আমিরাতে ১০ লাখ বাংলাদেশিকে করতে হবে ‘বেকারত্ব বীমা’
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে থাকা অন্তত ১০ লাখ বাংলাদেশিকে করতে হবে ‘বেকারত্ব বীমা’ তথা ‘বেকারত্ব ইনস্যুরেন্স’। আগামী মাসের মধ্যে এই বীমা না করলে জরিমানা গুনতে হবে ৪০০ দিরহাম। একইসঙ্গে পড়তে হতে পারে নানা প্রশাসনিক জটিলতায়।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে কর্মসংস্থানের অনিচ্ছাকৃত ক্ষতি তথা বেকারত্ব বীমা প্রকল্প চালু করে আমিরাত সরকার। দেশটির সরকারি-বেসরকারি খাতে কর্মরত বিভিন্ন দেশের অভিবাসী কর্মচারী, কর্মকর্তাদের জন্য এ বীমাটি বাধ্যতামূলক করা হয়।
দেশটির সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, আমিরাতে থাকা প্রবাসীদের মধ্যে যাদের বেতন ১ হাজার ৬০০ দিরহামের কম, তাদের জন্য মাসে পাঁচ দিরহাম এবং যাদের বেতন ১ হাজার ৬০০ দিরহামের বেশি, তাদের মাসে ১০ দিরহাম করে এ বীমা করতে হবে। বীমাটি মাসিক, ত্রৈমাসিক, ছয় মাস, এক বছর অথবা ভিসার মেয়াদ অনুযায়ী সম্পূর্ণ দুই বছরের জন্য একসঙ্গে করা যাবে। আগামী ৩০ জুনের মধ্যে এ বীমা নিবন্ধন করতে হবে, অন্যথায় বাধ্যতামূলক ৪০০ দিরহামের জরিমানা ও ভিসা নবায়নে জটিলতায় পড়তে হবে। অর্থাৎ এ বীমা ছাড়া ভিসা নবায়ন করা যাবে না।
এই বীমা দ্রুত করে নিতে প্রবাসীদের প্রতি বিশেষ অনুরোধ জানিয়েছেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ আবুজাফর। তিনি বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি বাংলাদেশ দূতাবাস আবুধাবির সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। তারা অতি দ্রুত বাংলাদেশি প্রবাসীদের এ বীমা করে নিতে অনুরোধ জানায়।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বাংলাদেশ দূতাবাস আবুধাবি ও দুবাই কনস্যুলেটের মাধ্যমে আমিরাতের সাতটি প্রদেশে অবস্থারত প্রায় ১০ লাখ বাংলাদেশিকে এ বিষয়টি জানানোর চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। আমরা আপনাদের মাধ্যমেও প্রবাসীদের এ ইনস্যুরেন্স সম্পর্কে অবহিত করে বলতে চাই, আগামী ৩০ জুনের আগে অবশ্যই এ ইনস্যুরেন্স করে নিতে হবে।’
এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘এটি কোম্পানির ইনস্যুরেন্স নয়, এটি ব্যক্তিগত ইনস্যুরেন্স। সুতরাং নিজ উদ্যোগে প্রত্যেককে এটি সম্পন্ন করতে হবে।’
ব্যবসায়ী মুহাম্মদ মইনুদ্দিন বলেন, এই বীমা প্রবাসীদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এই বীমা করার পর যাদের বীমার মেয়াদ এক বছর হবে, তারা অনিচ্ছাকৃত চাকরি হারালে তাদেরকে বীমা কোম্পানির পক্ষ থেকে তিন মাসের (বেসিক) বেতন দেওয়া হবে। এতে তারা তিন মাসের মধ্যে নতুন চাকরি খুঁজে নিতে পারবেন এবং তাদের পরিবারের খরচ বহন করতে পারবেন।
তিনি আরও বলেন, বেকারত্ব সময়ে এটি একটি বড় ধরনের সহযোগিতা।
আবুধাবির জনবহুল এলাকা আলমোল্লা তথা ইলেক্ট্রা এরিয়াতে অবস্থানরত সাধারণ প্রবাসীরা জানান, অল্প সংখ্যক প্রবাসীরা বীমা করলেও বেশিরভাগ প্রবাসীরা এখনো বীমা করেননি। এমনকি এখনো অনেক প্রবাসী এই বিষয়ে সঠিকভাবে জানেন না।
উল্লেখ্য, গত একমাস ধরে রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ আবু জাফর ও দুবাই কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল বিএম জামাল হোসেন বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এ বিষয়ে প্রবাসীদের অবগত করার চেষ্টা করেন। তবে প্রবাসীদের এ বিষয়ে সচেতন করতে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমসহ সবাইকে আরও বেশি ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে বলে মনে করেন বিশিষ্টজনেরা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।