Close Menu
Bangla news
    Facebook X (Twitter) Instagram
    Bangla news
    • প্রচ্ছদ
    • জাতীয়
    • অর্থনীতি
    • আন্তর্জাতিক
    • রাজনীতি
    • বিনোদন
    • খেলাধুলা
    • শিক্ষা
    • আরও
      • লাইফস্টাইল
      • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
      • বিভাগীয় সংবাদ
      • স্বাস্থ্য
      • অন্যরকম খবর
      • অপরাধ-দুর্নীতি
      • পজিটিভ বাংলাদেশ
      • আইন-আদালত
      • ট্র্যাভেল
      • প্রশ্ন ও উত্তর
      • প্রবাসী খবর
      • আজকের রাশিফল
      • মুক্তমত/ফিচার/সাক্ষাৎকার
      • ইতিহাস
      • ক্যাম্পাস
      • ক্যারিয়ার ভাবনা
      • Jobs
      • লাইফ হ্যাকস
      • জমিজমা সংক্রান্ত
    • English
    Bangla news
    Home আমরা কখনোই অভ্যুত্থানে গুম হওয়া লাশের সংখ্যা জানতে পারবো না : নুসরাত তাবাসসুম
    জাতীয় ডেস্ক
    মুক্তমত/ফিচার/সাক্ষাৎকার

    আমরা কখনোই অভ্যুত্থানে গুম হওয়া লাশের সংখ্যা জানতে পারবো না : নুসরাত তাবাসসুম

    জাতীয় ডেস্কSoumo SakibJuly 10, 202513 Mins Read
    Advertisement

    গণঅভ্যুত্থানে যাদের অংশগ্রহণ আন্দোলনের স্পিরিটকে বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছিল, তারা হলেন আমাদের সাহসী নারীযোদ্ধারা। সম্মুখ সারিতে ঢাল হয়ে থেকে পুরো আন্দোলনে তারা যুগিয়েছেন অনুপ্রেরণা, ছিনিয়ে এনেছেন চূড়ান্ত বিজয়। জুলাই গণ-আন্দোলনের সেই বিপ্লবী নারীদের অগ্রভাগে ছিলেন নুসরাত তাবাসসুম। জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে বাসসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারটি এখানে হুবহু তুলে ধরা হলো-

    আমরা কখনোই অভ্যুত্থানেনুসরাত তাবাসসুম জ্যোতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী। খুলনা বিভাগের কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার মাধুরাপুর ইউনিয়নের বাগুয়ান গ্রামের মেয়ে নুসরাত। বাগুয়ান গ্রামেরই বাগুয়ান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাগুয়ান কে.সি.ভি.এন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ড. মো. ফজলুল হক গার্লস ডিগ্রি কলেজে পড়াশোনা করেন তিনি। কলেজ পর্যন্ত বিতর্ক, ক্রাফটিং, আবৃত্তি আর থিয়েটারের সাথে যুক্ত ছিলেন। বাবা-মা দুজনেই শিক্ষক। পুরো পরিবার রাজনীতির সাথে যুক্ত থাকায় কট্টর বাম থেকে কট্টর ডান সব ধরনের রাজনীতি দেখে তিনি বড় হয়েছেন।

    ২০১৮ সালের জুলাই মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য কোচিং করতে নুসরাত তাবাসসুম ঢাকায় আসেন। ঢাকার পরিস্থিতি তখন খুব উত্তপ্ত। তৎকালীন কোটা আন্দোলনের নেতারা তখন জেলে। সে বছর তিনি ঢাকা ভার্সিটিতে ভর্তি হন। তার প্রথম অ্যাক্টিভিজম শুরু হয় ২০১৮ সালে নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। ২০১৯ সালে কোটা আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে তার রাজনৈতিক জীবনের পদযাত্রা শুরু। একই সালে সাত কলেজ অধিভুক্তি বাতিলকরণ আন্দোলন, আবরার ফাহাদের হত্যাকাণ্ডের পর সেটার বিচার দাবির আন্দোলনেও তিনি যুক্ত ছিলেন। প্রথমবারের মত রাজনৈতিকভাবে পদ-পদবী গ্রহণ করেন ২০২১ সালের ১৭ই মার্চ, ছাত্র অধিকার পরিষদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নাট্য বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে। একই মাসে তিনি ভারতীয় আগ্রাসন বিরোধী আন্দোলনের সাথেও যুক্ত হন। এছাড়াও বিভিন্ন সময় ক্যাম্পাসগুলোতে ঘটে যাওয়া ছাত্রলীগের অন্যায় ও অবিচারের প্রতিবাদে পুরোটা সময় তিনি রাজপথে ছিলেন। ২০২৩ সালে ছাত্র অধিকার পরিষদ থেকে পদত্যাগের পর গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির সাথে যুক্ত হন। তিনি ছাত্রশক্তির প্রতিষ্ঠাকালীন কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব ছিলেন। ২০২৪ সালের জুনের ৬ তারিখেই কোটা বিরোধী আন্দোলনে যুক্ত হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরির সামনে থেকে। সেখান থেকে রাজু ভাস্কর্য, অতঃপর জুলাই আন্দোলন। বর্তমানে তিনি জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

