জুমবাংলা ডেস্ক : কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি বাড়লেও মসলা জাতীয় পণ্যের বাজারে ঊর্ধ্বগতি। বাজারে জিরাসহ মসলা জাতীয় সব পণ্যের দামই বেড়ে গেছে।
পবিত্র ঈদুল আজহার বাকি দুই সপ্তাহের কিছু বেশি সময়। এতে হিলি বাজারে প্রতিটা মসলার দোকানেই বেড়েছে বেচাবিক্রি। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মসলার দোকানগুলোতে ভিড় জমাচ্ছেন ক্রেতারা। তবে ঈদের আগেই হঠাৎ মসলা জাতীয় পণ্যের দাম বাড়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা।
তাদের দাবি, কোরবানির বাকি এখনও প্রায় তিন সপ্তাহ। এর মধ্যেই ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে ফেলেছেন, যা নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে ক্রেতাদের।
তবে বিক্রেতারা বলছেন, আমদানিকারকরা দাম বাড়ানোয় বেশি দামে কিনতে হচ্ছে মসলা। ফলে তাদেরকেও তুলনামূলক বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে এসব পণ্য।
মসলা বিক্রেতা ইমরান বলেন, হিলি বাজারে যেসব মসলা বিক্রি হচ্ছে, তার অধিকাংশই ভারত থেকে আমদানি করা। হিলি স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিনই জিরাসহ অন্যান্য মসলা আমদানি হচ্ছে। আগে প্রতিদিন দুই-তিন ট্রাক মসলা আমদানি হলেও কোরবানি উপলক্ষে এখন হচ্ছে ৮ থেকে ১০ ট্রাক।
আরেক মসলা ব্যবসায়ী বলেন, একমাস আগেও জিরা বিক্রি হয়েছে ৫৮০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা কেজিতে। তবে এখন বিক্রি করতে হচ্ছে ৭০০ টাকার ওপরে। একইভাবে ছোট এলাচ, দারচিনি, লবঙ্গসহ অন্যান্য মসলার দাম বেড়েছে। এর পেছনে আমদানিকারকদের যথেষ্ট হাত রয়েছে।
এদিকে, আমদানি বাড়ার পরও কেন দাম বাড়ছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে আমদানিকারকদের প্রতিনিধি আলমগীর হোসেন বলেন, দেশে কোনো পণ্যের চাহিদা বাড়লে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা সেই পণ্যটির বুকিং রেট বাড়িয়ে দেয়। এইবারও মসলার চাহিদা বেড়েছে, তাই তারাও দামও বাড়িয়ে দিয়েছে। বেশি দামে আমদানি করার কারণেই বেশি দামে মসলা বিক্রি করতে হচ্ছে। তাছাড়া ডলারের দামের ঊর্ধ্বমুখী প্রভাব তো রয়েছেই।
মসলার দাম বাড়ার কারণ হিসেবে তিনি আরও জানান, আমদানি করা জিরা ও এলাচসহ অন্যান্য মসলা আসছে ভারতের রাজস্থান ও গুজরাট থেকে। প্রতিকেজি জিরায় শুল্ক দিতে হচ্ছে ২৩৫ টাকা। আর এলাচের শুল্ক প্রতি কেজিতে প্রায় ৩০০ টাকা।
হিলির স্থানীয় বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি জিরা ৭০০ থেকে ৭৩০ টাকা, কালো এলাচ ২ হাজার ৭০০ থেকে ৩ হাজার টাকা, মাঝারি সাদা এলাচ ৩ হাজার ৫০০ টাকা ও বড় সাদা এলাচ ৪ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ একমাস আগেও এসব পণ্য যথাক্রমে বিক্রি হয়েছে ৫৭০ থেকে ৫৮০ টাকা, ২ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার ৯০০ টাকা, ৩ হাজার ৪০০ টাকা ও ৪ হাজার ১০০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া এক মাসের ব্যবধানে দারুচিনি, লং, গোল মরিচ, ধনিয়া ও কালোজিরা কেজিতে ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন প্রতাব মল্লিক বলেন, ঈদকে সামনে রেখে মসলা জাতীয় পণ্যের আমদানি তুলনামূলক বেড়েছে। আমদানি করা এসব পণ্য বন্দরে শেডে রাখার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই বন্দরে ভারতীয় ট্রাকে মসলা জাতীয় পণ্য ঢুকছে এবং বন্দর থেকে তা দেশের বিভিন্ন স্থানে চলে যাচ্ছে।
হিলি কাস্টমসের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৮ মে পর্যন্ত ভারতীয় ৭০৮ ট্রাকে ১২ হাজার ৯৪০ মেট্রিক টন জিরা, ২১ ট্রাকে ১৫৪ মেট্রিক টন ছোট এলাচ, ৯৮ ট্রাকে ২ হাজার ৯৬৩ মেট্রিক টন মৌরি, ৫০ ট্রাকে ১ হাজার ৪২২ মেট্রিক টন মেথি এবং ২৬০ ট্রাকে আদা আমদানি হয়েছে ৪ হাজার ৩৯৭ মেট্রিক টন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।