জুমবাংলা ডেস্ক: গ্রেপ্তার হওয়া ফরিদপুরের আলোচিত দুই ভাই ইমতিয়াজ হাসান রুবেল ও ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকতের সম্পদের হিসেব দিয়েছে পরিবার। গতকাল সোমবার পরিবারের পক্ষ থেকে রুবেলের মেয়ে যাওয়াতা আফনান রাদিয়ার পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সম্পদের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
যাওয়াতা আফনান রাদিয়া বলেন, আমার বাবা ও চাচার নামে ৫৭০৬ বিঘা জমি, ১৮৮টি ব্যাংক একাউন্ট ও ৫০টি গাড়ি যার মধ্যে বাস, ট্রাক ও ব্যক্তিগত গাড়ি রয়েছে বলে প্রচার হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে জমির পরিমাণ হবে ১২.৫০০০ একর কিন্তু দুদক যখন এসিল্যান্ড অফিসে জমির পরিমাণ চেয়েছিল তখন দুদকে পাঠানো চিঠিতে জমির পরিমান ভুলে ১২৫০০০ একর উল্লেখ করা হয়। পরবর্তীতে আমার বাবা জেলা প্রশাসকের কাছে এ বিষয়ে চিঠিও দিয়েছিল।
রাদিয়া আরও বলেন, আমার বাবা ২০০০ সাল থেকে সরকারি ঠিকাদারি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। ফরিদপুর থেকে ৩বার সেরা করদাতা নির্বাচিত। জমির পরিমাণ ১৫৯ বিঘা, এর মধ্যে চর অঞ্চলে ৩০ বিঘা। চরে জমি প্রতি বিঘা মূল্য ২০ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকা। কোম্পানির জন্য ৩টি ড্রাম ট্রাক, দুটি জিপ গাড়ি রয়েছে। কোম্পানির কাজে ব্যবহারের জন্য পে লোডার, রোলার রয়েছে এবং পুরাতন ২টা পানির গাড়ি আছে। ঢাকায় কোনো ফ্লাট বা জমি নেই। এমনকি ফরিদপুর মূল শহরে কোনো বাড়ি বা ফ্লাট নেই। আমরা দাদার পৈতৃক ভিটায় থাকি।
চাচা বরকতের বিষয়ে তিনি বলেন, আমার কাকা সাজ্জাদ হোসেন বরকতের নামে ২০০ বিঘা জমি আছে। চর অঞ্চলে ৪০০ বিঘা জমির উপর একটি অ্যাগ্রো ফার্ম আছে। চরের জমি বিক্রি করলে ১ থেকে ১.০৭ কোটি টাকা পাওয়া যেতে পারে। চাচার নিজ নামে ১০টি টাটা বাস এবং ১০ টি বাস লিজিং কোম্পানির নামে রয়েছে। এছাড়া ৫-৭টা ড্রাম ট্রাক আছে। ঢাকায় কোনো ফ্লাট নেই । পৈতৃক বাড়িতে তিনি থাকেন। ক্রয়কৃত জমিতে কিছু সেমি পাকা দোকান রয়েছে। ফরিদপুর থেকে দুবার সেরা করদাতা নির্বাচিত হয়েছে।
রাদিয়া বলেন, আমার চাচা ও বাবা দুজন সম্পূর্ণ আলাদা ব্যবসা করে। চাচা রাজনীতি করলেও আমার বাবা সেভাবে রাজনীতির সাথে জড়িত নয় এবং তার কোনো পদ পদবীও নাই। কেউ কী বলতে পেরেছে যে বিএনপির কোনো মিটিং মিছিলে বা পদে আমার বাবা ও চাচা ছিলো? এরপরও তাদের হাইব্রিড বললে কিছু বলার নেই। বাদশাহ মন্ডল নামে বাবার কোনো আপন চাচা নেই এবং আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকার নামে আমাদের কোনো আত্মীয় নেই।
মামলার কিছু বিষয়ে অসঙ্গতি রয়েছে জানিয়ে রুবেলের মেয়ে রাদিয়া বলেন, একই মামলায় সিআইডি করলো ২০০০ কোটি টাকার মামলা আর দুদুক করলো ৭২ কোটি টাকার মামলা। বিপুল পরিমাণ অর্থের মালিকানা নিয়ে তিনি বলেন, ২০০০ কোটি টাকার মামলাকে অতি রঞ্জিত করা হচ্ছে। মামলায় বলা হয়েছে আব্বু ও চাচা মিলে ৩৭৫ কোটি ৬০ লাখ টাকার বৈধ উৎস পাওয়া গেছে। এটাও সম্পূর্ণ ভুল। আব্বু ও চাচা মিলে প্রায় ১০০ কোটি টাকা পাওয়া যাবে। এর বেশি না।
উদ্ধার অভিযানের বিষয়ে তিনি জানান, আমাদের বাসা ও অফিস উদ্ধার অভিযানের সময় কোনো সাংবাদিক বা ম্যাজিস্ট্রেটকে না রেখে নিজেদের ইচ্ছামত জব্দ তালিকা তৈরি করে মদ ও ইয়াবা দিয়ে মামলা সাজিয়েছে। আমাদের বাসা ও অফিসে তল্লাশীর নামে পুলিশ যে তান্ডব করেছে তা খুবই দুঃখজনক।
ত্রিপল মার্ডার মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, ওই মামলার মামলার চার্জশিট দিয়ে ফাইনাল রিপোর্ট হয়ে গিয়েছিল। এই মামলা পূর্ণ তদন্তের নামে আমার বাবা ও কাকাকে ফাঁসানো হচ্ছে।
কিছু গণমাধ্যমের সমালোচনা করে তিনি বলেন, কিছু কিছু মিডিয়ায় দুই হাজার কোটি টাকার মামলাকে অতি রঞ্জিত করা হচ্ছে যা অনভিপ্রেত। মানি লন্ডারিং মামলা ডকুমেন্টরি মামলা, এই মামলায় বলা হয়েছে আব্বু ও কাকা মিলে ৩৭৫ কোটি ৬০ লাখ টাকার বৈধ উৎস পাওয়া গেছে। এটাও সম্পূর্ণ ভুল। আব্বু ও কাকা মিলে প্রায় ১০০ কোটি টাকা পাওয়া যাবে। এর বেশি কখনো পাওয়া যাবে না।
এসময় ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করে তিনি বলেন, আমি আপনাদের সামনে আমাদের বাস্তব চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আমি এই প্রজন্মের সন্তান। ন্যায় বিচার না পেয়ে চুপ করে বসে থাকতে পারি না। আমাদের নামে মিথ্যা প্রচার হতে হতে মানুষ মিথ্যা কে সত্যি মনে করছে।
মামলা মোকাবিলার বিষয়ে তিনি বলেন, আইনি লড়াই আমরা আইন অনুযায়ী-ই চালিয়ে যাবো। কারণ আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আপনারা যদি এই ৫৭০৬ বিঘা জমির অনুসন্ধান করে সত্যটা প্রকাশ করেন আপনাদের প্রতি চিরকৃতজ্ঞ থাকবো। কারণ প্রায় ৮০০ বিঘা জমি যদি ৫৭০৬ বিঘা হয়ে যায় তাহলে আমরা ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হবো।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।