    জুলাই আন্দোলনের পুরোটা সময় জুড়ে সম্মুখ সারিতে থেকে সোচ্চার ছিলেন নুসরাত তাবাসসুম। মেয়েদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে উজ্জীবিত করা, হামলা থেকে আন্দোলনকারীদের বাঁচাতে বিভিন্ন পয়েন্ট অবরুদ্ধ করে ঢাল হয়ে দাঁড়ানো, নিজে হামলার শিকার হয়েও লড়াকু সৈনিকের মত আন্দোলন চালিয়ে নেওয়া, এমনকি ডিবি অফিসে তুলে নিয়ে যাওয়া একমাত্র নারী নুসরাত তাবাসসুম অকুতোভয়ে লড়ে গেছেন আন্দোলনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত। জুলাই আন্দোলনে তাবাসসুমের সেই স্মৃতিচারণের কথা উঠে এসেছে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে (বাসস) দেওয়া তার একান্ত সাক্ষাৎকারে।

    প্রশ্ন : জুলাই আন্দোলনের প্রথম দিকে নারীদেরকে কীভাবে সংগঠিত করলেন?

    নুসরাত তাবাসসুম : সত্যি কথা বলতে আলাদা করে নারীদের সংগঠিত করা লাগেনি। ধীরে ধীরে আন্দোলন এগিয়েছে। ধীরে ধীরে দেশের নাগরিকরা একতাবদ্ধ হতে শুরু করে। ঠিক যেভাবে ছেলেরা একতাবদ্ধ হচ্ছিল, একই ভাবে নারীরাও একতাবদ্ধ হচ্ছিল। আলাদা করে নারীদেরকে আকর্ষণ করে আন্দোলনে ডেকে আনার জন্য কিছু করতে হয়নি।

    প্রশ্ন : ১৪ জুলাই শেখ হাসিনা আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকার’ বলার পর ঐ রাতেই এত অল্প সময়ের মধ্যে কীভাবে মেয়েরা প্রতিরোধ গড়ে তুললো?

    নুসরাত তাবাসসুম : আসলে কিছু মোমেন্টাম ছিল পুরো আন্দোলন জুড়ে। ১৪ জুলাই শামসুন্নাহার হলের মেয়েরা দরজা ভেঙ্গে বের হয়ে এসেছিল। শামসুন্নাহার হলের একটা লিগ্যাসি বরাবরই ছিল। আমরা যখন ঐদিন স্মারক লিপি জমা দেই রাষ্ট্রপতির কাছে, সেখান থেকে এসে পরবর্তী দিনের কর্ম পরিকল্পনা করে যে যার হলে ফিরেছি, সময়টা সম্ভবত দশটা পাঁচ কি ছয় হবে। তখন হলে এসে আমি ইন্টারনেট অন করে দেখি যে, ছেলেদের হলে রাজাকার, রাজাকার স্লোগান দেওয়া হয়েছে আর ছাত্রলীগের ছেলেরা কোটা বিরোধী শিক্ষার্থীদের অবরুদ্ধ করে রেখেছে। হয়তো রাতের বেলা বিদ্যুৎ বন্ধ করে তাদের ওপরে হামলা করা হতে পারে। যখন এই নিউজটা আমি পাই। আমি নাহিদ ইসলাম ভাইকে নক করি। ভাইকে বলি যে, ‘ভাই এই তো অবস্থা। এখন কি করবেন? আপনি যদি বলেন, আমি মেয়েদের নিয়ে বের হতে পারি।’ তখন ভাই বলেছে, ‘দেখো যদি বের হতে পারো, বের হও।’ অদ্ভুত করার মতো যে বিষয়টা ছিল তা হলো, সব মিলিয়ে আমাদের বের হতে পনের মিনিট সময় লাগেনি। আমাদের মেয়েদের একটা গ্রুপ ছিল। সেখানে প্রস্তাবনা উঠানোর সাথে সাথেই অলমোস্ট সবগুলো হল তৈরি হয়ে যায় যে, তারা বের হতে পারবে।

