সম্প্রতি ডব্লিউএইচও এফসিটিসি-এর আর্টিকেল ৫.৩ নিয়ে উদ্দেশ্যমূলক বিভ্রান্তি তৈরি করা হচ্ছে। একটি মহলের দাবি – আর্টিকেল ৫.৩ অনুযায়ী সরকার ও তামাক শিল্প সংশ্লিষ্টদের মধ্যকার কোন প্রকার আলোচনা হতে পারে না। এটি সম্পূর্ণভাবে ভুল ধারণা এবং অপব্যাখ্যা, কারণ আর্টিকেল ৫.৩ বাস্তবায়ন সংক্রান্ত গাইডলাইনে মূলত তামাক কোম্পানির সাথে আলোচনার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানায় কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা প্রদান করে না।
কার্যকর তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতি তৈরি করতে হলে শিল্প সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের অন্তর্ভুক্তিমূলক পরামর্শ অপরিহার্য। নীতি নির্ধারকদের উচিৎ শিল্প প্রতিনিধি, তামাক চাষী, বাণিজ্য/বাণিজ্যিক সংগঠন, শ্রমিক গোষ্ঠী, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, গণমাধ্যম কর্মী, সুশীল সমাজসহ অন্যান্য অংশীজনদের সাথে সুগঠিত আলোচনা করা। সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের মতামত উপেক্ষা করে নীতিমালা নির্ধারণ করা হলে বাস্তবতার সাথে সেই নীতিমালার সাদৃশ্য থাকবে না এবং সেসব নীতিমালা কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করাও কঠিন হবে।
উল্লেখ্য, তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতির সংশোধনী প্রস্তাবনায় এমন কিছু ধারা রয়েছে যা বিপুল পরিমাণে জাতীয় রাজস্ব এবং এই খাত সংশ্লিষ্টদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তাই খাত সংশ্লিষ্টদের সম্পূর্ণরূপে আলোচনার বাইরে রেখে কোন গণতান্ত্রিক দেশের নীতিমালা নির্ধারিত হতে পারে না।
বিবেচ্য বিষয় হলো, এক পক্ষের উদ্দেশ্যমূলক মতামতের ভিত্তিতে নীতিমালা নির্ধারণ করলে নীতি নির্ধারকদের ওপর থেকে সাধারণ মানুষের আস্থা কমে যেতে পারে। আস্থা তৈরি হয় খোলামেলা ও জবাবদিহিতামূলক আলোচনার ভিত্তিতে, নীরব থাকা বা এড়িয়ে যাওয়ার মাধ্যমে নয়।
বেসরকারি সংস্থাগুলো (এনজিও) তামাক সেবনের কারণে সৃষ্ট ক্ষতি সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু তাদের অনেকেই আর্টিকেল ৫.৩ হয় ভুলভাবে বুঝেছে, নয়তো উদ্দেশ্যপ্রণীত কারণে ভুলভাবে উপস্থাপন করছে। প্রচারণা হতে হবে সততার ভিত্তিতে, শুধুমাত্র ব্যক্তিগত মতাদর্শের ভিত্তিতে নয়। তাই সরকারের উচিৎ শুধু নির্দিষ্ট কোন মহল নয়, বরং প্রাসঙ্গিক সব পক্ষের সাথে স্বচ্ছভাবে আলোচনা করা।
জনস্বাস্থ্য ও গণতান্ত্রিক নীতিমালা রক্ষার্থে আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যেন সব পক্ষ আলোচনার সুযোগ পায়। কোন পক্ষকে অন্ধকারে রেখে এমন নীতি নির্ধারণ করার প্রচেষ্টা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের প্রতি ভুল বার্তা প্রদান করবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।