জুমবাংলা ডেস্ক: রাজশাহী জেলার বানেশ্বর বাজারে মৌসুমের শেষে বেড়েছে আমের দাম। ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানি কমার কারণে আমের দাম মণে বেড়েছে এক থেকে দেড় হাজার টাকা। যা ৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ দাম বলে মন্তব্য তাদের।
সোমবার (১৮ জুলাই) দুপুরে বানেশ্বরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাজারে এখন দেখা মিলছে নাক ফজলি, ফজলি, আশ্বিনা, আম্রপালি ও সামান্য হাঁড়িভাঙ্গা জাতের আম। আশি^না আম বেশি রয়েছে বাজারে। বেশ চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে আম্রপালি আম। বড় জাতের আমের মধ্যে বিক্রি হচ্ছে ফজলি আর আশ্বিনা।
বানেশ্বর বাজারের আম ব্যবসায়ী শাহিনুর রহমান জানান, বানেশ্বর আমের হাটে বর্তমানে ৪ ধরনের আম বেশি বেচা-কেনা হচ্ছে। ফজলি, আম্রপালি, বারি-৪, আশ্বিনা ও হাঁড়িভাঙ্গা। এসব আমের মধ্যে দাম বেড়েছে ফজলি ও আম্রপালি আমের।
বিগত বছরের তুলনায় একই সময়ে আমের দাম কেমন? প্রশ্নে তিনি বলেন, বিগত চার-পাঁচ বছরের তুলনায় এবার আমের দাম বেশি। আমদানিও আছে ভালো। করোনার কারণে অনেক কম দামে বিক্রি হয়েছে আম। কিন্তু এবার মণে এক থেকে দেড় হাজার টাকা বেশি। ফজলি আম আগে আড়াই হাজার টাকা বিক্রি করেছি এবার সাড়ে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত উঠেছে। আগে আশি^না আম হাজার টাকা মণ বিক্রি হলেই হতো-এবার ২ হাজার টাকা কালকের বাজার। সব আমের দাম চড়া। মানুষ কিনছে বলেই দাম বেশি।
আমের দাম জানতে চাইলে তিনি জানান, আম্রপালি সাড়ে ৫ হাজার টাকা থেকে সাড়ে হাজার, আশি^না ৮০০ থেকে থেকে বেড়ে এখন ১৬০০ থেকে ২ হাজার টাকা এবং কিছু পরিমাণ হাঁড়িভাঙ্গা আম আছে। বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৪ হাজার। বারি-৪ জাতের আম সাড়ে ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা মণ।
রাজশাহীর প্রাণকেন্দ্র সাহেববাজার মাস্টারপাড়া কাঁচাবাজারে বিক্রি করছেন শহিদুল ইসলাম। আমের দাম জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাজারে ফজলি আম কম আছে। এখন আশি^না আম বিক্রি করছি। খুচরায় প্রতিকেজি আম বিক্রি করছি ৪০ টাকা। কিনেছি ১৪’শ টাকা মণ। ৩৫ টাকা কিনে ৪০ টাকা বিক্রি।
আম ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম বলেন, আম আর বেশিদিন থাকবে না। মানুষের আম কেনার আগ্রহ আছে। কিনছে ২ কেজি ৩ কেজি করে। সবজি কিনতে এসে আম কিনছে অনেকে।
রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে রাজশাহী জেলায় ১৮ হাজার ৫১৫ হেক্টর জমিতে আম আবাদ হয়েছে, ফলনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ১৭ হাজার টন, যার বাজারমূল্য প্রায় ৮৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা। গত বছর ১৭ হাজার ৬৮৬ হেক্টর জমিতে আম আবাদ হয়েছিল। হেক্টরপ্রতি গড় ফলন হয়েছিল ১১ দশমিক ৯৬ টন। মোট উৎপাদন হয়েছিল ১ লাখ ৭৯ হাজার ৫৪০ দশমিক ৫৩ টন আম, যার বিক্রয়মূল্য ছিল প্রায় ৭১ কোটি ৮১ লাখ ৬২ হাজার ১২০ টাকা।
বাজারের অবস্থা জানতে চাইলে বানেশ্বর আম ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব সাইফুল ইসলাম বলেন, চাঁপাইয়ের কানসাটের পরেই বানেশ্বর বাজার। বাজারে এখন আশি^না আম বেশি আছে। ফজলি, আশ্বিনা, আম্রপালি, হাঁড়িভাঙ্গা জাতের আমও আছে। তবে সেগুলোর পরিমাণ কম। গত ৫ বছরের মধ্যে এই সময়ে এরকম দামে আম বিক্রি হয়নি। দাম ভালোই আছে; সাথে আমদানিও যে কম তা নয়। আমদানিও আছে।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোজদার হোসেন বলেন, বাজারে সর্বপ্রথম গুটি জাতের আম আগে আসে। পর্যায়ক্রমে গোপালভোগ, ল্যাংড়া, ফজলি, আশ্বিনা আম বাজারে আসে। এরপর বাজারে আসে খিরসাপাত, হিমসাগর ও লখনা। সর্বশেষ আশি^না আর ফজলি আম বাজারে আসে। এছাড়া হাঁড়িভাঙ্গা আমও বাজারে মিলছে।
সূত্র: এগ্রিকেয়ার২৪.কম
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।