জুমবাংলা ডেস্ক : বাংলাদেশের ইসলামি শিক্ষা ও আরবি সাহিত্য অঙ্গনে এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের পতন ঘটেছে। দেশের শীর্ষ আলেম, মাদরাসা শিক্ষা সংস্কারের পুরোধা ব্যক্তিত্ব, জামেয়া দারুল মা’আরিফ আল-ইসলামিয়া, চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক আল্লামা মুহাম্মদ সুলতান যওক নদভী ইন্তেকাল করেছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রজিউন। শুক্রবার (২ মে) দিবাগত রাত ১২টায় চট্টগ্রামের এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। আল্লামা সুলতান যওক নদভীর ইন্তেকালে দেশের ইসলামি শিক্ষা ও সাহিত্য অঙ্গনে এক অপূরণীয় শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে।
Table of Contents
আল্লামা সুলতান যওক নদভীর জীবন ও কর্ম
আল্লামা সুলতান যওক নদভী ১৯৩৭ সালে কক্সবাজার জেলার মহেশখালীর জাগীরাঘোনা মহল্লায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৯ সালে তিনি চট্টগ্রামের আল-জামেয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়া থেকে দাওরায়ে হাদিস সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে, ১৪০৪ হিজরি সালে ভারতের দারুল উলুম নাদওয়াতুল উলামা থেকে তিনি সম্মানসূচক আলমিয়াত ডিগ্রি লাভ করেন।
শিক্ষা জীবন শেষে তিনি শিক্ষকতা পেশায় যুক্ত হন। ১৯৬৫ সালে তিনি আগ্রাবাদে কাশেমুল উলুম নামে একটি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে, ১৯৮৫ সালে তিনি চট্টগ্রামের বহদ্দারহাটের হাজীরপুলে জামেয়া দারুল মা’আরিফ আল-ইসলামিয়া প্রতিষ্ঠা করেন। এই প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে দেশের অন্যতম প্রধান কওমি মাদ্রাসা হিসেবে স্বীকৃত।
আল্লামা সুলতান যওক নদভী আরবি ভাষা ও সাহিত্যে বিশেষ পারদর্শিতা অর্জন করেন। তিনি সৌদি আরবভিত্তিক আন্তর্জাতিক সাহিত্য সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল লিগ অব ইসলামিক লিটারেচারের বাংলাদেশ ব্যুরো চিফ হিসেবে আমৃত্যু দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া, তিনি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা এবং কওমি মাদরাসাভিত্তিক শিক্ষা বোর্ড আঞ্জুমানে ইত্তেহাদুল মাদারিস বাংলাদেশের সভাপতি ছিলেন।
ইসলামী শিক্ষা ও সাহিত্য অঙ্গনে অবদান
আল্লামা সুলতান যওক নদভী ইসলামী শিক্ষা ও সাহিত্য অঙ্গনে অসামান্য অবদান রেখেছেন। তিনি আরবি ভাষার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তার সম্পাদনায় ‘আস-সুবহুল জাদীদ’ নামে একটি ত্রৈমাসিক আরবি পত্রিকা নিয়মিত প্রকাশিত হতো। এছাড়া, তিনি আরবি ভাষা শিক্ষার জন্য ‘নাদিয়াতুল আদাব’ নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করেন।উইকিপিডিয়া, একটি মুক্ত বিশ্বকোষ
১৯৯৪ সালে তার উদ্যোগে জামেয়া দারুল মা’আরিফ আল-ইসলামিয়ায় একটি আন্তর্জাতিক সাহিত্য সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে মুসলিম বিশ্বের সেরা কবিগণ উপস্থিত ছিলেন। এই সেমিনারে ইসলামী সাহিত্য ও সংস্কৃতি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়।
শেষ বিদায়
আল্লামা সুলতান যওক নদভী দীর্ঘদিন বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন। গত ১৮ এপ্রিল থেকে তিনি চট্টগ্রামের এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এরপর থেকে বেশ কয়েকবার তাকে আইসিইউতে রাখা হয়। সবশেষে, শুক্রবার (২ মে) দিবাগত রাত ১২টায় তিনি ইন্তেকাল করেন।
মরহুমের জানাজার নামাজ শনিবার (৩ মে) বিকাল ৪টায় জামেয়া দারুল মা’আরিফ আল-ইসলামিয়া প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আলেম-উলামা, ছাত্র-শিক্ষক ও সাধারণ মানুষ তার জানাজায় অংশগ্রহণ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
আল্লামা সুলতান যওক নদভীর ইন্তেকালে দেশের ইসলামি শিক্ষা ও সাহিত্য অঙ্গনে যে শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে, তা সহজে পূরণ হওয়ার নয়। তার অবদান ও স্মৃতি চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
‘আ. লীগ ফ্যাসিস্ট হতে পারে, তবে সবাই খারাপ নয়’ — ফরহাদ মজহার
প্রশ্নোত্তর (FAQs)
প্রশ্ন: আল্লামা সুলতান যওক নদভী কে ছিলেন?
উত্তর: আল্লামা সুলতান যওক নদভী ছিলেন বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় আলেম, আরবি ভাষাবিদ এবং জামেয়া দারুল মা’আরিফ আল-ইসলামিয়ার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক
প্রশ্ন: তিনি কখন ইন্তেকাল করেন?
উত্তর: তিনি শুক্রবার (২ মে) দিবাগত রাত ১২টায় চট্টগ্রামের এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন।
প্রশ্ন: তার জানাজার নামাজ কোথায় ও কখন অনুষ্ঠিত হবে?
উত্তর: তার জানাজার নামাজ শনিবার (৩ মে) বিকাল ৪টায় জামেয়া দারুল মা’আরিফ আল-ইসলামিয়া প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে।
প্রশ্ন: তিনি কোন কোন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন?
উত্তর: তিনি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা, আঞ্জুমানে ইত্তেহাদুল মাদারিস বাংলাদেশের সভাপতি এবং ইন্টারন্যাশনাল লিগ অব ইসলামিক লিটারেচারের বাংলাদেশ ব্যুরো চিফ ছিলেন।উইকিপিডিয়া
প্রশ্ন: তার শিক্ষাগত যোগ্যতা কী ছিল?
উত্তর: তিনি ১৯৫৯ সালে আল-জামেয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়া থেকে দাওরায়ে হাদিস সম্পন্ন করেন এবং ১৪০৪ হিজরি সালে ভারতের দারুল উলুম নাদওয়াতুল উলামা থেকে সম্মানসূচক আলমিয়াত ডিগ্রি লাভ করেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।