    ১৪ তারিখে আমাদের হলের মধ্যে এই পরিস্থিতি দেখে আমাদের শিক্ষকরাও বেশি একটা বাধা দেওয়ার সাহস পায়নি। তারা আমাদের হাতে দরজার চাবি তুলে দেন। তারপর রোকেয়া হল আর শামসুন্নাহার হল বের হয়। তারপর সুফিয়া কামাল হল যোগ দেয়। আর বঙ্গমাতা, বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী- এই দুইটা হলের মেয়েরা নীলক্ষেত পার হয়ে ঐ পাশে থাকে। আর নীলক্ষেত মোড়টাতে তখন ছাত্রলীগরা জমায়েত হয়েছিল। নীলক্ষেত মোড়, শাহবাগ মোড় আর এদিকে শহীদ মিনার থেকে জগন্নাথ হলের মাঝের গলি- ওই তিনটা মোড়ে ছাত্রলীগরা জমা হয়েছিল। তখন আমরা ওখান থেকে এসে রাজুতে অবস্থান করি। সেখানে আমরা পাঁচশ’ মেয়ে ছিলাম। এ সময় রাজুতে তখন মাত্র দশ বারোজন ছেলে ছিল। তারমধ্যে নাহিদ ভাই, আখতার ভাই, আসিফ ভাই, হান্নান মাসুদ ছিল। পরে মাহফুজ ভাইও আসে।

    আমরা তখন রাজু ভাস্কর্য থেকে একটা মিছিল নিয়ে ভিসি চত্বরে যাই। ছেলেরা যাতে সেখান থেকে বের হয়ে আসতে পারে সেজন্য আমরা স্লোগান দিতে থাকি। অবস্থান কর্মসূচি করতে থাকি। তখন ছেলেরাও হল থেকে বের হয়ে এসে আমাদের সাথে যোগ দেয়। পুরো মিছিলটা নিয়ে আমরা আবার রাজুতে ফেরত আসি। রাজুতে আমরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করি।

    আমাদের কাছে খবর আসে একসাথে পাঁচটা মিনি ট্রাক চারুকলা পার হয়ে এসে নেমেছে। আমরা খবর পাই মিনি ট্রাকে থাকা অজ্ঞাতদের ছাত্রলীগের রুমগুলোতে লুকিয়ে রাখা হয় পরের দিন দুপুরে আক্রমণের উদ্দেশ্যে। তবে উদ্দেশ্য ছিল ১৪ তারিখ রাতেই আক্রমণ করার কিন্তু সেদিন এতো উত্তেজনাপূর্ণ মুহূর্ত ছিল এবং সবাই এত জোটবদ্ধ ছিল যে কারো উপর হামলা করার কোন উপায় ছিল না। তবুও সেদিন দফায় দফায় হামলা করার চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু আমরা সবাই মিলে তা প্রতিহত করি।

    সবচাইতে ইন্টারেস্টিং বিষয় হচ্ছে ১৪ তারিখ রাতে আমার শামসুন্নাহার হলের একজনও হলে ছিল না। এটা কীভাবে বলতে পারছি, যেহেতু আমরা মেয়েদের হলে ঢুকানোর ব্যাপারটা সমন্বয় করছিলাম, আমি আর আশরেফা সবার আগে হলে ঢুকি, তখন আমরা কোন মেয়েকে হলে দেখতে পাইনি। সবাই আমাদের সাথে বের হয়েছিল। এই বিষয়গুলো খুব ইন্সপায়ারিং। সবচাইতে বেশি অদ্ভুত বিষয় ছিল, যারা জীবনে কোনো দিন রাস্তায় নামেনি, পড়ার টেবিল থেকে লাইব্রেরি আর ক্লাসরুমের বাইরে যাদের জীবনে অন্য কিছু ছিল না, তারাও যেভাবে নাগরিক দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে নেমে এসেছিল তা খুবই চমকপ্রদ ছিল। আর এটাই জুলাই আন্দোলনকে স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ের অন্যান্য আন্দোলন থেকে পার্থক্য করে।

    প্রশ্ন : ১৫ জুলাই মেয়েদের উপর যে হামলা করা হয়, এরপর তাদের মানসিক অবস্থা কেমন ছিল? তারা কি আরো উজ্জীবিত হয়েছিল নাকি ভেঙ্গে পড়েছিল?

