জুমবাংলা ডেস্ক : দুই দশকের বেশি সময় ধরে গান গাইছেন এলিটা করিম। ব্যান্ডের পাশাপাশি এককভাবেও নিজের সংগীতজীবন এগিয়ে নিয়েছেন তিনি। বছরশেষে নতুন অ্যালবাম নিয়ে এসেছেন এই সংগীতশিল্পী। ‘চিনি দেড় চামচ’ অ্যালবামটি সাজানো হয়েছে চারটি গান দিয়ে।
আজব রেকর্ডস থেকে ২৪ ডিসেম্বর প্রকাশিত হয়েছে গানের এই নতুন অ্যালবাম। শিল্পীর সঙ্গে কথা বলে কালের কণ্ঠের করা প্রতিবেদন তুলে ধরা হলো–
‘চিনি দেড় চামচ’ অ্যালবামটা সম্পর্কে জানতে চাই…
এটি একটি এক্সটেন্ডেড প্লে বা ইপি। এখানে চারটি গান রয়েছে।
এরই মধ্যে অডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফরমগুলোতে উন্মুক্ত করা হয়েছে। আর ইউটিউবে এসেছে দুটি গান। বাকি দুটিও আসবে শিগগিরই। গানগুলোর শিরোনাম ‘প্রেম হবে দিন শেষে’, ‘চিনি দেড় চামচ’, ‘ভালোবাসি’ ও ‘প্রজাপতি’।
সব গান লিখেছেন নন্দিত গীতিকবি শহীদ মাহমুদ জঙ্গী ও সুর করেছেন পিলু খান।
অ্যালবামের নামটা বেশ আলাদা। কিভাবে এলো এই নাম?
এ বিষয়ে শহীদ মাহমুদ জঙ্গী ভাই ভালো বলতে পারবেন। কারণ গানগুলো তাঁর লেখা, উদ্যোগটাও তাঁরই। তিনি গান লিখেছেন, পিলু ভাই সুর করেছেন, আমাকে বললেন গেয়ে দিতে, দিয়েছি।
অ্যালবাম বা ইপির পরিকল্পনা ছিল না। তিনটি গান হওয়ার পর আমি পরামর্শ দিলাম, আরো একটি গান হলে ইপি করা যাবে। অ্যালবাম আকারে প্রকাশ করা যাবে। এর পরই ‘চিনি দেড় চামচ’ গানটি লেখা হয়। জঙ্গী ভাই কী ভেবে গানটি লিখেছেন, আমি জানি না। তবে ইটস আ ব্রিলিয়ান্ট সং। সুরটাও খুব পছন্দ হয়েছে। এটি গান হলেও অনেকটা কথোপকথনের মতো। ধরুন বন্ধুরা বসে আড্ডা দিচ্ছে, চা খাচ্ছে, চিনি কত চামচ দেবে, এ রকম কথোপকথন।
আপনি চা পছন্দ করেন? চিনি কত চামচ?
আমি চা, কফি দুটোই খাই। তবে চা বেশি খাই। চিনি ছাড়া রং চা খাই, আদা-লেবু দিয়ে। মজার ব্যাপার হলো, আমাদের এই টিমের মধ্যে সবার বড় জঙ্গী ভাই। তিনি নিজের স্বাস্থ্য নিয়ে খুব সচেতন। অত্যন্ত শৃঙ্খল একজন মানুষ। অথচ তিনি চায়ে চিনি খান। তো গান করতে গিয়ে আমরা এই বিষয় নিয়ে নিজেদের মধ্যে অনেক মজা করেছি।
শহীদ মাহমুদ জঙ্গী ও পিলু খান সংগীতাঙ্গনের জ্যেষ্ঠ মানুষ। আর আপনি একবিংশ শতকের তরুণ। তাঁদের সঙ্গে গান করতে কেমন লেগেছে?
খুবই ভালো। অনেক দিন ধরে চাচ্ছিলাম গত শতকের নব্বইয়ের দশকের ধাঁচে কিছু গান করতে। ‘চিনি দেড় চামচ’ সে রকমই। শ্রোতারা এর গানগুলো শুনলে সেই চিরচেনা আবহ পাবে। আরেকটি বিষয় হলো, যাদের গান শুনে বড় হয়েছি, তাদের সঙ্গে গান করা, তাদের লেখা-সুরে গান গাওয়া তো বিশাল ব্যাপার। এখানে আমি শুধু তাঁদের কথা শুনেছি, আর গেয়েছি। একটি গান বাড়িয়ে ইপি করার পরামর্শ ছাড়া কোনো কথাই বলিনি। কারণ আমি নিজেই খুব কৌতূহলী ছিলাম। আমার জীবনের খুব ভালো অভিজ্ঞতা হলো কাজটি করে।
২০ ডিসেম্বর একটি আনপ্লাগড শো করলেন, জয় শাহরিয়ারের সঙ্গে। কেমন ছিল শো?
খুব ভালো ছিল। আমি ছোট ক্রাউড (অল্প শ্রোতা) পছন্দ করি। কারণ আমি অনেক কথা বলি। অনেকেই বলেন, কথা কম বলে গান বেশি করতে। তবে আমি গানের ফাঁকে শ্রোতাদের সঙ্গে কথা বলতে খুব ভালোবাসি। তো ছোট আয়োজনে, অল্পসংখ্যক শ্রোতা থাকলে গল্প করতে সুবিধা হয়। ২০ ডিসেম্বরের শোতে শ-খানেক মানুষ এসেছিল। তারা আমাদের গান শোনার আগ্রহ নিয়েই এসেছিল। আমি সম্মানিত বোধ করছি যে মানুষ টিকিট কেটে ছুটির দিনে আমাদের গান শোনার জন্য এসেছিল। এটা বিশাল ব্যাপার। এর মানে তারা সত্যিকার অর্থেই আমাদের গান ভালোবাসে। এতে চাপও বেড়ে গেল, ভালো গান করতে হবে।
প্লাগড নাকি আনপ্লাগড—কোন ধরনের শোতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন?
এটি একটি টেকনিক্যাল বিষয়। তবে আমি অবশ্যই আনপ্লাগড পছন্দ করি। দুটি অ্যাকুইস্টিক গিটার, একটি কাহনের সঙ্গে গান করা, এতে ঘরোয়া অনুভব পাওয়া যায়। এটি আমার খুব ভালো লাগে।
প্রায় দুই যুগ আগে সংগীত এবং চাকরি দুটিই একই সময়ে শুরু করেছিলেন। সে সময় আপনার প্রচুর গানও প্রকাশিত হতো। অথচ সাম্প্রতিক সময়ে গানের সংখ্যা একদম কমে গেল। কারণ কী?
এটি আসলে সময়ের পরিবর্তন। আমি বসে থাকব আর আমাকে কেউ গান দেবে, এখন এমনটা হয় না। নিজের উদ্যোগে গান করতে হবে। এই জানুয়ারিতে আমার সংগীত ক্যারিয়ারের ২৩ বছর হবে। সুতরাং এখন নিজ থেকেও কিছু করা প্রয়োজন। সেটি এরই মধ্যে শুরু করেছি। আমাকে সিনিয়র অনেক শিল্পী প্রায়ই জিজ্ঞেস করেন, ‘এলিটা, তুমি এত অলস কেন? নতুন গান করছ না কেন?’ হয়তো আমি অলস, সে কারণে গান কম। তবে আমি কোনো প্রতিযোগিতায় নেই, ধীরে-সুস্থে স্বাভাবিকভাবে গান করে যাচ্ছি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।