জুমবাংলা ডেস্ক: আবারও বেড়েছে রডের দাম। গত দুই-তিন দিনের ব্যবধানে নির্মাণ খাতের প্রধান এ সামগ্রীর দাম বেড়েছে প্রতি টনে ১ থেকে দেড় হাজার টাকা। উৎপাদনকারীরা বলছেন, ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় কাঁচামাল আমদানিতে খরচ বেশি হচ্ছে। অন্যদিকে দেশে গ্যাস-বিদ্যুতের সরবরাহে ঘাটতি থাকার কারণেও উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এসব কারণে রডের দাম বেড়েছে।
রড উৎপাদনকারীদের তথ্য মতে, বাজারে বর্তমানে তিন ধরনের এমএস রড পাওয়া যায়। এর মধ্যে সবচেয়ে ভালো মানের হলো অটো কারখানাগুলোতে তৈরি ৭৫ গ্রেড (৫০০ টিএমটি) রড। এ ধরনের রডই বেচাকেনা হয় বেশি। এ ছাড়া রয়েছে সেমি-অটো কারখানাগুলোতে তৈরি ৬০ গ্রেড (৫০০ ওয়াট) এবং সাধারণ বা ৪০ গ্রেডের রড।
মাস দুয়েক আগে একবার বেড়েছিল রডের দাম। ধাপে ধাপে বেড়ে তখন বিএসআরএম ব্র্যান্ডের প্রতি টন রডের দাম দাঁড়ায় ৯০ থেকে ৯১ হাজার টাকা। কেএসআরএম ও বায়েজিদ স্টিলের রড বিক্রি হয় ৮৯ থেকে ৯০ হাজার টাকায়। এ ছাড়া রানী ও বন্দর স্টিল ব্র্যান্ডের রড বিক্রি হয় ৮৫ থেকে ৮৬ হাজার টাকা দরে।
এবার আরেক দফা বাড়ল পণ্যটির দাম। তিন দিন আগে খুচরা পর্যায়ে বিএসআরএম ব্র্যান্ডের প্রতি টন রডের দাম ছিল ৯১ হাজার থেকে ৯১ হাজার ৫০০ টাকা। গতকাল বিক্রি হয়েছে প্রতি টন ৯২ হাজার থেকে ৯২ হাজার ৫০০ টাকায়। কেএসআরএম, একেএস, জিপিএইচ ইস্পাত, বায়েজিদ স্টিল ব্র্যান্ডের রড তিন দিন আগে বিক্রি হয়েছে ৮৯ হাজার ৫০০ থেকে ৯০০ হাজার টাকায়। দাম বেড়ে এখন হয়েছে ৯১ হাজার থেকে ৯১ হাজার ৫০০ টাকা।
একইভাবে রানী ও বন্দর স্টিল ব্র্যান্ডের রডের টনে দেড় থেকে ২ হাজার টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৮৭ থেকে ৮৮ হাজার টাকা দরে। সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাব মতে, রডের দাম গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এখন গড়ে ১২ শতাংশ বেশি।
জানা গেছে, প্রায় সব কোম্পানির রডের দামই বেড়েছে। তবে শীর্ষ পর্যায়ের একটি কোম্পানি দাম সরাসরি না বাড়িয়ে অন্য কৌশলে হাঁটছে। তারা বিক্রির লক্ষ্যমাত্রার ওপর ডিলারদের দামে যে ছাড় দিত, তা বন্ধ করে দিয়েছে। এ কারণে ডিলাররাও তাদের ব্যবসা পুষিয়ে নিতে বিশেষ ছাড়ের ওই পরিমাণ মুনাফা মূল দামের সঙ্গে যোগ করে বিক্রি করছে। এর ফলে ওই কোম্পানির রডের দাম মিলগেটে না বাড়ালেও খুচরা পর্যায়ে বেড়েছে।
এ ব্যাপারে রাজধানীর ডেমরা এলাকার খান ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী উজ্জ্বল খান বলেন, দুই দিনে সব ধরনের রডের দাম বেড়েছে গড়ে ২ হাজার টাকা। ঢাকার ইংলিশ রোড আয়রন অ্যান্ড স্টিল মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম রেজা বলেন, কিছু কোম্পানির রডের দাম প্রতি টনে বেড়েছে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা। উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা তাদের জানিয়েছেন, ডলার সংকটে তাঁরা রডের কাঁচামাল আমদানি করতে পারছেন না। উৎপাদনও হচ্ছে কম। এ কারণে দাম বাড়ছে।
উৎপাদনকারীরা জানান, রড উৎপাদনের প্রধান কাঁচামাল হলো রডের টুকরো। এই কাঁচামালের প্রায় ৮০ শতাংশই আমদানি করা হয় আমেরিকা ও ইউরোপের কয়েকটি দেশ থেকে। বাকি ২০ শতাংশ আসে দেশীয় জাহাজ ভাঙা স্ট্ক্র্যাপ থেকে। কিন্তু চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় উন্নত দেশগুলো এখন আর জাহাজ ভাঙাতে চায় না। ফলে দেশে জাহাজ ভাঙার স্ট্ক্র্যাপের পরিমাণও কমেছে।
দেশের শীর্ষ রড উৎপাদনকারী একটি কোম্পানির একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, একে তো ডলারের দাম বেড়েছে, অন্যদিকে এখন ডলারের সংকটও রয়েছে। এ কারণে কাঁচামাল আমদানি করা যাচ্ছে না। তাছাড়া গ্যাস-বিদ্যুতের সরবরাহে সমস্যা আছে। এসব কারণে তাঁদের উৎপাদন খরচ বেড়েছে।
দেশে বাড়ছে কক্সবাজারের সুপারির কদর, যাচ্ছে ইংল্যান্ড, কানাডা, সৌদি আরব সহ বিভিন্ন দেশে
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।