পাগলা ঘোড়ার দৌঁড়ের মতো থামছেই না সোনার দাম। বুধবার (১৫ অক্টোবর) মার্কিন বাজারে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সোনার দাম প্রতি আউন্সে ৪,২০০ ডলার ছাড়িয়েছে, আরেকটি নতুন মাইলফলক স্পর্শ করেছে রুপার দামও।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, মার্কিন স্পট মার্কেটে সোনার দাম প্রতি আউন্সে ৪,২০৩.৭৯ ডলার পৌঁছেছে। একই দিনে ফিউচার মার্কেটে এই দাম ৪,২২০.২০ ডলার। এ ধরনের ঊর্ধ্বমুখী ধারা ইতিহাসে খুব কম দেখা যায়।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই উর্ধ্বগতির পেছনে রয়েছে ভূ-রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, মার্কিন সুদের হার কমানোর প্রত্যাশা, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শক্তিশালী ক্রয়, বৃহত্তর ডি-ডলারাইজেশন প্রবণতা, এবং শক্তিশালী এক্সচেঞ্জ-ট্রেডেড তহবিল প্রবাহ।
এই বছর পর্যন্ত সোনার দাম ইতিমধ্যেই প্রায় ৫৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বাজারে এই ধরনের ধারাবাহিক উর্ধ্বগতির ফলে বিনিয়োগকারীদের কাছে সোনা এবং রূপা আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে।
অ্যাক্টিভ ট্রেডস বিশ্লেষক রিকার্ডো ইভাঞ্জেলিস্টার মতে, মার্কিন সরকারের শাটডাউন দীর্ঘায়িত হওয়া, ফেড কর্মকর্তাদের আরও বেশি নোংরা মন্তব্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য উত্তেজনা বৃদ্ধির ফলে বছরের শেষ নাগাদ আরও বাড়বে সোনার দাম।
এদিকে, বিশ্ববাজারে দাম বাড়ায় স্বাভাবিকভাবেই এর প্রভাব পড়তে যাচ্ছে দেশের বাজারেও। ধারণা করা হচ্ছে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আরও এক দফায় দেশের বাজারে বাড়তে পারে সোনার দাম। এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে শিগগিরই বৈঠকে বসতে পারে বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি।
সবশেষ দেশের বাজারে সবচেয়ে ভালো মানের ২২ ক্যারেট সোনার দাম ভরিপ্রতি ২ হাজার ৬১৩ টাকা বাড়িয়ে ২ লাখ ১৬ হাজার ৩৩২ টাকা নির্ধারণ করেছে বাজুস। এছাড়া, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ২ লাখ ৬ হাজার ৪৯৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ১ লাখ ৭৭ হাজার ১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম ১ লাখ ৪৭ হাজার ৩৫১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) সারাদিন দেশের বাজারে এ দামেই বিক্রি হয়েছে সোনা। চলতি বছর এখন পর্যন্ত দেশের বাজারে মোট ৬৫ বার সোনার দাম সমন্বয় করেছে বাজুস; যেখানে দাম বাড়ানো হয়েছে ৪৭ বার, আর কমানো হয়েছে মাত্র ১৮ বার। আর ২০২৪ সালে দেশের বাজারে মোট ৬২ বার সোনার দাম সমন্বয় করা হয়েছিল; যেখানে ৩৫ বার দাম বাড়ানো হয়েছিল, আর কমানো হয়েছিল ২৭ বার।
অন্যদিকে, মঙ্গলবার সোনার দামের নতুন উত্থান এবং স্পট মার্কেটে সরবরাহ কম থাকার কারণে ২ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে ৫২ দশমিক ৬৪ ডলারে দাঁড়িয়েছে রুপার দাম। তাই আঁচ করা যাচ্ছে, হয়তো রুপার দামেও নতুন এক লাফ দেখা যেতে পারে দেশের বাজারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।