মাহবুব কবীর মিলন: “আমার মেয়ের এক শিক্ষক আর্থিক সাহায্য চেয়েছেন। তিনি গুরুতর অসুস্থ। ব্রেন টিউমার। যতটুকু পারি, সাহায্য করা আমার জন্য ফরজ। তিনি আমার বাচ্চার শিক্ষক। যারা আমার বাচ্চাকে ভাল মানুষ বানাতে সাহায্য করেছেন, ভাল কিছু শিখিয়েন, ভাল বোধ জাগ্রত করে দিয়েছেন, ভাল চিন্তার উন্মেষ ঘটিয়েছেন, ভালকে ভাল, মন্দকে মন্দ বলতে শিখিয়েছেন, মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে শিখিয়েছেন…. আমি ঋণী তাঁদের কাছে।
আমি কৃতজ্ঞ তাঁদের প্রতিটি বিন্দুবিন্দু সাহায্য আর পদক্ষেপের জন্য, যা আমার বাচ্চার জন্য মঙ্গল আর কল্যাণ বয়ে এনেছিল। যা রহমত, নেয়ামত আর বরকত হিসেবে ঢেলে দিয়েছেন মহান আল্লাহপাক।
যাঁরা আমার বাচ্চাকে প্রথম দিন পরম যত্ন আর ভালবাসা দিয়ে বরণ করে নিয়েছিলেন স্কুলে এবং যাঁরা চোখের পানি দিয়ে বিদায় দিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে, আমি ঋণী আর কৃতজ্ঞ তাঁদের কাছে।
আমি ঋণী তাঁদের কাছে, যারা আমাকে পিটিয়ে মানুষ বানিয়েছিলেন। আজীবন সততা আর অবিক্রীত থাকার গৌরব অর্জনের পুরো ক্রেডিট আমার সব শিক্ষকদের। আমার বাবা-মা শুধু তুলে দিয়েছিলেন তাঁদের হাতে আমাকে।
মনে পড়ে মেট্রিক দেবার আগে-আগে স্কুলের একজন স্যার আমার গৃহ শিক্ষক ছিলেন। একদিন সন্ধ্যায় বাসায় পড়াবার সময় হঠাত তাঁর রক্ত বমি শুরু হল। তাঁকে কাঁধে করে তিনতলা থেকে নেমে বেবিট্যাক্সি করে মেডিকেল নিয়ে গিয়েছিলাম। সমস্ত জামা কাপড় ভিজে গিয়েছিল তাঁর রক্তে। ডাক্তার বলেছিলেন, দেরি হলে তাঁকে হয়ত বাঁচানো যেত না।
সেদিন বুঝিনি, এখন মর্মে উপলব্ধি করি, একজন শিক্ষককে সাহায্য করতে পারার আনন্দ আর তৃপ্তি কী জিনিস!!
সব শিক্ষক স্যাররা ভাল থাকুন। স্কুলের প্রথম ক্লাস থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত, সবাই আমার সন্মানিত স্যার। আমি ঋণী তাঁদের কাছে।
আপনারা আদর্শ হয়ে থাকুন আমাদের সন্তানদের কাছে। ভিলেন বা শয়তান রূপে নয়।”
(অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবীর মিলনের ফেসবুক স্ট্যাটাস)
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।