    নুসরাত তাবাসসুম : এটা এক কথায় বলা মুশকিল যে, তারা উজ্জীবিত হয়েছিল, না ভয় পেয়েছিল। কারণ ক্ষেত্র বিশেষে দুটোই সত্য। যারা আহত হয়েছিল খুব ভয়ঙ্করভাবে কিংবা সামনে থেকে কাউকে আহত হতে দেখেছে, যাদের আগে কখনো রাস্তায় নামার অভিজ্ঞতা নেই, রাজনৈতিক আন্দোলন বা এক্টিভিজমের সাথে কোনো ধরনের সম্পর্ক ছিল না বা এই ধরনের কাজ করেনি, তারা ভয় পেয়েছে। তাদের পরিবার থেকে বাধা এসেছে- এটা সত্য।

    সত্যি কথা বলতে ১৫ তারিখের হামলাটা এত বেশি বীভৎস ছিল, আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে অসুবিধা হয়েছিল যে, ১৬ তারিখে মেয়েরা আবার নামবে কিনা। কারণ শুধু ১৫ তারিখের হামলা বা ১৪ তারিখে রাত জেগে আন্দোলন করাটাই না। ৬ তারিখ থেকেই আমাদের সকলের শরীর ও মনের ওপর দিয়ে একটা অসম্ভব অত্যাচার চলছিল। ৬ তারিখে আমরা পুরো ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণ পেরিয়ে বুয়েট, ইডেন হয়ে প্রায় ১০ কিলোমিটারের মতো রাস্তা মিছিল নিয়ে হেঁটেছি। পরের দিন ৭ তারিখ থেকে বাংলা ব্লকেড শুরু হয়। আমরা সবাই সকাল ৯টার মধ্যে গিয়ে উপস্থিত হতাম। সেখান থেকে আবার মিছিল ঘুরিয়ে শাহবাগে। সেখান থেকে ছেলেরা বিভিন্ন পয়েন্ট ব্লক করতে চলে যেত ।

    আর সবচাইতে ভয়ঙ্কর দুটো পয়েন্ট গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট ও শাহবাগে মেয়েদেরকে রাখা হয়েছিল এটা ভেবে যে, মেয়েদের উপর হামলা করা হবে না। এটাও খুব ভয়ঙ্কর একটা চাপ। মেয়েরা উঠে গেলে বা মেয়েরা সংখ্যায় কমে গেলে ছেলেদের ওপর হামলা হতে পারে এমনটা ভেবে তারা ওয়াশরুমে এমনকি কোন কিছু খেতেও যায়নি। শাহবাগে আমাদের ভরসায় রেখে ছেলেরা বাংলা মোটর ও মৎস্য ভবনের এলাকাগুলোতে এগিয়ে যেত। এমন মানসিক ও শারীরিক চাপ কাটিয়ে ১৬ তারিখে মেয়েদের নিয়ে আমরা আবার বের হতে পারবো কিনা তা নিয়ে আমাদের দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ছিল। এ ব্যাপারে আলোচনা করেছিলাম, যারা স্বেচ্ছায় আন্দোলনে যেতে চায় তাদেরকেই নিয়ে যাব।

    কিন্তু ১৫ তারিখ রাতে হলে ফিরে আমি দেখি মেয়েরা সবাই একটু ভীত হয়ে পড়েছে। পরে সেই রাতেই আমরা সিদ্ধান্ত নেই যে, যদি রাতেই তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করতে হয়, তাহলে আমাদের মশাল মিছিল করা উচিত। সেদিন ছাত্রলীগের হাতে মার খেয়ে হলে ফেরায় আমরা প্রায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়ি। ছাত্রলীগ হাততালি দিচ্ছে, আন্দোলন শেষ, কালকে থেকে বুঝে নেবে । এদিকে ছাত্রলীগের মেয়েরা সব বসে আছে। এর মধ্যে আমাদের মশালের কোন কিছু বাইরে থেকে আনা সম্ভব ছিল না। আমরা হলের মধ্যেই পুরনো বেঞ্চ, টেবিল, গাছের ডাল ভেঙে অনেকগুলো মশাল বানাই। মশাল বানানো যখন শুরু করি, তখন যার রুমে পুরনো কাগজ আছে, যার পুরনো কাপড় আছে সবাই যে যার মত এনে দিচ্ছিল। আমরা রাত জেগে প্রায় দুই তিনশ’ মশাল তৈরি করি। এটা আবার সবাইকে সাহস দেয়, উজ্জীবিত করে।

