জুমবাংলা ডেস্ক : ‘আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়েছে। মাত্র এক মিনিটের ব্যবধানে লঞ্চটি ধরতে পারিনি। ভাবছিলাম আজ চাকরিটাই মনে হয় চলে যাবে। কিন্তু আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন। মিরকাদিম থেকে এসে আমরা যারা অফিস করতাম তাদের মধ্যে ডুবে যাওয়া লঞ্চটিতে ৫ জন ছিলেন।’ জাতীয় দৈনিক সমকালের প্রতিবেদক কাজী সাব্বির আহমেদ দীপু-এর একটি প্রতিবেদনে হৃদয়বিদারক এ ঘটনার চিত্র ফুটে উঠেছে।
সোমবার সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালের সামনে এভাবে হাউমাউ করে কেঁদে কথাগুলো বলছিলেন পুরান ঢাকার যমুনা ব্যাংকের নর্থ সাউথ শাখায় কর্মরত আরিফ তালুকদার।
আরিফ বলেন, যমুনা ব্যাংকের ইসলামপুর শাখায় সাব স্টাফ হিসেবে কর্মরত ছিলেন মো. সুমন। তিনিসহ মোট ৫ জন লঞ্চে উঠেছিলেন। সুমনের মরদেহ ডুবুরিরা উদ্ধার করেছে। দুজন সাঁতরে কিনারে উঠেছে। বাকি দুজন এখনও নিখোঁজ ।
সুমনের বড়ভাই সোহাগ বলেন, দুই ছেলেকে নিয়ে সুমনের সংসার। লঞ্চডুবিতে তাদের সুখের সংসার ভেঙে তছনছ হয়ে গেল।
সুমনের সহকর্মী ও যমুনা ব্যাংকের নর্থ সাউথ শাখায় কর্মরত আরিফ তালুকদার জানান, তিনিসহ ১০ থেকে ১২ জন মুন্সীগঞ্জের মিরকাদিম কাঠপট্টি থেকে প্রতিদিন মর্নিং বার্ড লঞ্চে এসেই ঢাকায় অফিস করতেন। আবার অফিস শেষে রাতে বাড়িতে ফিরতেন। সোমবারও বের হয়েছিলেন ঠিকই। কিন্তু মাত্র ১ মিনিটের জন্য তিনি লঞ্চটি ধরতে পারেননি। পরের লঞ্চে এসে জানতে পারেন মর্নিং বার্ড ডুবে গেছে।
আরিফ বলেন, আমি বংশাল নর্থ সাউথ রোডে যমুনা ব্যাংকে চাকরি করি। প্রতিদিন এই লঞ্চেই যাতায়াত করি। লঞ্চ ধরতে না পেরে মন খারাপ হয়েছিল।
সদরঘাটে আহাজারি করতে করতে আসেন সাইফুল হোসেন ও মিরাজ। লঞ্চডুবিতে ছোটভাই মইনুল হোসেনের খোঁজ করতে এসেছেন। এসেই নৌকায় থাকা ভাইয়ের মরদেহ শনাক্ত করেন তারা। ইসলামপুরে কাপড়ের ব্যবসা করতেন মইনুল। প্রতিদিন সকালে এই লঞ্চে আসতেন তিনি। আর রাতে ফিরে যেতেন।
সাইফুল হোসেন বলেন, আজ আর আমার ভাই বাড়িতে ফিরবে না। ফিরলেও তার নিথর দেহ ফিরবে।
সোমবার মর্নিং বার্ড লঞ্চটি সদরঘাটের অদূরে ময়ুর-২ লঞ্চের ধাক্কায় বুড়িগঙ্গা নদীতে ডুবে যায়। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত ৩৩ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।