গ্যালাক্সিগুলো একে অপরের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। তাই বলা যায় মহাবিশ্ব স্থির অবস্থায় নেই। গতিশীল বা চলমান অবস্থায় আছে। গ্যালাক্সিগুলো পরস্পর থেকে দূরে সরে যাচ্ছে, এর মানে হলো মহাবিশ্ব প্রসারিত হচ্ছে। গ্যালাক্সিগুলো যেহেতু একটি নির্দিষ্ট হারে একে অপর থেকে দূরে সরে যাচ্ছে, তাই সেখান থেকে অনুমান করা হয়, অনেক অনেক আগের কোনো একসময় এসব গ্যালাক্সি নিশ্চয়ই একত্র অবস্থায় ছিল।
ওই সময়ে কল্পনাতীত বিশাল এক বিস্ফোরণ সংঘটিত হয়। ওই বিস্ফোরণে একত্রে পুঞ্জিভূত থাকা মহাবিশ্বের সব পদার্থ প্রচণ্ড বেগে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। পরে এসব পদার্থ আলাদা আলাদাভাবে ঘনীভূত হয়। গ্যালাক্সি হিসেবে বর্তমানে আমরা যাদের দেখতে পাই, তারা সবাই আসলে সেসব ঘনীভূত পদার্থের ফল। আলাদা আলাদা অঞ্চলে ঘনীভূত হয়ে জন্ম নিয়েছে আলাদা আলাদা গ্যালাক্সি। যে বিস্ফোরণের ফলে গ্যালাক্সিগুলো চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে এবং পরস্পর থেকে দূরে সরে যাচ্ছে, সেই বিস্ফোরণটিকে বলা হয় ‘বিগ ব্যাং’।
বিশ্বসৃষ্টিতত্ত্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি প্রশ্নের মধ্যে একটি হচ্ছে মহাবিশ্বের এই প্রসারণ কি চিরকাল চলতেই থাকবে, নাকি ভবিষ্যতে কোনো একসময় প্রসারণ বন্ধ হয়ে সংকোচন শুরু হবে? এর স্পষ্ট কোনো উত্তর এখনো জানা নেই। মহাবিশ্ব যদি চিরকাল প্রসারিত হতেই থাকে, তাহলে এ ধরনের মহাবিশ্বকে বলে ‘উন্মুক্ত মহাবিশ্ব’। যদি প্রসারণ বন্ধ হয়ে যায় এবং সংকোচন শুরু হয়, তাহলে এ ধরনের মহাবিশ্বকে বলে ‘বদ্ধ মহাবিশ্ব’।
আমাদের এই মহাবিশ্ব কি বদ্ধ নাকি উন্মুক্ত?—এই মহা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নটি জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের তাড়িয়ে তাড়িয়ে বেড়ায় সব সময়। মহাবিশ্বের অন্তিম পরিণতি, মহাবিশ্বের চূড়ান্ত নিয়তি নির্ভর করে এই প্রশ্নের উত্তরের ওপর। বেশ কিছু বিজ্ঞানভিত্তিক সাক্ষ্য-প্রমাণ বলে, মহাবিশ্ব উন্মুক্ত। তবে এটি পুরোপুরি নিশ্চিত নয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।