    তারপর ১৬ তারিখে সকাল থেকে রাজুতে আমাদের অবস্থান ছিল। ছেলেরা যারা ছিল তারা শহীদ মিনারে অবস্থান নেয়। সেদিন সবাই খুব প্রতিরোধের মুডে ছিল, প্রতিরোধও হচ্ছিল। আমাদেরকে বলা হয় যে, মেয়েরা যাবে কিনা? তখন আমরা গ্রুপে জিজ্ঞেস করি যে, আমরা যাচ্ছি, তোমরা যেতে চাও কিনা তোমাদের ইচ্ছা। যদি যেতে চাও যেতে পারো, না যেতে চাইলে রেস্ট নাও একটা দিন।

    সত্যি কথা বলতে আন্দোলন হয়তো এভাবেই চলত যেভাবে চলছিল। তবে এক্ষেত্রে পাঁচটি ঘটনা আন্দোলনকে বেগবান করে। প্রথমত ১৪ তারিখে রাজাকার বলে গালি দেওয়া, ১৫ তারিখে মেয়েদের উপর হামলা, ১৬ তারিখে আবু সাঈদের খুন, ১৭ তারিখে ক্যাম্পাসগুলো বন্ধ করা এবং ১৮ তারিখে প্রাইভেট ভার্সিটির শিক্ষার্থীদের উপর হামলা। এসব ঘটনা পুরো আন্দোলনের সবচাইতে ক্লাইমেক্স ছিল। এই পাঁচদিনের ঘটনা এটা চূড়ান্ত করে দিয়েছে যে, এ আন্দোলন আর কোটা বা বৈষম্যের বিষয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। এটা এখন চূড়ান্ত রূপ নিয়েছে।

    আমরা ১৮ তারিখে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্টদের উপর হামলা হওয়ার পর ১৯-২০ তারিখে গ্রুপে খুব গালিগালাজ হয়, আরো অনেক কিছু। মানে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছিলাম আমরা। এত কিছুর পর এটা আসলে আর কোটার আন্দোলনে সীমাবদ্ধ থাকতে পারে না। তারপর নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ দুজন গুম হলো। পরে তো বোঝাই গেল যে, এখন আসলে আর কারোর ডাক দেওয়ারও প্রয়োজন নেই। মাঝে মাঝে আন্দোলন এমন পর্যায়ে যায়, যখন শুধুমাত্র একটা অফিসিয়াল ঘোষণার দরকার হয়ে পড়ে। আন্দোলন ওদিকেই এগোচ্ছিল।

    প্রশ্ন : ডিবি তুলে নিয়ে যাওয়ার পর সেখানে আপনার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

    নুসরাত তাবাসসুম: পুলিশ হেফাজতে আসলে মানসিক অত্যাচারটা বেশি হয়। ডিবি হেফাজতে আমার জন্য সবচেয়ে ট্রমাটিক ছিল যেখানে আমাকে রাখা হয়েছিল, তার ত্রিসীমানায় কোথাও কোনো ঘড়ি ছিল না এবং দিনের আলো ঢুকতো না। অন্ধকারে রাখা হয়েছিল এমনটা বলছি না। লাইট জ্বলতো, কিন্তু দিনের আলো ঢুকতো না। মানে দিন চলে যাবে, আপনি কখনোই আন্দাজ করতে পারবেন না যে, আপনি এখানে ২৪ ঘন্টা আছেন, ৪৮ ঘন্টা আছেন নাকি আপনি এখানে পাঁচ ঘন্টা আছেন। ডিবিতে আমার ওই ছয় দিনের অভিজ্ঞতা আমাকে খুব স্পষ্টভাবে এটা বুঝতে শিখায় যে আয়নাঘরে যারা বছরের পর বছর বন্দী ছিল তাদের কী অবস্থা হয়েছিল। আমি মোটামুটি দুই দিনের মধ্যেই খুব সুইসাইডাল হয়ে গিয়েছিলাম।

    প্রশ্ন : ডিবি থেকে বের হয়েই আবার আন্দোলনে যোগ দিলেন, জুলাই আন্দোলনের শেষ দিনগুলো কেমন ছিল?

