রহমান মৃধা, সুইডেন থেকে : সঠিক তথ্য না দেয়ার আরেক নাম অপরাধ। আন্দাজে ভুল তথ্য ছড়ানো গুজব। আমরা মানুষ আমরা ভাইরাস নই। ভাইরাস নিজেও কিন্তু মাধ্যম ছাড়া ছড়ায় না। আমাদের ভুল তথ্য ভাইরাসের চেয়ে ভয়ঙ্কর হতে পারে সে বিষয়টি মনে রেখে তথ্য দিতে হবে।
প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ না খেয়ে, নানা ধরনের অসুখের কারণে, যুদ্ধের কারণে মারা যাচ্ছে। অন্যদিকে গত প্রায় একমাসে করোনাভাইরাসে চার হাজার মানুষ হবে মারা গেছে। অনিশ্চিত জীবনের এক ভয়াবহ মুহূর্ত সবার মনে, কে ধনী, কে গরিব বলে কথা নেই, সবাই এখন ভিতু (অরিড)। প্যানিক সৃষ্টি করে অন্যকে ভীতির মধ্যে ফেলে এখন নিজেরাও ভীতির মধ্যে হাবুডুবু খেতে শুরু করেছে বিশ্বের অনেক দেশেই।
অর্থনৈতিক সমস্যা থেকে শুরু করে মানসিক সমস্যা বিশাল আকারে প্রভাব ফেলেছে পরিবার, সমাজ, দেশ এবং বিশ্বে। হাজার হাজার কর্মী বছরের পর বছর নানা ধরনের ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাসের ওপর রিসার্স করে বিশ্বের নানা গবেষণাগারে। তারা ভালো করে জানে করোনাভাইরাস কি, কতক্ষণ জীবিত থাকে, কোন পরিবেশে, কিভাবে ছড়ায় এবং এর প্রতিরোধে কি করণীয় রয়েছে ইত্যাদি। তা সত্ত্বেও যারা কিছুই জানে না, তারা উঠেপড়ে লেগেছে এর ওপর নানা মতামত ছড়াতে।
মনে হচ্ছে করোনাভাইরাস যে গতিতে ছড়িয়ে পড়েছে তার চেয়ে শতগুণ বেশি গতিতে এর ওপর নানা ধরনের গুজব ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বব্যাপী। ২৫-৩০ বছর ধরে যাদেরকে মাসে মাসে বেতন দেয়া হলো তাদের থেকে তেমন খুব বেশি খবর আমরা জানতে না পারলেও আমার মত পণ্ডিতদের থেকে বহু খবর জানা গেছে করোনাভাইরাসের শুরুতে।
যারা ভাইরাস সম্বন্ধে জানে তাদের নীরবতার কারণে অনেকেই যার যা খুশি লেখালেখি করে মানুষের মধ্যে ভীতির সৃষ্টি করছে যা সত্যি অন্যায়। সব বিষয়ে পণ্ডিত না হয়ে শিক্ষার্থী হতে চেষ্টা করুন। গুগলে সার্স করুন করোনাভাইরাস সম্বন্ধে জানতে, যারা করোনাভাইরাসে মারা গেছে, জানুন তাদের সম্পর্কে। যেমন তাদের বয়স কত ছিল, অন্য রোগ ছিল কিনা ইত্যাদি। নিজে সচেতন হোন এবং অন্যকে সচেতন করুন, এর অর্থ এই নয় অন্যের মধ্যে প্যানিক ঢোকানো।
এখানেও রাজনীতি? চীনে হয়ত সব কথা খোলামেলা আলোচনা হয় না, কিন্তু সুইডেনে তা হয়ে থাকে। এখানে যে সব পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়েছে তার ওপর নির্ভর করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা এরা ঘণ্টায় ঘন্টায় রিপোর্ট করছে, একইসঙ্গে কি করণীয় বা কি করণীয় নয়, সে বিষয়ও আমাদেরকে জানানো হচ্ছে। আতঙ্ক নয়, করোনাভাইরাস নিয়ে ‘আশ্বস্ত’ হওয়া জরুরি। যেমন সতর্ক থাকতে হবে কফ-থুথু গায়ে লাগলে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকতে পারে। হাত ধোঁয়ার মতো সহজ কাজটি করা যা স্বাভাবিক জ্বর-সর্দির মতো সতর্ক অবলম্বন করার মতো একটি কাজ।
যদি কেউ বার্ধক্যজনিত দুর্বলতা বা অন্যান্য বড় রোগে আগে থেকেই আক্রান্ত না থাকে। সুস্থ-সবল মানুষের আক্রান্ত বা ‘সংকটাপন্ন’ হওয়ার হার একেবারে কম এবং এ ভাইরাসে মানুষ আক্রান্ত যেমন হচ্ছে তেমনই সেরেও উঠছে। এ ভাইরাসের উৎস, প্রকৃতি ও সংক্রমণের ধরণ সাত দিনের মধ্যে শনাক্ত হয়েছে, অন্যদিকে এইচআইভি এইডসের ক্ষেত্রে সময় লেগেছিল দুই বছর। আমরা এবং কর্তৃপক্ষ সঠিক পদক্ষেপ নিলে এ ভাইরাস সর্দি-কাশি-জ্বরের মত দেখতে পারি।
তাই আবারও বলি – please don’t create panic, neither for you nor for others, please don’t behave yourself a viruses and spread untruth information to others, please pray for goodness and be grateful and thankful. সর্বোপরি প্যানিক বা গুজব রটাতে আমরা বিশ্বের অন্যান্য দেশের থেকে কিছুটা বেশি পাকা তারপর একটি কথা আছে হুজুগে বাঙালি, সেক্ষেত্রে আমি মনে করি বড় ধরনের কোনো সমাবেশ দেশে আপাতত স্থগিত রাখা দরকার। হটাৎ যদি করোনাভাইরাসের রোগীর সংখ্যা বেড়ে যায় দেশ তার মোকাবেলা করতে পারবে না।
কারণ যে দেশে সাধারণ চিকিৎসার সুব্যবস্থা নেই সে দেশ পারবে কি করে বড় ধরণের এডহক চিকিৎসার নিশ্চয়তা দিতে? ইতালি বা ইউরোপের অনেক দেশে স্কুল, কলেজ, খেলাধুলা এমনকি কর্মক্ষেত্র সীমিত সময়ে বন্ধ করেছে যাতে করে নাগরিক প্যানিক সৃষ্টি না করে।
জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী পালন হবে সারাবছর ধরে সে ক্ষেত্রে ১৭ তারিখের পরিকল্পনাকে বিবেচনা করা দরকার দেশের জনগণের জীবন স্বার্থে। বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।