গাজীপুর প্রতিনিধি: ঢাকা-চট্টগ্রাম রেল পথের গাজীপুরের কালীগঞ্জে আড়িখোলা রেলওয়ে স্টেশনের অদূরে পূর্ব ও পশ্চিম পার্শ্বে প্রতিদিন রুটিন করে চলে ট্রেন থেকে তেল চুরি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, আড়িখোলা স্টেশন মাস্টার মো. আলমগীর হোসেনকে মৌখিকভাবে একাধিকবার বললেও বিষয়টি নিয়ে তিনি কোন পদক্ষেপ নেননি। উল্টো আরো এটি তার দায়িত্ব না বলে প্রসঙ্গটি এড়িয়ে গেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন এই রেলওয়ে সড়ক দিয়ে ঢাকা থেকে সিলেট, চট্টগ্রাম ও ভৈরব হয়ে ময়মনসিংহে প্রায় ৫০টি ট্রেন আসা-যাওয়া করে। দীর্ঘদিন যাবৎ একটি তেল চোর চক্র প্রতিদিন রুটিন করে আড়িখোলা রেলওয়ে স্টেশনের অদূরে পূর্ব ও পশ্চিম পার্শ্বে ট্রেন থামিয়ে তেল চুরি করে থাকে। ওই তেল চোর চক্রটি ২০-৩০ মিনিট সময়ের জন্য ট্রেন থামায়। এরপর গ্যালন, ড্রাম ভরে ভ্যানে করে তেল চুরি করে নিয়ে যায়। আর ওই চুরির তেলে স্থানীয় কয়েকটি তেলের দোকান চলে রমরমা ব্যবসা। ট্রেন চালক, গার্ড ও স্টেশন মাস্টারদের যোগসাজশে চলে তেল চুরি। তবে স্থানীয়রা এজন্য স্টেশন মাস্টার মো. আলমগীর হোসেনকেই দায়ী করছেন।
তুমলিয়া (সাদ্দাম বাজার) রেল ক্রসিং এলাকায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানান, ৬/৭ জনের একটি চক্র এই তেল চুরি নিয়ন্ত্রণ করছে। এদের মধ্যে পৌর এলাকার তুমলিয়া গ্রামের গেলমান পাঠানের ছেলে আরমান পাঠান, মজা মোল্লার ছেলে মো. রাশেদ মোল্লা, বাঙ্গাল হাওলা গ্রামের মৃত ইদ্রিস মিয়ার ছেলে মিলন মিয়া, মৃত রহমত উল্লাহর ছেলে হরজুল মিয়া ও তার ছেলে বাবু মিয়া, দুর্বাটি গ্রামের মৃত নুরু আকন্দের ছেলে আরিফ আকন্দ।
তেল চুরির পর চক্রটি তা দুর্বাটি মাদ্রাসা মার্কেটের আরিফ আকন্দের তেলের দোকানে মজুদ করে। দীর্ঘদিন ধরে এই কাজ চলতে থাকলেও তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। ওই চক্রের বরাত দিয়ে তিনি আরো জানান, এ কাজটি টিকিয়ে রাখতে স্থানীয় থানা পুলিশ, নেতৃবৃন্দ, জিআরপি পুলিশ ও স্বঘোশিত কয়েকজন সাংবাদিককেও নাকি মাসোহারা দিতে হয়।
এ ব্যাপারে আড়িখোলা রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. আলমগীর হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, তেল চুরির বিষয়টি আমার জানা নেই। তাছাড়া জানা থাকলেও আমার কিছু করার নেই। কারণ আমার স্টেশন প্লাটফর্মের বাইরে অনেক কিছুই ঘটতে পারে। সেটার দায় আমার না। জিআরপি পুলিশ আছে তারা বিষয়টি দেখবে।
কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ একেএম মিজানুল হক জানান, আমি মাত্র সপ্তাহ খানেক হয় এ থানায় যোগদান করেছি। তবে আপনাদের কথা দিচ্ছি এই ধরণের কোনো কাজ আমার থানা এলাকায় হয়ে থাকলে তা বন্ধ করব। পাশাপাশি ওই চক্রটিকে আটক করে বিচারের আওতায়ও আনা হবে।
ভৈরব রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ ফেরদৌস আহমেদ বিশ্বাস জানান, আমি এখানে নতুন যোগদান করেছি। নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির আইসির সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নিচ্ছি। জিআরপি পুলিশকে ম্যানেজ করে তেল চুরির বিষয়ে তিনি বলেন আসলে একেক জন একেক ধরনের কথা বলে। এসব কথার কোন ভিত্তি নাই। তবে বিষয়টি আমার জানা ছিল না। যেহেতু জেনেছি এখন ব্যবস্থা নিব।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।