    নুসরাত তাবাসসুম : ডিবি থেকে বের হওয়ার পর থেকেই আমি মানসিকভাবে খুব চাঙ্গা থাকলেও ফিজিক্যালি ছিলাম না। ফিজিক্যালি আমার স্টেবল হতে মোটামুটি ৪৮ ঘন্টা সময় লেগেছে। আমার মনে আছে, ৩ তারিখে শহীদ মিনার থেকে ফিরে আমি যেখানে ছিলাম সেখানে রাতে বসে ক্যালকুলেশন করছিলাম যে, যদি এমন হয়, মানুষ আর রাস্তায় আসল না। তাহলে কি হবে? কিন্তু হ্যাঁ, আমার ক্যালকুলেশন বলেছে দেয়ার ইজ নো ওয়ে। মানুষ আসবেই। যারা এতদিন রাস্তায় থেকে চোখের সামনে এগুলো হতে দেখেছে তারা না এসে পারবে না। শেখ হাসিনা এই আন্দোলনকে এমন একটা পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিল যে, তার চূড়ান্ত পতন ছাড়া আর কোনো সমাধান ছিলই না।

    সবচাইতে ভয়ংকর বিষয় যেটা ছিল, আমার দীর্ঘদিনের খুব কাছের একজন সহযোদ্ধা, আমরা অনেকদিন রাজপথে পাশাপাশি কাজ করেছি। ৪ আগস্ট তার গুলি লাগে পায়ে, হাঁটুর উপরে। আমি তার নামটা প্রকাশ করতি চাচ্ছি না। ৪ আগস্ট একটু সুনশান ছিল, অনেক ধরনের গুজব ছড়াচ্ছিল যে, ছাত্রলীগ দখল করে নিয়েছে। সাংবাদিক সমিতির ভাইদের ধন্যবাদ যে তারা সে সময় এগুলো খুব তাৎক্ষণিক ডিবাঙ্ক করেছে। আমাদেরকে অনুপ্রেরণা দিয়েছে। কিন্তু সেদিন আসলে কিছু ঘটনা ঘটেছিল। সেদিন শহীদ মিনারের এলাকায় কিছু স্নাইপিং হয়েছিল।

    আর একটা বিষয় আরো বেশি করে উঠে আসা দরকার ছিল, আমরা যারা পুরোটা সময় গ্রাউন্ডে ছিলাম এবং সেখান থেকে ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টের খোঁজখবর নেয়ার চেষ্টা করছিলাম, আমরা দেখেছি ঢাকাতে পুরো জুলাই জুড়ে প্রচুর লাশ গুম হয়েছে। আর আমার মনে হয় কখনো কোনভাবেই লাশের হিসাবটা সত্যিকার অর্থে বের করা সম্ভব নয়। কারণ লাশের হিসাব আপনি তখনই বের করতে পারবেন যখন সেটির বিষয়ে কেউ ক্লেইম করে। এলোপাথাড়ি গুলিতে কতজন পথশিশু, কতজন মানসিক বিকারগ্রস্ত, কতজন গৃহহারা ব্যক্তি মারা গেছে তার কোনো হিসাব নেই। আমার মনে আছে ২৪ তারিখে আমি শনিরআখড়া থেকে লাস্ট রিপোর্ট পেয়েছি। তারপর থেকে শনিরআখড়া, যাত্রাবাড়ি, সায়দাবাদসহ পুরো দক্ষিণাঞ্চলের সাথে আমার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ২৪ তারিখে আমি লাস্ট যে রিপোর্টটা পাই, সেখানে গলির ভিতর ঢুকে ঘরে ঘরে, দোকানে গুলি করা হয়। বাচ্চাদের গুলি করা হয়েছে ঘরে ঢুকে। মানুষকে তুলে নিয়ে বাইরে বের করে গুলি করা হয়েছে। ৩ ও ৪ তারিখে প্রচুর স্নাইপিং হয়েছে এবং লাশ গুম হয়েছে।

