই বরাবরের মতোই সাগর ছাড়তে বাধ্য হন জেলেরা। প্রবল ঢেউয়ে টিকতে না পেরে সমস্ত ফিশিং ট্রলার ফিরে আসে কূলে।
বন বিভাগ ও মৎস্য সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে সুন্দরবন ও উপকূলের বিভিন্ন নদী-খালে শত শত ট্রলার নিরাপদ আশ্রয়ে রয়েছে। আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময় টানা এক সপ্তাহ ধরে বৈরী আবহাওয়া সাগরে ট্রলারডুবির ঘটনায় বহু জেলে মারা যান। মর্মান্তিক সেই ঘটনার অভিজ্ঞতা থেকে এবার জেলেরা দুর্যোগের আগাম সংকেত পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সাগর ছেড়ে নিরাপদে চলে আসেন। যার ফলে এবারের দুর্যোগে এ পর্যন্ত কোনো ট্রলারডুবি বা জেলের প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি।
শরণখোলা ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি মো. আবুল হোসেন জানান, ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার পর কোনো মালিক, আড়তদার লাভের মুখ দেখেননি। একেকটি ট্রলারে দুই-তিন লাখ টাকা খরচ করে সাগরে নামার সঙ্গে সঙ্গেই দুর্যোগ শুরু হয়। চার দফা দুর্যোগে সাগরে ঠিকমতো জাল ফেলতে পারেননি জেলেরা। প্রত্যেকেই লোকসানে আছেন। পঞ্চমবার সাগরে নেমে বেশ ইলিশ ধরা পড়ছিল জালে। কিন্তু এবারও সেই একই অবস্থা।
আবুল হোসেন আরো জানান, এবারের ট্রিপে প্রত্যেক জেলের জালেই প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ে। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ার কারণে ট্রিপের মাঝপথে সাগর থেকে উঠে আসতে হয়েছে তারা। তার পরও শরণখোলার তিন শতাধিক ফিশিং ট্রলারের প্রতিটিই ইলিশ বোঝাই করে ঘাটে ফিরেছে। ঘাটে ফিরে আসা একেকটি ট্রলার সর্বনিম্ন পাঁচ লাখ টাকা থেকে ১২ লাখ টাকা পর্যন্ত ইলিশ বিক্রি করেছে। ট্রিপের পুরো সময় সাগরে জাল ফেলতে পারলে পেছনের সমস্ত লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারতেন জেলে-মহাজনরা।
বাংলাদেশ ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সহসভাপতি এম সাইফুল ইসলাম খোকন বলেন, ‘এবার জেলেরা সতর্ক ছিলেন। তাই দুর্যোগ শুরু হওয়ার আগেই সাগর ছেড়ে কূলে ফিরে আসায় কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। শরণখোলার সমস্ত ট্রলার ঘাটে ফিরেছে। অন্যান্য এলাকার ট্রলারগুলো পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের দুবলা, কচিখালী, ছোট ভেদাখালী, বড় ভেদাখালী এলাকার বিভিন্ন খালে আশ্রয় নিয়েছে। এই ট্রিপটি ঠিকমতো দিতে পারলে আমরা লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারতাম। ’
পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের দুবলা জেলেপল্লী টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দিলিপ কুমার মজুমদার বলেন, ‘লঘুচাপের প্রভাবে স্বাভাবিকের চেয়ে তিন থেকে চার ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। সাগরের বড় বড় ঢেউ আছড়ে পড়ছে দুবলার চরসহ সুন্দরবনে। ঝোড়ো বাতাসের সঙ্গে বৃষ্টি হচ্ছে। দুবলা অফিসের আশপাশের খালে অসংখ্য ট্রলার আশ্রয় নিয়েছে। আমরা সেসব ট্রলারের জেলেদের খোঁজখবর রাখছি। ’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।