বিশ্বাস করুন আর না-ই করুন, আমেরিকায় আয়োডিনযুক্ত লবণ সাধারণ দোকানে পাওয়া যায় না। সেখানে লবণে আয়োডিন যুক্ত করা হয় না। তাদের দরকারও হয় না। একজন প্রবাসী বাঙালি এতে অবাক হন। অনেক খুঁজে এক দোকান থেকে বেশি দামে আয়োডিনযুক্ত লবণ কেনেন। কিন্তু খেতে বিস্বাদ।
যেহেতু বাংলাদেশে আমাদের আয়োডিনযুক্ত লবণ খেতে হয়, তাই তিনি দুশ্চিন্তায় ছিলেন। কিন্তু পরে দ্য নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকায় (২১ জুলাই ২০১৭) এ বিষয়ে একটি লেখা পড়ে জানলেন, কেন ইউরোপ-আমেরিকায় লবণে আয়োডিন লাগে না। তাহলে বাংলাদেশে কেন লাগে? লাগে, কারণ আমাদের দেশে বন্যা হয়, আমেরিকা-ইউরোপে এই দুর্যোগ খুব কম। প্রশ্ন হলো বন্যার সঙ্গে আয়োডিনের সম্পর্ক কী?
আয়োডিনের অভাব হলে গলগণ্ড, থাইরয়েড গ্ল্যান্ডের সমস্যাসহ অন্য অনেক অসুখবিসুখ হয়। আয়োডিন আমাদের শরীরে তৈরি হয় না। দৈনন্দিন খাবারের সঙ্গেই আয়োডিন পাওয়া যায়। সামুদ্রিক মাছ, দুধ, প্রাণিজ মাংস, চাল-গম, শাকসবজি ও ফলমূলে প্রচুর আয়োডিন থাকে। মাছ সমুদ্রের পানি ও ভাসমান শৈবাল থেকে এবং ধান, গম, শাকসবজি, ফলমূল মাটি থেকে আয়োডিন পায়। এসব খাবার আমাদের আয়োডিনের প্রয়োজন মেটায়।
আমরা তো ভাত-মাছ, শাকসবজিই বেশি খাই। তাহলে আমাদের কেন লবণের সঙ্গে বাড়তি আয়োডিন লাগে? এর দুটি কারণ। প্রথমত, আগেই বলেছি, আমেরিকা-ইউরোপে বন্যা তেমন হয় না। কিন্তু বাংলাদেশে প্রতিবছর বন্যা হয়। আয়োডিন থাকে মাটির ওপরের স্তরে। বন্যায় সেই আয়োডিন ধুয়েমুছে চলে যায়।
ফলে ধান-চাল-গম ও শাকসবজিতে আয়োডিন প্রায় থাকেই না। দ্বিতীয়ত, আমরা সাধারণত সামুদ্রিক মাছ খাই না। তাই, আয়োডিন আমরা সেখান থেকেও পাই না। বাংলাদেশের মতো আরও অনেক বন্যাপ্রবণ দেশে আয়োডিনের ঘাটতি একটি বড় সমস্যা। এই ঘাটতির কারণে একসময় আমাদের দেশে গলগণ্ড রোগ ব্যাপক আকারে দেখা দেয়। তখন আয়োডিনযুক্ত লবণ খাওয়ার চল হয়। আইন করে লবণে আয়োডিন মেশানোর ব্যবস্থা করা হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।