    ৪ আগস্ট আমরা সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিয়ে নিই যে, যাই হোক না কেন আমরা আগামীকাল যাচ্ছি। আমাদের বিশ্বাস ছিল যে, কালকে চূড়ান্ত বিজয় আসবে। কিন্তু আমরা ফিরে আসব কিনা সেটা বলা যাচ্ছে না। ৪ আগস্টের রাতটা খুব আবেগময় ছিল। সবাই যে যার কাছে ক্ষমা চাচ্ছিল। সবাই ফেসবুকে পোস্ট করে যাচ্ছিল। আমাদের কার কাছে কতো টাকার ঋণ আছে। আমরা সবাই আমাদের নাম, ঠিকানা এবং গ্রামের বাড়ির ঠিকানা, পিতার নাম, মাতার নাম, এনআইডি নাম্বার, ফোন নাম্বার, ইন্সটিটিউট এগুলো লিখে ওয়ালপেপারে সেট করে তৈরি হচ্ছিলাম। ঐদিন আমার মনে আছে যে, যাদের সাথে আমাদের যোগাযোগ ছিল, ৫ আগস্ট সবাই আমরা সালাতুল ইস্তেগফার পড়ে বের হচ্ছিলাম। কারণ সেদিন খুব অন্যরকম মুহূর্ত ছিল।

    ৫ আগস্ট সকালবেলা হামজা আমাদের না বলেই বের হয়ে যায়। আমাদের প্ল্যান ছিল একসাথে বের হব কিন্তু সে একটু আগে বের হয়ে যায় আমি আর ওয়াহিদ মিরপুরের দুটো আলাদা পয়েন্ট থেকে বারবার চেষ্টা করি সনি পয়েন্ট ক্রস করার। আমরা কয়েকবার ওখানে হামলার শিকার হতে হতে হইনি। এরপরে ছদ্মবেশে মুখ ঢেকে আমরা বের হই এবং মিরপুর থেকে শাহবাগ পর্যন্ত হেঁটে এসেছিলাম আলাদা আলাদা ভাবে। শাহবাগে ঢোকার কিছুক্ষণ আগেই বাংলা মোটর ক্রস করে জানলাম যে, শেখ হাসিনা পদত্যাগ করতে পারে, জাতির উদ্দেশ্যে সেনাবাহিনী প্রধান ভাষণ দেবেন। ৫ আগস্ট রাস্তার উপরে সবাই সেজদা দিচ্ছিল। খুব আবেগতাড়িত মুহূর্ত ছিল সেটা।

    প্রশ্ন : আমাদের দেশে যে গণ-আন্দোলনগুলো হয়, মেয়েরা সাধারণত নেতৃত্বে আসে না বা আসতে চায় না। আপনি তো আন্দোলনের ফ্রন্টলাইনে ছিলেন, মেয়েদের প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল?

    নুসরাত তাবাসসুম : বিষয়টা হচ্ছে যে, হ্যাঁ, বাংলাদেশের আন্দোলনে নেতৃত্বের স্থানে নারীদের দেখা যায় না এবং এই আন্দোলনে নারীদের ভূমিকা থাকলেও নেতৃত্বের স্থানে দেখা যায়নি। ফ্রন্টলাইনার হওয়া এবং লিডার হওয়ার মধ্যে পার্থক্য আছে। সব সময় ১৫-২০ জনের পরেই মেয়েদের সিরিয়াল শুরু হয়। তবে বিভিন্ন কারণে মেয়েদের মধ্যে আমি একটু বেশি সামনে ছিলাম। সেখান থেকে আমি বলতে পারি যে ধীরে ধীরে মেয়েরা নিজেদেরকে নাগরিক ভাবার চেষ্টা করতে শুরু করেছে। তবে এটা অনেক দূরের জার্নি। অন্তত ভাবতে চেষ্টা করাটা শুরু হয়েছে। কেউ কেউ নিজেদেরকে নাগরিক হিসেবে প্রস্তুত করার চেষ্টা করছে। আর একতরফা যদি বলতে বলেন তাহলে আমি মেয়েদের মধ্যে নাগরিক দায়িত্ববোধটা অনেক বেশি দেখি। কারণ এই আন্দোলনে যদি আমরা খুব একপাক্ষিকভাবে কথা বলি, তাহলে তো মেয়েরাই ক্ষতিগ্রস্থ বেশি হয়েছে। কারণ নারী কোটা ছিল, তা বাতিল করা হয়েছে। তারপর মেয়েদেরকে সরাসরি ইঙ্গিত করে বলা হয়েছিল যে, তোমরা কেন বোকার মতো এই আন্দোলনে আছো? মেয়েরা সেখানে প্ল্যাকার্ড নিয়ে নেমেছে, ‘নারী যেখানে অগ্রসর, কোটা সেখানে হাস্যকর’- এরকম বিভিন্ন বক্তব্য নিয়ে এবং আমি আপনাকে এটা এনশিওর করতে পারি, মেয়েদের এই কথাগুলো তাদের মন থেকে ছিল। কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আসলে এখনো ঐরকম পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। মেয়েরা লিডারশীপে এখনো নেই।

    প্রশ্ন: জুলাই আন্দোলনে বাংলাদেশে এত যে রক্তক্ষয় আর মৃত্যু হলো, ভবিষ্যতে দেশের কাছে আপনার প্রত্যাশা কী?

    নুসরাত তাবাসসুম : বাংলাদেশে জুলাই আন্দোলনে যে রক্তক্ষয় হয়েছে, এটা স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথমবার এতো বেশি রক্তক্ষয় হয়েছে। যদিও আমি জানি এটাই শেষ না। হয়তো বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এর থেকে অনেক বেশি রক্ত দেওয়া লাগবে। কিন্তু যদি কি চাই বলেন, তাহলে আমি চাই যেন সেটা আর না হয়। এই ধরনের আন্দোলন আর কখনও করতে না হয় ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে। আর আন্দোলন করতে না হয় বলতে আমি বোঝাচ্ছি যে, অন্তত সেই মৌলিক সমাধানগুলো আসুক যেগুলোর জন্য আমাদেরকে বারবার রাস্তায় নামতে হয়েছে। আমি চাই এবার অন্তত যেন একধাপ আগানো যায়।

    প্রশ্ন : ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নারীদের জন্য আপনার কি কিছু বলার আছে?

    নুসরাত তাবাসসুম : নারীদেরকে যদি পরামর্শ দিতে বলেন, আমি বলবো যে মাঠে ময়দানে, মিডিয়ার সামনে বা সংবাদ সম্মেলনের একটা চেয়ারে বা ফটোকার্ডের ডানপাশে বা বামপাশে বা তিনজন পরে জায়গা করে নেয়ার জন্য লড়াই করাটা আসলে অপ্রয়োজনীয়। যদি জায়গা করার জন্য ফাইট দিতে হয়, তাহলে সেটা টেবিলে জায়গা পাওয়ার জন্য করা উচিৎ।

    জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।
    bangladesh political crisis enforced disappearance human rights violation missing persons Bangladesh Nusrat Tabassum statement অভ্যুত্থান গুম অভ্যুত্থানে আমরা কখনোই গুম গুম হওয়া মানুষ গুমের ইতিহাস গুমের সংখ্যা জানতে তাবাসসুম না নুসরাত পারবো: মুক্তমত/ফিচার/সাক্ষাৎকার লাশের সংখ্যা হওয়া:
    Related Posts
    নতুন করে বেপরোয়া শেখ

    নতুন করে বেপরোয়া শেখ হাসিনা : গোলাম মাওলা রনি

    July 30, 2025
    আসিফ মাহমুদ

    একমাত্র গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায়ই দায়িত্ব হস্তান্তর হবে: আসিফ মাহমুদ

    July 29, 2025
    rana

    দুই শহীদের মায়ের কান্না আর এক বিষণ্ণ শুক্রবার

    July 28, 2025
    সর্বশেষ খবর
    Brazil interest rate decision

    Brazil Markets on Edge: U.S. Tariffs Threaten Exports as Central Bank Meets

    drone thermal imaging

    How Texas Floods Sparked New Thermal Drone Technique (48 characters)

    Grand Sierra Resort shooting

    Grand Sierra Resort Shooting: Suspect Dakota Hawver’s Background, Charges, and Unanswered Questions

    OITNB actor homeless

    Orange is the New Black Actor Reveals Homelessness During Filming: Life Lesson

    Mexican Peso

    Mexican Peso Steadies at 18.75 Amid Dollar Swings: Trade Deal Turbulence Analyzed

    Stewart Friesen Accident

    Stewart Friesen Accident: Wife Jessica Provides Update After Devastating Dirt Track Crash

    I Adopted a Villainous Dad Chapter 86

    I Adopted a Villainous Dad Chapter 86: Release Time, Spoiler Leaks, and Reading Guide

    msft stock

    Microsoft Stock Soars as Azure Revenue Tops $75 Billion in Annual Sales

    meta stock

    Meta Stock Surges 10% After Stellar Earnings and Bold AI Investments

    alexandre de moraes

    U.S. Sanctions Brazilian Judge Alexandre de Moraes Over Bolsonaro Trial, Escalating Diplomatic Tensions

    • About Us
    • Contact Us
    • Career
    • Advertise
    • DMCA
    • Privacy Policy
    • Feed
    • Banglanews
    © 2025 ZoomBangla News - Powered by ZoomBangla

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.